ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৭ জানুয়ারি ২০১৫

সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ উপকূলীয় ৯ জেলায় সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। জেলাগুলো হচ্ছে ভোলা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী। এ সংক্রান্ত কর্মসূচী বাস্তবায়নে সাড়ে ৩৭ কোটি মার্কিন ডলার দিচ্ছে সংস্থাটি। এ লক্ষ্যে সোমবার বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সরকারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন ও বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জোহানেস জাট। চুক্তি স্বাক্ষর শেষে ইআরডির সিনিয়র মেজবাহ উদ্দিন বলেন, গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ সফলভাবে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের একটি ক্রমবর্ধমান নেটওয়ার্ক এবং কমিউনিটিভিত্তিক আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা চালু করেছে, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জীবন ও সম্পদ রক্ষা করছে। বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি এ্যান্ড এ্যাকশন প্ল্যান (বিসিসিএসএপি) উপকূলীয় এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে বিদ্যমান আশ্রয়কেন্দ্রের মেরামত ও অতিরিক্ত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের ওপর জোর দিয়েছে। দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং ঝুঁকি কমিয়ে আনার ব্যবস্থা উন্নয়নে এই প্রকল্পটি বাংলাদেশকে সহায়তা করবে। বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জোহানেস জাট বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার চরম অবস্থা বার বার দেখা দিতে পারে। বাড়তে পারে এর তীব্রতা। এ কর্মসূচীর মাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে উপকূলের মানুষদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় এবং একটি দীর্ঘমেয়াদী দুর্যোগ প্রস্তুতি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বাংলাদেশকে সাহায্যে করা হবে। তিনি জানান, এসব শেল্টার বছরজুড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় স্থানীয় বাসিন্দারা যাতে নিরাপদ থাকতে পারে এমনভাবেই শেল্টারগুলোর নক্সা করা হয়েছে। বাতাসের উচ্চ গতি এবং জলোচ্ছ্বাসের গতিবেগ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো মানুষদের রক্ষা করবে। এগুলোতে নিরাপদ পানি সরবরাহ ও নারী-পুরুষের জন্য পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থার পাশাপাশি থাকবে গবাদিপশুর জন্য পৃথক স্থানের ব্যবস্থা। বিশ্বব্যাংক জানায়, এ কর্মসূচীর আওতায় নির্বাচিত নয়টি জেলায় ৫৫২ নতুন বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার নির্মিত হবে। সেই সঙ্গে ৪৫০ বিদ্যমান ক্ষতিগ্রস্ত অপর্যাপ্ত সুবিধা সংবলিত শেল্টার পুনর্নির্মাণ, মেরামত বা উন্নয়ন করা হবে। শেল্টারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ৫৫০ কিলোমিটার সংযোগকারী সড়ক নির্মাণ বা পুনর্নিমাণ করা হবে এবং পরিবেশ ও সামাজিক ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, পুনর্বাসন পরিকল্পনা এবং ক্ষুদ্র নৃজাতি গোষ্ঠী ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। ঋণের ওপর বিশ্বব্যাংককে প্রতিশ্রুত অর্থের ওপর বার্ষিক শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ প্রদান করতে হবে। এ ঋণের অর্থ ৬ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে পরিশোধ করতে হবে। প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালে বাস্তবায়িত হবে।
×