ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ বিএনপির ভাগ বাটোয়ারার রাজনীতি

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ৩১ জানুয়ারি ২০১৫

টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ বিএনপির ভাগ বাটোয়ারার রাজনীতি

ফিরোজ মান্না/ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল থেকে ॥ টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ-বিএনপির রাজনীতি মাঝি ছাড়া নৌকার মতো চলছে। এখানে দুই দলই মিলেমিশে ভাগ বাটোয়ারা করে খাচ্ছে। দুই দলের মধ্যে ভাই-বন্ধু সম্পর্ক বিরাজ করছে। বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচী পালন করছে না বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিএনপি এখন টাঙ্গাইলকে বিভাগ করার আন্দোলনের জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে একত্রে কাজ করছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে খান পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে পলাতক থাকায় জেলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রের নির্দেশিত সময়ের মধ্যে জেলা সম্মেলন করতে সাহস পাচ্ছে না। জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতা মনে করছেন খান পরিবারের সদস্যরা অচিরেই ফিরে আসবেন। তারা ফিরে এলেই সম্মেলন করা হবে। তাদের অর্থে লালিত অনেক নেতাই সম্মেলন করার জন্য কোন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। অথচ পুলিশ তাদের গ্রেফতার করার জন্য সর্ব শক্তি নিয়োগ করেছে। অন্য নেতৃবৃন্দ সম্মেলন নিয়ে কোন দিনক্ষণ ঠিক করতে পারছেন না। সব কিছু মিলেই টাঙ্গাইলের রাজনীতি চলছে আল্লাহর ওয়াস্তে। টাঙ্গাইলের পরিস্থিতি এমন যে, সারাদেশে বিএনপি-জামায়াত জোট হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করলেও টাঙ্গাইলে সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে সঠিকভাবে পালিত হচ্ছে না। অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগও সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে দলকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারছে না। টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঠিক নেতৃত্ব না থাকায় রাজনৈতিকভাবে দু’টি দলই মুখ থুবড়ে পড়েছে। দুই দলের কর্মীসমর্থকদের অভিযোগ, দুই দলই আপোস করে রাজনীতি করছে। নেতৃস্থানীয়রা একে অপরের আস্থাভাজন হয়ে হালুয়া রুটি ভাগবাটোয়ারা করে খাচ্ছে। যে কারণে টাঙ্গাইলে দু’টি দলেরই কেন্দ্রের নির্দেশ সঠিকভাবে পালিত হয় না। টাঙ্গাইলে হরতালের সমর্থনে মিছিলের প্রস্তুতিকালে গত ২২ জানুয়ারি দুপুরে জেলা যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদকসহ ১০ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার প্রতিবাদে টাঙ্গাইল জেলায় ২৫ জানুয়ারি সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে জেলা বিএনপি। বিএনপি নেতৃবৃন্দ জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান থেকে হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য সেখান থেকে নেতাকর্মীদের আটক করে টাঙ্গাইল মডেল থানায় নিয়ে যায়। এর মধ্যে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ পাহেলী, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক একেএম মনিরুল হক, শহর ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ সারোয়ার, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক কেএম তৌহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমানসহ ১০ জনকে আটক করে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম তোফা জানিয়েছেন, দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে জেলা বিএনপি গত ২৫ জানুয়ারি সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে। আটকের বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, গাড়ি ভাংচুর ও নাশকতার আশঙ্কায় তাদের আটক করা হয়। পরে ওই রাতে পুলিশের সঙ্গে সমঝোতা করে জেলা বিএনপি। সমঝোতার ভিত্তিতে আটককৃত নেতাকর্মীরা ছাড়া পান। নেতারা ছাড়া পাওয়ার কারণে হরতাল প্রত্যাহার করে নেয় জেলা বিএনপি। ওই ঘটনার পর থেকে জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ পুলিশের আটক ও মামলার ভয়ে রাজপথ ছেড়ে দেয়। বিএনপির টানা অবরোধে তাদের সেইভাবে আর রাজপথে নামতে দেখা যায় না। কিছু নেতাকর্মী সকালে একত্র হয়ে বিভিন্ন জায়গায় চা’র আড্ডায় মিলিত হয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। বিএনপির কর্মী আব্বাস আলী খান জানান, কতিপয় নেতা রাজপথে না থেকে শেখ হাসিনার ডিজিটাল ফেসবুকে ছবি তুলে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর জেলা বিএনপির এক যুগ্ম সম্পাদকের নেতৃত্বে বিএনপি সমর্থিত কিছু নেতা জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতার সঙ্গে আঁতাত করে রাজনীতি করে চলেছেন। এ নেতার কিছু কর্মীসমর্থক প্রতিদিন ওই নেতার কার্যালয়ে গিয়ে বসে বিভিন্ন কাজ ও সুযোগ সুবিধার ভাগবাটোয়ারা ও বিভিন্ন কর্মসূচীর নামে টাকা উত্তোলন করে চলছে। এক সময়ের জাসদ কর্মী বর্তমানে জেলা বিএনপির এই বিতর্কিত যুগ্ম সম্পাদক ওয়ান ইলেভেনের সময় বিভিন্ন পদে থেকে ব্যাপক সুবিধা আদায় করেন। অথচ সে সময় সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়িয়েছেন। এখনও বিএনপির বিতর্কিত সেই নেতা খালেদা জিয়ার ডাকা হরতাল-অবরোধে রাজপথে না থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করে ‘টাঙ্গাইল জেলা ঢাকা বিভাগে রাখার দাবি বাস্তবায়ন কমিটির’ কাজ করে যাচ্ছেন। অপরদিকে জাসদ নেতা ও বর্তমান সরকারের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু টাঙ্গাইল সার্কিট হাউসে আসলে সে সময় তার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এসব কারণে জেলা বিএনপিকে চরমভাবে বিতর্কিত করে ফেলেছে। এছাড়া জেলা বিএনপি তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান, বর্তমান সভাপতি ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ শামসুল আলম তোফা এই তিন গ্রুপে বিভক্ত। এই তিন গ্রুপের কারণে বিএনপি টাঙ্গাইল জেলায় সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে পারছে না। এদের তিনজনের নেতৃত্বের দুর্বলতা ও গ্রুপিংয়ের সুযোগে আওয়ামী লীগ বিএনপির কতিপয় নেতার সঙ্গে আঁতাত করে জেলার বিভিন্ন সংগঠনে ভাগবাটোয়ারা করে চলছে। বিএনপির আন্দোলন বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান খান শফিক বলেন, বিএনপির সকলস্তরের নেতাকর্মী সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সরকারের মামলা হামলা জুলুম নির্যাতন উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে আছে নেতাকর্মীরা। আমার নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে, গ্রেফতার হয়েছি। তারপরও আন্দোলনে, সংগ্রামে থাকব। ছাত্রদলের যারা এই আন্দোলনে সংগ্রামে ভূমিকা রাখবে তাদেরকে ভবিষ্যতে অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে। অপরদিকে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক দুর্বলতার মধ্যে কেন্দ্রীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে জেলায় রাজনীতি করে চলেছে। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের চরম দুর্বলতার কারণে জেলায় মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কর্মীসমর্থকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তারা সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আশা করছেন। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মধ্যে জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এখনও তা করতে পারেনি। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্ব ও নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে উপজেলা আওয়ামী লীগ তাদের মতোই কাজ করে যাচ্ছে। এতে জেলার সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের দূরত্ব বেড়েছে। টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান ফারুক জনকণ্ঠকে বলেন, পাঁচটি উপজেলার সম্মেলন শেষ হয়েছে। আরও দুইটি উপজেলার সম্মেলন শেষ করার প্রস্তুতি চলছে। সাতটি উপজেলার সম্মেলন শেষ হওয়ার পরেই জেলা সম্মেলন করা হবে। জেলার সম্মেলনের জন্যে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কাজ শুরু করা হয়েছে। এদিকে জেলার ঘাটাইল, কালিহাতী, দেলদুয়ার, নাগরপুর, ভুঞাপুর ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় এখনও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। এছাড়া সখীপুর উপজেলায় সম্মেলন হলেও এখনও কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। এখানে সম্মেলনের কোন নামই নেয়নি জেলা আওয়ামী লীগ। সখীপুরে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর গত ২২ ডিসেম্বর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ওই দিন কমিটি গঠন না হওয়ায় নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। বিগত ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতি হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত শিকদার। এদিকে বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। দু’গ্রুপের কয়েকজন নেতাকে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারের মুখোমুখিও হতে হয়েছে। মূলত বিগত সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়েই দলটি প্রকাশ্যভাবে দু’গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। চরম গ্রুপিংয়ের কারণে বাসাইল উপজেলায় দু’টি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি জমা পড়েছে। দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকট আকার ধারণ করেছে। আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ অবস্থান নিয়েছে মুখোমুখি। দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে কর্মীসমর্থকরাও। ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে বর্তমান এমপি খন্দকার আবদুল বাতেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার ফজলুল হক ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মল্লিক দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। খন্দকার আবদুল বাতেন নির্বাচিত হওয়ার পর কোণঠাসা হয়ে পড়েন তাঁরা। এমপি আওয়ামী লীগে যোগদান করলেও সম্পর্কের আর উন্নতি হয়নি। দূরত্ব বাড়তে থাকে তাদের সঙ্গে। এমপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে যারা তার পক্ষে নির্বাচন করেছিল তাদের নিয়ে কাজ করছেন। গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে খন্দকার আবদুল বাতেন আবারও এমপি নির্বাচিত হন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার আস্থাভাজন মঈন সিদ্দিকীকে মনোনীত করেন। সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মল্লিক ও ডুবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমান মনোনয়ন প্রার্থী ছিলেন। তাদের বাদ দিয়ে মঈন সিদ্দিকীকে মনোনয়ন দেয়া হয়। নির্বাচনে মঈন সিদ্দিকী বিপুল ভোটে হেরে যান। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায়। এদিকে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সব উপজেলায় সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের তাগিদ দেয়া হয়। এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকট হয়ে ওঠে। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আতোয়ার রহমান বলেন, এমপির অনুসারী জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা অবৈধভাব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করেন। এর প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা ডাকলে জেলা আওয়ামী ওই সভা স্থগিত করে। আবার জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার নির্দেশে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভা ডাকলেও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ফজলুল হক তা স্থগিত করেন। এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগ দেলদুয়ারে বর্ধিত সভা করে। সেখানে সব ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এমপি সমর্থিত সম্মেলন প্রস্ততি কমিটির সভা ডাকে। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করেন। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি বর্ধিত সভা করে কমিটি করবে বলে ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মল্লিক বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের উপস্থিতিতে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠিত হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ওই কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি করা অবৈধ। এমপির সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতির কারণে জেলার গুটিকয়েক নেতা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার এখতিয়ার তাদের নেই। ঘাটাইলে আওয়ামী লীগের এমপি আমানুর রহমান খান রানা বর্তমানে আত্মগোপনে থাকায় সেখানে সম্মেলন হচ্ছে না। সেখানে দু’টি আহ্বায়ক কমিটি চরম বিরোধিতার মুখে কাজ করে যাচ্ছে। জেলা আওয়ামী লীগ এখানে দুই দলের সম্বন্বয়ে একটি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করেছে। ভুঞাপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দু’টি আহ্বায়ক কমিটি কাজ করছে দীর্ঘদিন। এখানে এমপির সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের বিরোধিতার কারণে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে কাজ করতে পারছে না। জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দও এখানে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। নাগরপুরে তীব্র অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে জেলা আওয়ামী লীগ সম্মেলন করতে পারছে না। টাঙ্গাইল সদর উপজেলা ও কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগ ইউনিয়নগুলোর সম্মেলন খুবই ধীর গতিতে করে চলেছে। জেলায় দলের সাংগঠনিক অবস্থা ভাল থাকার কারণে মধুপুর, ধনবাড়ী, গোপালপুর ও মির্জাপুর উপজেলায় সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। এসব বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খান বলেন, উপজেলাগুলোতে সম্মেলনের কাজ এগিয়ে চলছে। মূলত অভ্যন্তরীণ গ্রুপিংয়ের কারণে সম্মেলন করতে সমস্যা হচ্ছে। আর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন বিষয়ে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বলতে পারবে।
×