ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আজ স্টল বরাদ্দের লটারি

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ চূড়ান্ত

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৫ জানুয়ারি ২০১৫

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ চূড়ান্ত

মনোয়ার হোসেন ॥ আর মাত্র ছয় দিনের অপেক্ষা। আগামী পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। গত বছর বাংলা একাডেমির পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারিত বইমেলাটি এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে নতুন আঙ্গিকে। এই প্রথম মেলায় প্যাভিলিয়নের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চার দিনের আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন। শনিবার লটারির মাধ্যমে চূড়ান্ত হলো সেই প্যাভিলিয়নের বরাদ্দ। মেলায় আয়োজক বাংলা একাডেমিসহ মোট ১১টি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে প্যাভিলিয়ন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলোÑ ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল), অনুপম প্রকাশনী, আগামী প্রকাশনী, সময় প্রকাশন, মাওলা ব্রাদার্স, অন্যপ্রকাশ, অনন্যা, সাহিত্যপ্রকাশ, কাকলী প্রকাশনী, পাঠক সমাবেশ ও বাংলা একাডেমি। শনিবার বিকেলে একাডেমির সভাকক্ষে প্রকাশকদের উপস্থিতিতে প্যাভিলিয়নের লটারি অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। এ সময় প্রকাশকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক মিলন কান্তি নাথ, সময় প্রকাশনের ফরিদ আহমেদ, কাকলীর এ কে এম নাছির আহম্মেদ সেলিম, অ্যাডর্ন পাবলিকেশন্সের সৈয়দ জাকির হোসাইন, মেলা কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ প্রমুখ। মেলায় প্যাভিলিয়ন সংযোজন প্রসঙ্গে অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক মিলন কান্তি নাথ বলেন, এর মাধ্যমে গ্রন্থমেলা পাবে নতুন রূপ। সবাই চাচ্ছিল মেলা আরও দৃষ্টিনন্দন হোক। আর এই প্রথম প্যাভিলিয়নের মাধ্যমে সে বিষয়টিই ঘটছে। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা মেলায় কোনো প্রভাব ফেলবে না উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বাঙালীর মননের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা সব সময়ই রাজনৈতিক বিষয়ের উর্ধে থাকে। তাই এবারও কোন শঙ্কার কারণ দেখছি না। বইমেলা চলবে তার আপন গতিতে। ২০ ফুট বাই ২০ ফুট প্যাভিলিয়নের জন্য দশ প্রকাশককে ভ্যাটসহ ভাড়া দিতে হবে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা। প্যাভিলিয়নের চূড়ান্ত বরাদ্দ পাওয়ার পর আজ রবিবার থেকে প্রকাশকরা নির্মাণকাজ শুরু করবেন। এদিকে আজ রবিবার বেলা ৩টায় একাডেমির সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে এক, দুই ও তিন ইউনিটের স্টল বরাদ্দের লটারি। এরপরই স্টল নির্মাণের ধুম পড়ে যাবে প্রকাশকদের মধ্যে। মেলায় চার ইউনিটের স্টল বরাদ্দ পেয়েছে একটি প্রতিষ্ঠান। শনিবারই চূড়ান্তভাবে অবসর প্রকাশনীকে এ বরাদ্দ দেয়া হয়। মেলার দুই আঙ্গিনা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবার এক ইউনিটের স্টল থাকছে ১৫৫টি, দুই ইউনিটের ১১৫টি ও তিন ইউনিটের স্টল থাকবে ৫২টি। এছাড়া ৭৫টি লিটলম্যাগকে বরাবরের মতো জায়গা দেয়া হবে একাডেমির ভেতরের বহেরাতলায়। মেলায় দুই অংশ মিলিয়ে একাডেমির চারটি বিক্রয় কেন্দ্র থাকবে। এর একটি সাজানো হবে শিশুতোষ গ্রন্থ দিয়ে। সকল স্টল বরাদ্দ চূড়ান্ত না হলেও একাডেমি ও উদ্যান প্রাঙ্গণে চলছে তুমুল গতিতে মেলার প্রস্তুতি পর্ব। সেই সূত্রে বাংলা একাডেমির মেলামঞ্চে বিভিন্ন স্টল তৈরিতে একাডেমি কর্তৃপক্ষ দিন-রাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। পয়লা ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাসব্যাপী গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করবেন। তাই ৩১ জানুয়ারির বেলা ১২টার মধ্যে গ্রন্থমেলা সংশ্লিষ্ট সব ধরনের কাজ শেষ করতে হবে। সেজন্য চলছে এখন মহাকর্মযজ্ঞ। একাডেমির ভেতরে পুরাতন ভবনে চুনকাম করা হচ্ছে। নতুন করে সাজানো হচ্ছে ফুলের বাগান। এদিকে মেলার সার্বিক প্রস্তুতি জানাতে ৩১ জানুয়ারি বেলা ১১টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তেন সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে একাডেমি কর্তৃপক্ষ। ওইদিনই বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। এ তথ্য জানান একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। তিনি আরও জানান, অন্য বছরের চেয়ে এবারের মেলা অনেক দিক দিয়েই ব্যতিক্রম থাকবে। প্রতিদিনের আলোচনা সূচীতেও আনা হচ্ছে বৈচিত্র্য। একাডেমির ষাট বছর পূর্তি উপলক্ষে এবার মেলায় আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন হওয়ার কারণে প্রথম চার দিনের আলোচ্যসূচীতে থাকছে সমকালীন সাহিত্যবিষয়ক আলোচনা। দোসরা ফেব্রুয়ারি সকালের অধিবেশনে সৈয়দ শামসুল হক সাহিত্য সম্মেলনের ‘ধারণাপত্র’ উপস্থাপন করবেন। এছাড়া সৃষ্টিশীল সাহিত্যের তিনটি বিষয়ে তিন দিনব্যাপী দুটি করে অধিবেশনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রথম অধিবেশন এবং বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলবে দ্বিতীয় অধিবেশন।
×