ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাগো সম্ভাবনায় জাগো ॥ কবিতা উৎসব কাল শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৩১ জানুয়ারি ২০১৫

জাগো সম্ভাবনায় জাগো ॥ কবিতা উৎসব কাল  শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দ্রোহ, প্রেম থেকে শুরু করে যাপিত জীবনের সবকিছুই মিলে যায় কবিতার অঙ্গে। সাহিত্যের এ অনন্য শাখাটি কখনও হয়ে ওঠে সমাজ পরিবর্তনের শাণিত হাতিয়ার। তাই তো শৃঙ্খল মুক্তির ডাক দিয়ে ১৯৮৭ সালে স্বৈররাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন গতির সঞ্চার করে শুরু হয়েছিল জাতীয় কবিতা উৎসব। জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত কবিতার এ বৃহৎ আয়োজনটি ইতোমধ্যে সমাদৃত হয়েছে বিশ্বব্যাপী। জাগো সম্ভাবনায় জাগো কবিতায় স্লোগানে কাল রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে এবারের ২৯তম উৎসব। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে উদ্বোধন হবে দুই দিনব্যাপী জাতীয় কবিতা উৎসব ২০১৫। অন্য বারের মতো এবারও বাংলা ভাষাসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার কবিদের অংশগ্রহণে মিলনমেলায় পরিণত হবে উৎসব। দুই দিনের আয়োজনে সারাদেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা কবিদের স্বরচিত কবিতাপাঠের সঙ্গে থাকবে উৎসব সঙ্গীত, একুশের গান, আবৃত্তি, কবিতার গান, একাধিক সেমিনার ও প্রদর্শনী। এছাড়া দেশের ভিন্নভাষী কবিদের নিয়ে ‘অন্য ভাষার কবিতা’ শিরোনামের পৃথক অধিবেশন। উৎসব উপলক্ষে থাকবে প্রবাসী বাংলা ভাষার কবিদের সরব উপস্থিতি। শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে কবিতা পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানানো হয়। এতে উপস্থিত ছিলেনÑ পরিষদের সভাপতি কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, সাধারণ সম্পাদক আসলাম সানী, উৎসবের আহ্বায়ক কবি মুহাম্মদ সামাদ, যুগ্ম আহ্বায়ক কবি তারিক সুজাত, সভাপতিম-লীর সদস্য কবি কাজী ওরাজি, সম্পাদকম-লীর সদস্য কবি আমিনুর রহমান সুলতান প্রমুখ। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মুহাম্মদ সামাদ। অনুষ্ঠান কর্মসূচী তুলে ধরেন যুগ্ম আহ্বায়ক কবি তারিক সুজাত। সংবাদ সম্মেলনে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, কবি সমাজের প্রতিভূ ও নতুন স্বপ্ন-সম্ভাবনার স্রষ্টা। সমাজ বিবর্তনের ধারায় মানুষ প্রতিদিনই কবির নতুন কবিতা ও নতুন গানের জন্যে উন্মুখ হয়ে থাকে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী আধিপত্যের সীমাহীন অভীপ্সা, লোভ ও আত্মস্বার্থপরতা আক্রান্ত করছে ন্যায়, সত্য, সহমর্মিতা ও মানবিকবোধের শিল্পিত প্রকাশকে। আমাদের প্রতিবাদের ভাষা ভিন্ন। একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের মধ্য দিয়ে আমরা বর্তমানের নৈরাজ্যের মোকাবেলা করতে চাই। আমরা চাই সবকিছু ভুলে মানুষকে সর্বাগ্রে স্থান দিয়ে একটি দেশে সুন্দর পরিবেশ তৈরি হবে। উৎসব সম্পর্কে জানানো হয়, মালয়েশিয়া, বেলজিয়াম, সুইডেন, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, ইকুয়েডর, চীন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের কবিরা উৎসবের বিভিন্ন পর্বে অংশ নেবেন। রবিবার সকাল ১০টায় ঢাবির হাকিম চত্বরে শুরু হবে উৎসবের উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা। প্রথমেই ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদ সলংগ্ন জাতীয় কবির সমাধি প্রাঙ্গণে যাবেন আয়োজকবৃন্দ। সেখানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও শিল্পী কামরুল হাসানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এরপর পদযাত্রার মাধ্যেেম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছে দেশের জন্য আত্মোসর্গকৃত সকল শহীদের প্রতি নিবেদন করা হবে শ্রদ্ধাঞ্জলি। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফিরে আসা হবে উৎসব প্রাঙ্গণে। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সঙ্গে উত্তোলন করা হবে জাতীয় পতাকা। গাওয়া হবে একুশের গান ও উৎসব সঙ্গীত। প্রয়াত বরেণ্য ব্যক্তিত্বদের স্মরণে শোকপ্রস্তাব পাঠ করবেন কবি কাজী রোজী। উৎসবের ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আর উদ্বোধকের ভাষণ দেবেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। সভাপতির বক্তব্য রাখবেন হাবীবুল্লাহ সিরাজী। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে কবিতাপাঠ ও আলোচনা পর্ব। এতে সভাপতিত্ব করবেন এ্যামেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। কবিতাপাঠ ও আলোচনায় অংশ নেবেন সুইডেন, ডেনমার্ক, আমেরিকা-চীন, ভারত, বেলজিয়াম, ইকুয়েডর, ও সুইজারল্যান্ডের আমন্ত্রিত কবি ও লেখকরা। সূচনা দিনে কবিতাপাঠের পাঁচটি অধিবেশনের সঙ্গে থাকবে আবৃত্তিপর্ব। উৎসবের সমাপনী দিন সোমবারের আয়োজনে পুরস্কার প্রদানের পাশাপাশি থাকবে দুইটি সেমিনার, কবিতাপাঠ ও কবিতার গানবিষয়ক অধিবেশন। বিদেশী কবি, লেখক ও শিল্পীদের মধ্যে এ বছরে উৎসবে অংশ নেবেন ভারতের আশিস স্যান্যাল, সুবোধ সরকার, মৃণাল বসু চৌধুরী, সৈয়দ হাসমত জালাল, বীথি চট্টোপাধ্যায়, শ্রীজাত, ভোজপুরী ভাষার চন্দ্র ভূষণ রায়, সাহিত্য সমালোচক শংকরলাল ভট্টাচার্য, আবৃত্তিকার সৌমিত্র মিত্র ও সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য; চীন-যুক্তরাষ্ট্রের জ্যামি শূন্য; মালয়েশিয়ার আহমেদ কামাল আবদুল্লাহ কামেলা, আরবাক বিন ওতমান, রাজা রাজেশ্বরী সীতা রামণ, ফাজিলাহ হোসেন, লিলি সিতি মূলতাতুলিয়ানা ও ওমর উজায়েরদ; সুইডেনের পিটার নেইবার্গ; ডেনমার্কের সিন্ডি লিন ব্রাউন, ইকুয়েডরের মারিয়া বারেরা, সুইজারল্যান্ডের টোবিয়াস বিয়ানকোনে, বেলজিয়ামের জারমেইন ড্রুগেনব্রুট প্রমুখ।
×