স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ থানা হেফাজতে শাপলা খাতুন নামে এক আসামিকে ধর্ষণের অভিযোগে সিরাজগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের সঙ্গে আসামি পক্ষের লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। তবে পুলিশ ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৭ আগস্ট রাতে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে কাজিপুর উপজেলার আলমপুর পূর্ব পাড়ার আফতাব হোসেনের মেয়ে আছিয়া খাতুন মুক্তিকে ঘর থেকে তুলে এনে হত্যা করে মেয়েটির স্বামী আলমগীর হোসেন ও তার লোকজন। পরে নিহতের বড় ভাই আবু ইয়াহিয়া আনসারি বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামি করে কাজিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে ওই আসামির তালিকায় শাপলা খাতুনের নাম নেই। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আছিয়া খাতুন হত্যা মামলায় গত ৬ দিন আগে (২২ জানুয়ারি) কাজীপুর উপজেলার চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের মাথাইল চাপড় পূর্ব পাড়ার সোহরাব হাজীর মেয়ে শাপলা খাতুনকে (২০) আটক করে পুলিশ।
শাপলার অভিযোগ, একই দিন শাপালা তার মা ও ভাবীকে থানায় আনার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে শুধু তাকে আটক করা হয়। পরে সোমবার শাপলাকে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-১ এ হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কাজীপুর থানা পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক। কিন্তু বিচারক অসুস্থ থাকায় মঙ্গলবার সকালে পুনরায় তাকে হাজির করা হয়। রিমান্ড শুনানি চলাকালে আসামি শাপলা খাতুন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুবিনা পারভীনের আদালতে জবানবন্দী দিয়ে বলেন, তাকে কাজীপুর থানা পুলিশ থানা হেফাজতে ৬ দিন আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষনের মতো ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এটি সরেজমিন দেখার জন্য বিচারকের প্রতি শাপলা খাতুন আবেদন জানান। পরে বিচারক খাসকামড়ায় গিয়ে আসামীকে পরীক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহাকে আসামির লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি অবগত করেন।
এদিকে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় শাপলাকে নির্যাতন করা হয়েছে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তার আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বেলা ২টায় সিরাজগঞ্জ আদালত চত্বরে পুলিশের সঙ্গে আসামিপক্ষের লোকজনের ধস্তা-ধস্তি ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ সময় ৫ জনকে আটক করা হয়।
তবে কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল শাপলা খাতুনের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।