ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সেরা শহর টরন্টো

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সেরা শহর টরন্টো

জীবনযাত্রার ব্যয়, বসবাস যোগ্যতা, নিরাপত্তা, ব্যবসায়িক পরিবেশ, গণতান্ত্রিক চর্চা, সাংস্কৃতিক ও সৃষ্টিশীলতার বিবেচনায় বিশ্বের সেরা শহর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে কানাডার টরন্টো। ব্রিটেনের খ্যাতনামা ‘ইকোনমিস্ট’ ম্যাগাজিন বিশ্বে বসবাসের ক্ষেত্রে এ শহরটিকে সেরা শহরের স্বীকৃতি দেয়। জানা গেছে, ম্যাগাজিনের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট প্রণীত ৪২ পৃষ্ঠার ‘সেফ সিটিজ ইনডেক্স ২০১৫ এ্যাসেসিং আরবান সিকিউরিটি ইন ডিজিটাল এইজ’-এ তা প্রকাশিত হয়। খবরটি বিশ্বের সকল মিডিয়ায় বিশেষ গুরুত্ব পায়। এতে বিশ্বের প্রথমসারির ৫০টি সেরা শহরকে বিবেচনায় নেয়া হয়। উল্লেখ্য, জীবনযাপনের ব্যয়বহুলতায় টরন্টো অপরাপর বিশ্বমানের শহরগুলোর মাঝামাঝিতে অবস্থান করছে। সেক্ষেত্রে ইরানের তেহরান, ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবী, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো শহরেরও পেছনে রয়েছে। প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, ৫০টি সেরা শহরের মধ্যে প্রথমসারিতে থাকা ১০টি শহর হলো অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ও সিডনি, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি, সানফ্রান্সিসকো ও শিকাগো এবং ইউরোপের আমস্টারডাম, স্টকহোম। এমনি এক বাস্তবতায় আমাদের অবস্থা বা অবস্থান কোন্ পর্যায়ে রয়েছে। ঢাকা আমাদের রাজধানী। এটি একটি মেগাসিটি এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান শহরও। ঢাকা মহানগর এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি। এটি বিশ্বের সর্বাপেক্ষা ঘন জনবহুল শহরগুলোর অন্যতম। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শহরও। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, বাসযোগ্যতার বিচারে বিশ্বের ১৪০টি শহরের মধ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অবস্থান ১৩৯তম। গত বছরের শেষ দিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) এক জরিপে স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং অবকাঠামোÑ এই পাঁচ মানদ-ে ১০০ ভিত্তিক সূচকে ঢাকার স্কোর ৩৮ দশমিক ৭। এ জরিপ অনুযায়ী সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের অবস্থাই কেবল ঢাকার চেয়ে খারাপ। শহরটির স্কোর ৩০ দশমিক ৫। একই বছর বসবাসের জন্য ‘নিকৃষ্ট’ শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ঢাকা। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অপরাধ, দূষণসহ বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের ২২৩টি শহরের তালিকা তৈরি করা হয়। এতে ঢাকার অবস্থান ২০৮তম। প্রতিদিনের ঢাকা নানা সমস্যায় জর্জরিত। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অপরাধ, দূষণসহ বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় ঢাকা অনেক পিছিয়ে। রয়েছে ধনী ও দরিদ্রের ব্যাপক বৈষম্য। বিশাল অট্টালিকার পাশে রয়েছে অসংখ্য বস্তি। নাগরিক সুবিধার ক্ষেত্রে নানা সঙ্কট রয়েছে এখানে। ঘনবসতি, নিত্য যানজট, ময়লা-আবর্জনা, নিরাপত্তাহীনতা, সবমিলিয়ে যেন এক অস্থিতিকর অবস্থা। প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে শহরের জনসংখ্যা, অপরিকল্পিতভাবে বাড়ছে শহরের সীমানা। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সঙ্কটও। ঢাকার উন্নয়নে সরকারের নানামুখী প্রচেষ্টা রয়েছে, তা বলা যায়। ইতোমধ্যে কিছু ফ্লাইওভার নির্মাণ, ঢাকার চারপাশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, দূষণ রোধে নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এসব যে প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্বের উন্নত ও পরিকল্পিত শহরগুলোর দিকে তাকালে এমন বাস্তবতাই উঠে আসে। ঢাকা আমাদের প্রিয় ও গর্বের শহর। এ শহরের সমস্যাগুলো দূর করার জন্য, শহরটিকে আরও সুন্দর ও বসবাসযোগ্য করার জন্য যেসব উদ্যোগ নেয় হয়েছে সেগুলোর কাজ ত্বরান্বিত করা হোক, এটা শুধু ঢাকাবাসীর নয় দেশবাসীর প্রত্যাশা। এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে ঢাকাও একদিন উন্নত শহরগুলোর তালিকায় স্থান পেতে পারে।
×