ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবাদীদের স্তব্ধ করতে কর্তৃপক্ষের নির্মম শক্তি প্রয়োগের প্রমাণ

মিসরের স্বাধীনতার দুঃসময়ে বিপ্লবের প্রতীক সাব্বাগ

প্রকাশিত: ০৩:৩৪, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

মিসরের স্বাধীনতার দুঃসময়ে বিপ্লবের প্রতীক সাব্বাগ

মিসরের গণঅভ্যুত্থান বার্ষিকীর প্রাক্কালে কায়রোর জনবহুল রাস্তায় ২৪ জানুয়ারি মুখোশ পরা দাঙ্গা পুলিশের গুলিতে নিহত হন ৩১ বছর বয়সী মা ও কবি শাইমা আল সাব্বাগ। ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারির পর থেকে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে যোগ দিলেন তাদের দলেই। আর প্রতিবাদী জনতাকে স্তব্ধ করে দিতে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ যে নির্মম শক্তি প্রয়োগ করেছিল সেটির এক শক্তিশালী প্রতীক এই মুত্যু। চার বছর আগে এখান থেকেই গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছিল। মানবাধিকার কর্মীরা বলেছেন, সাব্বাগের বর্বরোচিত হত্যাকা- দেখিয়ে দিয়েছে যে সেনা সমর্থিত সরকার পুরনো স্বৈরাচারী শাসনে ফিরে যেতে কতটা ইচ্ছুক। তবে তার মৃত্যুর ছবি ও ভিডিও দেশটিতে ব্যাপক প্রচার পায় যে, মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসিও শোক প্রকাশ করে বলেছেন, সাব্বাগ আমার কন্যার মতোই। তার গুলিবিদ্ধ হওয়া থেকে মারা যাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্ত ধরে রাখেন ফটোগ্রাফার ও ভিডিওগ্রাফাররা। ২০১১ সালের আরব বসন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার নিহতের মধ্যে সাব্বাগ একটি নাম মাত্র। প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারককে ক্ষমতাচ্যুত করার ১৮ দিনের বিক্ষোভে আটশ’র বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়। এরপর ২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট একদিনেই মারা যায় এক হাজারের বেশি। ওই দিন ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থকদের অবস্থান ধর্মঘট থেকে হটিয়ে দিতে সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তারা ব্যাপক অভিযান চালায়। এরপর থেকে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যু প্রায় নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই ইসলামপন্থী ও নিরস্ত্র। এ ছাড়াও রয়েছে বামপন্থী ও উদারপন্থীরা। সাব্বাগ যেদিন কায়রোতে মারা যান, ওই দিনই আলেকজান্দ্রিয়ায় ইসলামপন্থীদের র্যালিতে সন্দোস রেদা নামে ১৭ বছরের এক কিশোরী নিহত হয়। এর পরদিন ২৫ জানুয়ারি গণঅভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়। এর পাঁচদিন পর কায়রোর উত্তরাঞ্চলে শারকিয়া প্রদেশে বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক ছাত্র নিহত হয়। সাব্বাগের এক বন্ধু সায়েদ আবু এলাল বলেছেন, স্বাধীনতার এই দুঃসময়ে সাব্বাগ বিপ্লবের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। সাব্বাগ গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় তাকে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলেন সায়েদ। ২০১১ সালে আরব বসন্ত শুরু হওয়ার পর সাব্বাগ সোশ্যালিস্ট পপুলার এ্যালায়েন্স পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি প্রায় প্রত্যেক বিক্ষোভেই অংশ নিতেন এবং সেøাগান দেয়ার প্রতিভার জন্য আলেকজান্দ্রিয়ায় তাকে তার বন্ধুরা ‘বিপ্লবের কণ্ঠ’ বলে ডাকত। ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস।
×