ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সুপ্রীমকোর্টে আদালত বর্জন নিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সুপ্রীমকোর্টে আদালত বর্জন নিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ ও হরতালের মধ্য সুপ্রীমকোর্টে আদালত বর্জন নিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী পালন করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা। হরতাল-অবরোধের মধ্যে আইনজীবীদের নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে বিচার কাজ না চালাতে সোমবার আইনজীবী সমিতির ব্যানারে বিভিন্ন আদালতে যান সরকারবিরোধী আইনজীবীরা। এর আগে রবিবার সমিতির এক সাধারণ সভায় এভাবে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়। সমিতি বর্তমানে বিএনপি সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি হিসেবে রয়েছেন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন। সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন। এদিকে সমিতির এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে বিক্ষোভ করে সরকার সমর্থক আইনজীবীরা। এই বিক্ষোভে অংশ নেন আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক আব্দুল মতিন খসরু, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মোঃ মোমতাজ উদ্দিন মেহেদি। এ বিষয়ে সমিতির সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম মেহেদি সাংবাদিকদের বলেন, রবিবার ১টায় সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতিতে একটা সাধারণ সভা হয়েছে। সেখানে আইনজীবীরা সর্বসম্মতভাবে বলেছেন, আমরা কোর্ট বর্জন করব। এটা রেজ্যুলেশন হয়েছে। তিনি বলেন, সে জন্য আজ আমরা অনেক কোর্টে গিয়েছি। জজ সাহেবদের আমাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছি। তারা আমাদের রেজ্যুলেশন গ্রহণ করেছেন এবং বলেছেন এ ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। অন্যদিকে আইনজীবী সমিতির এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে বিক্ষোভে সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু বলেন, তারা যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, তা ক্ষমার অযোগ্য। তিনি বলেন, তারা বিচারকদের রুমে রুমে গিয়ে তাদের নেমে যাওয়ার জন্য বলেছে। বিচারপ্রার্থী মানুষকে বিচার থেকে বঞ্চিত করার এখতিয়ার কারও নেই। এর মাধ্যমে তারা আদালত অবমাননা করেছে। সুপ্রীমকোর্টের চার হাজার আইনজীবীর অধিকাংশই আদালতের কার্যক্রম চালানোর পক্ষে বলে দাবি করেন মতিন খসরু। তিনি আরও বলেন, আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, বেগম জিয়ার দলীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের যে প্রয়াস সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি চালাচ্ছে, তা অবৈধ, অসাংবিধানিক, বেআইনী ও দ-নীয় অপরাধ। কারণ, ১৬ কোটি মানুষের অধিকার আছে, সর্বোচ্চ আদালত থেকে ন্যায় বিচার পাওয়ার। বর্তমান নেতৃত্ব সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতিকে ‘দলীয় অফিসে’ পরিণত করেছে বলেও অভিযোগ করেন এই আইনজীবী নেতা। আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে সাবেক সম্পাদক মোমতাজ উদ্দিন মেহেদি বলেন, আগামীকাল সকাল সাড়ে ৯টায় আমরা এই জায়গায় একত্রিত হব। যদি এই অবৈধ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করে তাহলে সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেব। রবিবারের সাধারণ সভায় ২৫ আইনজীবী ছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, ২৫ জনের সিদ্ধান্ত সমিতি মানে না। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস বলেন, দলীয় এজেন্ডা সুপ্রীমকোর্টে বাস্তবায়নের অপপ্রয়াস চলছে। আইনজীবীরা তা প্রতিহত করবে।
×