ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রামেক বার্ন ইউনিট জুড়ে হাহাকার

নাশকতায় দগ্ধদের আর্তনাদ বাড়ছেই

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

নাশকতায় দগ্ধদের আর্তনাদ বাড়ছেই

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ হাহাকার আর আর্তনাদে ক্রমেই ভারি হয়ে উঠছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট। পোড়া চেহারায় যন্ত্রণায় কাতর মানুষগুলোর এ আর্তনাদে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটছে রামেকের বার্ন ইউনিট ঘিরে। চিকিৎসকরাও হিমশিম খাচ্ছেন তাদের সেবা দিতে। প্রতিদিনই রামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে যুক্ত হচ্ছেন পথে দগ্ধ নিরীহ মানুষ। জীবনের তাগিদে রাস্তায় বেরিয়ে নাশকতার নির্মম ছোবলে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। সর্বশেষ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যুক্ত হয়েছেন আরও তিনজন। এদের মধ্যে দুইজন ট্রাক চালক ও একজন হেলপার। সোমবার দিবাগত রাতে জামায়াত-শিবিরের ছোড়া পেট্রোলবোমায় দগ্ধ হয়েছেন তাঁরা। পোড়া মুখম-ল আর শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছেন তারা। মাঝে মাঝে দমফাটা চিৎকারে প্রকম্পিত করে তুলছেন হাসপাতালের ওয়ার্ড। রাজশাহীতে সর্বশেষ নাশকতার আগুনে দগ্ধ হয়েছেন ট্রাক চালক জেলার পবা উপজেলার আলীগঞ্জ এলাকার মনিরুদ্দিনের ছেলে সাইদুল ইসলাম, ফারুক হোসেন ও হেলপার মোল্লারডাইং এলাকার ইয়াসিন আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম। চিকিৎসকরা জানান, তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মুখম-লসহ শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে। মঙ্গলবার রামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখা যায়, অন্য এক পরিবেশ। শুধু চারদিকে আর্তনাদ। অস্থির স্বজনরাও। কেউ কেউ চোখের পানি ফেলছেন তাদের এ পরিণতিতে। চিকিৎসকরাও হিমশিম খাচ্ছেন তাদের সেবা দিতে। সবার মনে ঘৃণা নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে। পেট্রোলবোমায় দগ্ধ সাইদুর রহমানের মুখম-ল নিজেই চিনতে পারছেন না তিনি। দীর্ঘ ১৫ বছর অপরের গাড়ি চালিয়েছেন সাইদুর রহমান। সেই থেকে স্বপ্ন নিজের একটা গাড়ি হবে। তিল তিল করে জমানো টাকা দিয়ে অনেক কষ্ট করে ৩ বছর আগে নিজে একটি ট্রাক কিনেছেন। অন্যের কাছে সেটি ট্রাক হলেও তার কাছে সেটি স্বপ্ন। রুটি-রুজির একমাত্র পথ। নিজেই অনেক যতেœ চালাতেন সেই ট্রাক। তবে অবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় সেই স্বপ্ন পুড়ে শেষ হয়ে গেছে তার। শুধু তাই নয়, পেট্রোলবোমায় তিনি নিজেও হয়েছেন দগ্ধ। পরিবারে একমাত্র রোজগারের মানুষ তিনি, যা দিয়ে আয় করতেন তাও নাশকতার আগুনে পুড়ে শেষ। এখন তার চারদিকে অন্ধকার আর অন্ধকার। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিজের অবস্থার কথা জানালেন সাইদুর রহমান। তিনি জানান, সোমবার দিবাগত রাতে নগরপাড়া লিলি সিনেমা হলের কাছে অবরোধকারীদের পেট্রোলবোমা হামলার শিকার হন তিনি। রাজশাহীর পবা উপজেলার আলীগঞ্জ এলাকার মনিরুদ্দিনের ছেলে সাইদুল ইসলাম। একই ঘটনায় গাড়িতে থাকা হেলপার মোল্লারডাইং এলাকার ইয়াসিন আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম অগ্নিদগ্ধ হন।
×