ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জানুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ

রফতানি আয় ধরে রাখা নিয়ে শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

রফতানি আয় ধরে রাখা নিয়ে শঙ্কা

জসিম উদ্দিন ॥ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে রফতানি আয় বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। এ সময়ে রফতানি আয় হয়েছে দুই হাজার ৮৮৫ দশমিক ১৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩১ দশমিক ৩৮ কোটি মার্কিন ডলার বেশি। ওই সময় রফতানি হয়েছিল দুই হাজার ৭৫৩ দশমিক ৭৭ কোটি মার্কিন ডলার। বুধবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। বরাবরের মতো দেশের রফতানি আয়ের সিংহভাগ তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে। এবারও নিট এবং ওভেন খাতই বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। তবে তৈরি পোশাক রফতানির সঙ্গে জড়িতরা বলছেন গত এক মাস ধরে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল অবস্থায় এই ধারা অব্যাহত থাকবে কিনা তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। ইতোমধ্যে মাত্র ২৩টি পোশাক কারখানার ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ ১১ হাজার ২৯৮ মার্কিন ডলার, যা দেশী মুদ্রায় প্রায় ১৪৮ কোটি টাকা। তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল, মূল্যছাড়, উড়োজাহাজে পণ্য পাঠানো, জাহাজীকরণে বিলম্ব ও নাশকতার কবলে পড়ে এসব ক্ষতি হয়। ইপিবির তথ্য মতে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রফতানি আয় হয়েছে ১৭ হাজার ৭৯৯ দশমিক ৩৬ কোটি মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫৯ দশমিক ৭৮ কোটি মার্কিন ডলার বেশি। এর প্রবৃদ্ধির হারও শতকরা দুই ভাগের বেশি। গত অর্থবছরের এই সময় রফতানি হয়েছিল ১৭ হাজার ৪৩৯ দশমিক ৫৮ কোটি মার্কিন ডলার। বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মোঃ শহীদুল্লাহ আজীম জনকণ্ঠকে বলেন, পোশাক খাতে সামান্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এরপরও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় আমরা শঙ্কিত। গত বছরের এই সময় প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে আমরা লক্ষ্যমাত্রার আগেই ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানি করতে পারব। বাংলাদেশ এক্সপোটার্স এ্যাসোসিয়েশনের (ইবিএ) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি যে নেতিবাচক ধারায় ছিল, তার থেকে বেরিয়ে আসা অত্যন্ত ইতিবাচক এবং স্বস্তির। তবে গত এক মাস ধরে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল অবস্থায় আমরা উদ্বিগ্ন এই প্রবৃদ্ধির রক্ষা করতে পারব কিনা। বিজিএমইএ সূত্র জানায়, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ধাক্কা কাটিয়ে উঠার পর গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে তৈরি পোশাক রফতানি আদেশ তুলনামূলক হারে বেড়েছে। এছাড়া চলতি অর্থবছরে ডিসেম্বর পর্যন্ত রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৯১ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল এক হাজার ৪৬৮ কোটি ডলার। ডিসেম্বর মাসে রফতানি বেশি হওয়ায় গত ছয় মাসের গড় রফতানি আয় বেড়েছে। এর আগের মাস (নবেম্বর মাস) পর্যন্ত পাঁচ মাসে আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ১ শতাংশ। গত মাসের রফতানি আয় বৃদ্ধিতে যেসব খাতের ভূমিকা ছিল তার মধ্যে রয়েছে কৃষি পণ্য, প্রাথমিক ও প্রস্তুতকৃত প্রয়োজনীয় সামগ্রী, রাসায়নিক পণ্য, প্লাস্টিক ও মেলামাইন পণ্য, চমড়া ও চামড়াজাত পণ্য, অন্যান্য জুতা সামগ্রী, হস্তশিল্প, উল ও উলের তৈরি পণ্য, পাটজাত পণ্য, স্পেশাল ওভেন ফাইবার, নিটওয়্যার, ওভেন গার্মেন্টস, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য, ইলেক্ট্রনিক পণ্য, জাহাজ শিল্প ও কম্পিউটার সেবা ইত্যাদি।
×