ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জিয়ার ছেলে হওয়াতেই কোকোকে হেনস্তা ॥ খালেদা

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ২৯ জানুয়ারি ২০১৫

জিয়ার ছেলে হওয়াতেই কোকোকে হেনস্তা ॥ খালেদা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে মা হিসেবে খালেদা জিয়া গভীরভাবে শোকাহত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। কোকোর জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বুধবার রাতে খালেদা জিয়ার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ সব বলা হয়। প্রয়াত ছেলের জন্য দোয়া চেয়ে খালেদা বলেন, আমি আপনাদের মাঝে আছি এবং যতদিন বেঁচে আছি আপনাদের সঙ্গেই থাকব। বিবৃতিতে দাবি করা হয়, আরাফাত রহমান কোকো রাজনৈতিক পরিবারে বড় হওয়া সত্ত্বেও কখনও রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হননি। তিনি নিজেকে কেবলমাত্র ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত রেখেছিলেন। বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, জিয়া পরিবারের সদস্য হওয়ার কারণেই তাঁকে নানামুখী জুলুম-নির্যাতন, হেনস্তা-অপপ্রচারের শিকার হতে হয়েছে। এমনকি অসুস্থ হয়ে প্রবাসে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থাতেও তিনি চরম প্রতিহিংসামূলক বৈরিতা থেকে নিষ্কৃতি পাননি। মা হিসেবে খালেদা জিয়া প্রায় আট বছর ধরে অসুস্থ সন্তানটির মুখ দেখার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন। অবশেষে খালেদা জিয়াকে সন্তানের লাশ গ্রহণ করতে হয়েছে। তিনি এর বিচারের ভার সর্বশক্তিমানের কাছে অর্পণ করার কথা বলেন। কোকোর মৃত্যুতে গভীর বেদনা ও শোকের মুহূর্তে সকলের কাছ থেকে যে বিপুল সহানুভূতি, সহমর্মিতা ও সমবেদনা পেয়েছেন, তা খালেদা জিয়ার হৃদয় স্পর্শ করেছে। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে কোকোর প্রথম নামাজে জানাজায় অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে বিপুলসংখ্যক মানুষের ঢল নেমেছিল বলে দাবি করা হয়েছে। এ জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি খালেদা জিয়া কৃতজ্ঞ জানান। অন্যান্য দেশেও গায়েবানা জানাজা আয়োজনের জন্য আয়োজনকারীদের খালেদা জিয়া অভিনন্দন জানান। দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিএনপি, দলটির অঙ্গ ও সহযোগী-সংগঠন, ২০ দলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন এবং ব্যক্তি উদ্যোগে কোকোর বিদেহী রুহের মাগফিরাত কামনা, গায়েবানা জানাজা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজনকারীদের খালেদা জিয়া আন্তরিক মোকারকবাদ জানান। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর জানাজায় দল-মত, শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে সর্বস্তরের লাখ লাখ মানুষ শরিক হয়ে অবিস্মরণীয় ইতিহাস সৃষ্টি করায় বিএনপি চেয়ারপার্সন অভিভূত। এ জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান। জিয়া পরিবারের প্রতি গণমানুষের এমন অপরিমেয় ভালবাসার বহির্প্রকাশ বিএনপি চেয়ারপার্সনকে আরও একবার নতুন করে কৃতজ্ঞতার ঋণে আবদ্ধ করল। বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে খালেদা জিয়া গভীরভাবে অনুপ্রাণিত বোধ করেছেন। শোক কাটিয়ে উঠার শক্তি সঞ্চয়ে সর্বস্তরের দেশবাসীর এ অংশগ্রহণ তাঁকে মানসিকভাবে অনেক সাহায্য করবে। বিবৃতিতে বিভিন্ন ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের নেতৃবৃন্দের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ও কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিদের প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি। শোকবার্তা পাঠিয়ে এবং সশরীরে গুলশান কার্যালয়ে গিয়ে সহানুভূতি জানানোর জন্যও খালেদা জিয়া ধন্যবাদ জানান। বিবৃতিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-জোটের নেতাকর্মী, পেশাজীবী, নাগরিক সমাজের সদস্য, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া সংগঠক, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিত্ববর্গসহ নর-নারী, শ্রেণী-পেশা ও বয়স নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান খালেদা জিয়া। অনেকের সঙ্গে দেখা করতে না পারায় তিনি আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেন। এদিকে রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শেদী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গুলশান কার্যালয়ে গিয়ে কোকোর শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
×