ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যান্সার প্রতিরোধে গণসচেতনতা গড়তে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ক্যান্সার প্রতিরোধে গণসচেতনতা গড়তে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্যান্সার প্রতিরোধে সম্মিলিতভাবে গণসচেতনতা জাগিয়ে তুলুন। নানা ধরনের ক্যান্সার নিয়ে শক্তিশালী গবেষণা কার্যক্রম চালাতে হবে, কমাতে হবে চিকিৎসা ব্যয়। এমন আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে বুধবার পালিত হলো বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ক্যান্সারকে সমাজদেহ থেকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব নয়। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ, সূচনায় রোগ নির্ণয় ও উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সারের ক্রমবর্ধমান প্রকোপ বহুলাংশে কমানো সম্ভব। আমাদের অধিকাংশ মানুষের ক্যান্সারের প্রাথমিক প্রতিরোধ সম্পর্কে জ্ঞান ও সচেতনতা নেই। তাছাড়া সারাদেশে সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে বিপুলসংখ্যক রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই অপ্রতুল। ক্যান্সার সম্বন্ধে সঠিক তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। জনগণের মন থেকে ক্যান্সার ভীতি দূর করতে হবে। দিবসটি উপলক্ষে বুধবার বিভিন্ন বেসরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচী পালন করে। কর্মসূচীগুলোর মধ্যে ছিল র‌্যালি, লিফলেট বিতরণ, সেমিনার ইত্যাদি। বুধবার সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বটতলা থেকে একটি র‌্যালি বের হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে র‌্যালিটির উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোঃ রুহুল আমিন মিয়া, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ জুলফিকার রহমান খান, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ, বিএমডিসি’র সভাপতি, বিএসএমএমইউ’র পরিচালক (পরিদর্শন) কলেজেস এ্যান্ড পোস্ট গ্রাজুয়েট ইনস্টিটিউট ও নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবু সফি আহমেদ আমিন, অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সারওয়ার আলম, বিএসএমএমইউ’র ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জিল্লুর রহমান ভূঁইয়া প্রমুখ। অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, দেশে দারিদ্র্যের কারণে অনেক ক্যান্সার রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে না। উন্নত বিশ্বে দু’তৃতীয়াংশ শিশু ক্যান্সার রোগী ভাল হয়। কিন্তু চিকিৎসা খুব ব্যয়বহুল। তাই আমাদের দেশে ক্যান্সার চিকিৎসায় সহজলভ্য করার জন্য যাঁরা ওষুধ তৈরি করেন এবং এ সম্পর্কিত কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদের প্রতি সরকারের নজর দিতে হবে। র‌্যালির শুরুতে বিএসএমএমইউ’র ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জিল্লুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ক্যান্সার একটি ঘাতকব্যাধি। মাত্র কিছুদিন পূর্বেও ক্যান্সার রোগের নাম জানা মাত্রই মানুষ আঁতকে উঠত। সময়ের পরিক্রমায় ক্যান্সার রোগ সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছর ৪ঠা ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালন করা হয়ে থাকে। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ অনকোলজি বিভাগ যেমন আন্তঃবিভাগ (পুরুষ ও মহিলা রোগীদের জন্য ১৮টি শয্যা বিশিষ্ট) বহির্বিভাগ, ডে-কেয়ার সার্ভিস (যেখানে প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ জন রোগীকে কেমোথেরাপি চিকিৎসা প্রদান করা হয়) চালু রয়েছে। বিশ্বের সর্বাধুনিক মানের ব্রাকিথেরাপি চিকিৎসা চালু করা হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম দিকে স্টাফ কোয়ার্টার সংলগ্ন এলাকায় অনকোলজি বিভাগের আধুনিক ভবন তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। যেখানে অল্প সময়ের ভেতরে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেডিওথেরাপি মেশিন সংযোজন করা হবে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
×