ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মার্কিন কৃষ্ণকলির কাছে আবারও হার রুশ গ্ল্যামারগার্ল শারাপোভা, রেকর্ড ১৯ গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের মাইলফলক স্পর্শ, সামনে কেবল ২২ গ্র্যান্ডস্লামজয়ী জার্মানির স্টেফিগ্রাফ

শেষ হাসি সেরেনার

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

শেষ হাসি সেরেনার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অতীত পরিসংখ্যান আর ইতিহাসই পেছনে রেখেছিল মারিয়া শারাপোভাকে। সেই রেকর্ড ভেঙ্গে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে এবারও বেরিয়ে আসতে পারেননি তিনি। বরং মাশার বিপক্ষে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখলেন সেরেনা উইলিয়ামস। শনিবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে মারিয়া শারাপোভাকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের ১৯ গ্র্যান্ডসøাম জয়ের অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়লেন আমেরিকান টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। আর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে সেরেনা উইলিয়ামসের এটি ষষ্ঠ শিরোপা জয়। বর্তমান টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দুই তারকা সেরেনা উইলিয়ামস ও মারিয়া শারাপোভাকেই পেয়েছিল মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্টের ফাইনাল। আর সেই লড়াইয়ে সেরেনা উইলিয়ামস ৬-৩ এবং ৭-৬ (৭/৫) গেমে পরাজিত করেন শারাপোভাকে। এর ফলে ২০১০ সালের পর আবারও অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপা নিজের শোকেসে তুললেন আমেরিকান টেনিস তারকা। আর এই শিরোপা জয়ের পর উল্লাসও করলেন দারুণভাবে। টেনিস কোর্টের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী শারাপোভাকে হারিয়ে সেরেনা উইলিয়ামস উচ্ছ্বাস করলেন লাফিয়ে শূন্যে ভেসে। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনেও যেন উচ্ছ্বাস ধরে রাখতে পারছিলেন না সেরেনা, ‘একটি বল এবং একটি র‌্যাকেট নিয়ে কোর্টে নেমেছিলাম আমি। আর এখানে দাঁড়িয়ে আছি ১৯ গ্র্যান্ডসøাম নিয়ে। যা কখনই ভাবিনি আমি। এই শিরোপা জেতে আমি সত্যিই রোমাঞ্চিত।’ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের আগে মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা এবং ক্রিস এভার্টের সঙ্গে ১৮ গ্র্যান্ডসøাম জেতে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় যৌথভাবে দ্বিতীয় ছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। শনিবার কিংবদন্তি নাভ্রাতিলোভা এবং ক্রিস এভার্টকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয়স্থানটি দখল করে নিলেন টুর্নামেন্টের শীর্ষ বাছাই। এখন তার সামনে কেবল স্টেফিগ্রাফের অবস্থান। ১১ গ্র্যান্ডসøাম জেতে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছেন অস্ট্রেলিয়ার মার্গারেট কোর্ট। ৯টি জেতে পঞ্চম স্থানে আছেন আমেরিকার মনিকা সেলেস। উন্মুক্ত যুগে ২২ গ্র্যান্ডসøাম জেতে সবার উপরে অবস্থান করছেন যিনি। স্টেফিগ্রাফকে ছুঁতে হলে আরও তিনটি মেজর শিরোপা জেততে হবে সেরেনা উইলিয়ামসের। তেত্রিশ বছর বয়সেও আমেরিকান তারকা যেভাবে ছুটছেন স্টেফিগ্রাফকেও ছাড়িয়ে যাওয়া এখন তার কেবল সময়ের ব্যাপার। ২০০৪ সালে শেষবারের মতো সেরেনা উইলিয়ামসের বিপক্ষে জয়ের দেখা পেয়েছিলেন মারিয়া শারাপোভা। এরপর আর কখনই জয় পাননি রুশ সুন্দরী। তবে শনিবার সেরেনার বিপক্ষে এক দশকের জয়-খরা ঘুচাতে আশাবাদী ছিলেন শারাপোভার ভক্তÑঅনুরাগীরা। কিন্তু প্রথম সেটে শারাপোভাকে যেন উড়িয়েই দিলেন সেরেনা। প্রথম সেট একপেশে জিতলেও দ্বিতীয় সেটে ঠিকই লড়াইয়ে ফেরেন শারাপোভা। কিন্তু লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের দ্বিতীয় বাছাই মাশা। ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রথম ট্রফি জিতেছিলেন তিনি। এর পরের বছরগুলোতে হতাশায় কেটেছে তার। এবার সেই সুযোগ এলেও তা কাজে লাগাতে না পারার ব্যর্থতা নিঃসন্দেহে শারাপোভাকে আঘাত করবে ক্যারিয়ারের বাকিটা জীবন। তবে ম্যাচ শেষে সেরেনা উইলিয়ামসের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন শারাপোভা। এ বিষয়ে ২৭ বছর বয়সী এই রাশিয়ান গ্ল্যামারগার্ল বলেন, ‘ইতিহাস গড়ার জন্য সেরেনা উইলিয়ামসকে অভিনন্দন জানাই আমি। প্রকৃতপক্ষে অসাধারণ খেলেছে সে। আমি তাকে দীর্ঘ সময় ধরেই হারাতে পারছি না ঠিকই। কিন্তু তার বিপক্ষে টেনিস কোর্টে খেলতে আমার খুবই ভাল লাগে। সে এমন একজন খেলোয়াড় আসলেই যাকে কোর্টে হারানোটা খুব কঠিন ব্যাপার।’ মারিয়া শারাপোভাকে হারিয়ে উন্মুক্ত যুগে সবচেয়ে বেশি বয়সী মহিলা হিসেবে শিরোপা জয়ের রেকর্ডও গড়লেন সেরেনা। এর ফলে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটা নিজের করে রাখার সুযোগ পেলেন তিনি। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১৯ গ্র্যান্ডসøাম, দীর্ঘ সময় র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান দখল ছাড়াও অসামান্য সব কীর্তি গড়েছেন সেরেনা। এসব কীর্তি গড়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন ইতিহাসের সোনালি পাতায়। তার সামনে এখন কেবল স্টেফিগ্রাফের ২৩ গ্র্যান্ডসøাম জয়ের হাতছানি। আর মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম জেতায় বাকি সময়টাও যে ভাল কাটবে তা অনায়াসেই বলা যায় তার। এর ফলে চলতি মৌসুমেই গ্র্যান্ডসøাম জয়ের সংখ্যাটাকে আরও বাড়িয়ে নিতে পারেন সেরেনা উইলিয়ামস।
×