ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

টেকনাফ ও মিয়ানমার স্থলবন্দরে কোটি কোটি টাকার পণ্য পচে-গলে নষ্ট হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

টেকনাফ ও মিয়ানমার স্থলবন্দরে কোটি কোটি টাকার পণ্য পচে-গলে নষ্ট হচ্ছে

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ বিএনপি-জামায়াতের টানা অবরোধ- হরতালের কারণে টেকনাফ স্থলবন্দর ও মিয়ানমারে নষ্ট হতে টলেছে কোটি কোটি টাকার আমদানিকৃত পণ্য। এতে অর্থনৈতিকভাবে দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা। ফলে প্রতিদিন অন্তত ২০লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। সীমান্ত বাণিজ্যের ব্যবসায়ীরা জানান, হরতাল-অবরোধে ব্যবসায়ী, দিনমজুর, শ্রমিকসহ নিরীহ লোকজনের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ব্যাঘাত ঘটছে আমদানি-রফতানি কাজেও। অবরোধ হরতালের প্রভাব না থাকলে টেকনাফ স্থলবন্দরে জানুয়ারি মাসে কমপক্ষে সরকারের ১০কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি স্থলবন্দরের ব্যবসায় চাঙ্গাভাব দেখা যেত। কিন্তু অবরোধ-হরতালের কারণে ব্যবসায়ীরা বর্তমানে হাত গুটিয়ে বসে আছে। অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিকও পার করছে অলস সময়। টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক কর্মকর্তা মোঃ নূরে আলম জনকণ্ঠকে জানান, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে জানুয়ারি মাসে ২০১ টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে ৫ কোটি ৪৫ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৯ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হয়েছে ২৬ কোটি ৩৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৬ টাকার পণ্য। জানুয়ারি মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারণকৃত লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা। তিনি বলেন, অবরোধ-হরতাল না থাকলে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যেত। টেকনাফ স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক জানান, টানা অবরোধ ও হরতালের কারণে সীমান্ত বাণিজ্যে ধস নেমেছে। গত ২৫ দিনে প্রায় ৭ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। হরতাল-অবরোধ এভাবে চলতে থাকলে বন্ধ হয়ে যাবে সীমান্ত বাণিজ্যের কার্যক্রম। অগ্রিম টাকায় কিনে রাখা বিপুল পরিমাণ মাছ, আদা, মসলাসহ খাদ্যদ্রব্য জায়গাতেই পচে যাবে মিয়ানমারে। সেদেশের ব্যবসায়ীরা কোনভাবেই হরতাল-অবরোধের দায় নেবে ুনা। টেকনাফ স্থলবন্দরে মাল ওঠা-নামার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানায়, আমরা দিনমজুর, দিনে এনে রাতে খাই। হরতাল-অবরোধ এটা আমাদের পেটে লাথি মারার মতো। খালেদা জিয়ার অবরোধের আগে প্রতিদিন এ বন্দরে ৬০-৭০টি ট্রাকে আমরা পণ্য বোঝাই করছিলাম। ওইসব ট্রাক বোঝাই মাল গেছে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। দৈনিক পাওয়া মজুরি দিয়ে ভালই চলছিল আমাদের ঘর-সংসারের খরচ। এখন মালভর্তি ট্রাক যাচ্ছে ৩-৪টি। তাও ঝুঁকি নিয়ে। বন্দরে প্রায় ৫শতাধিক শ্রমিক এখন বেকার। দিন কাটছে তাদের অভাব-অনটনে। টেকনাফ স্থলবন্দরে নিয়োজিত ৫শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ার আশঙ্কায় অবরোধ-হরতাল বন্ধ করার পদক্ষেপ নিতে তারা সরকারের নিকট দাবি জানিয়েছে। স্থলবন্দরে দায়িত্বরত শুল্ক কর্র্তপক্ষ জানায়, গত ডিসেম্বর মাসে মিয়ানমারে ৩ কোটি ১৪ হাজার টাকার পণ্য রফতানি হলেও জানুয়ারিতে রফতানি হয়েছে মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ টাকার।
×