ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল দেখছেন ফ্লেমিং

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৫ জানুয়ারি ২০১৫

নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল দেখছেন ফ্লেমিং

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেট বিশ্বে নিউজিল্যান্ড আসলেই এক ব্যতিক্রম নাম। কোন টুর্নামেন্টেই কিউইরা যেমন নিশ্চিত ফেবারিট নয়, আবার দলটিকে হিসেবের বাইরে রাখারও উপায় নেই! বিশ্বকাপ তার বড় উদাহরণ। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ শুরু হচ্ছে ক্রিকেট শ্রেষ্ঠত্বের ১১তম আয়োজন, গত দশ আসরের ছয়টিতেই সেমিফাইনালে খেলে নিউজিল্যান্ড, দুবার কোয়ার্টারে! অবিশ্বাস্য বৈকি। এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রেকর্ড চারবার শিরোপা জয় করা অস্ট্রেলিয়াও এত বেশি সেমিতে উঠতে পারেনি। এবার ঘরের মাটিতে ‘চিরায়ত সেমির’ সেই ভূত তাড়িয়ে ফাইনালে খেলতে চায় কিউরা। সাবেক নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক স্টিভেন ফ্লেমিং তো আগাম বলে দিয়েছেন, ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তার দেশ! ‘আমি দিব্যি দেখতে পাচ্ছি ২৯ মার্চ মেলবোর্নের ফাইনাল খেলছে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া! ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের নেতৃত্বাধীন দলটি আমাদের সময় তো বটেই, কিউই ইতিহাসেরই অন্যতমসেরা। চ্যাম্পিয়ন না হলেও দক্ষিণ আফ্রিকা কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। ডার্ক-হর্স হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নাম উল্লেখ করব।’ প্রেডিক্টনের এক অনুষ্ঠানে বলেন ১৯৯৪-২০০৮ পর্যন্ত ব্ল্যাক-ক্যাপস ক্রিকেটের প্রতিনিধিত্বকারী ৪১ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার। অনুষ্ঠানে সাবেক অধিনায়ক ছাড়া উপস্থিত ছিলেন নিউজিল্যান্ড প্রধানমন্ত্রী জন কেই, গ্রেট রিচার্ড হ্যাডলি ও বর্তামান সেনাপতি ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। ছিলেন আরও দুই সাবেক অধিনায়ক মার্টিন ক্রো আর জন রাইটও। তারা বিশ্বকাপে করণীয় সম্পর্কে ম্যাককুলামকে বিভিন্ন রকমের পরামর্শ দেন। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি ও আয়োজক কমিটির তত্ত্বাবধানে বিশ্বকাপের অফিসিয়াল সাইটে দেয়া বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ফ্লেমিং। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে যে কোন প্রতিপক্ষকে পর্যুদস্তু করার মতো ক্রিকেটার নিউজিল্যান্ড দলে রয়েছে বলে মনে করেন এক সময়ের জনপ্রিয় তারকা ফ্লেমিং। ‘আবেগ থেকে নয়, বাস্তবতা বিচার করেই আমি কথাগুলো বলছি, ব্যাট হাতে কেন উইলিয়ামসন, রস টেইলর, ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম, বোলিংয়ে টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, ড্যানিয়েল ভেট্টোরি, অলরাউন্ড পজিশনে কোরি এ্যান্ডারসন প্রত্যেকে ম্যাচ-উইনার। নিরপেক্ষভাবে এটা মানতে হবে। প্রতিটি দলই এখন আমাদের নিয়ে আলাদা করে ভাবছে। ক্রিকেটাররা মাঠের নৈপুণ্যে এই মর্যাদা আদায় করে নিয়েছে। এদের সঙ্গে আরও কয়েকজন অসাধারণ প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে, যাঁদের সামর্থ্য রয়েছে দেশকে প্রথমবারের মতো শিরোপা উপহার দেয়ার।’ টপঅর্ডার ব্যাটিংয়ে ম্যাককুলাম ও মার্টিন গাপটিলকে অত্যন্ত ‘ভাইটাল’ পারমফর্মার বলে মনে করেন ফ্লেমিং। হুট করে নয়, ধারাবাহিক পারফর্মেন্সের পুরস্কার হিসেবেই কিউইরা এবার দারুণ কিছু করবে, এমন বিশ্বাস ক্রাইস্টচার্চে জন্ম নেয়া সাবেক এই তারকার। ফ্লেমিং আরও বলেন, ‘আমার আত্মবিশ্বাসটা একদিনে তৈরি হয়নি। গত দুই মৌসুম ধরে ম্যাককুলাম-উইলিয়ামসন-সাউদিরা অসাধারণ ক্রিকেট খেলছে। কিছুদিন আগে আরব আমিরাতে শক্তিধর পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ ও ওয়ানডে সিরিজ জয় তারই ফল। এপর টেস্টে শ্রীঙ্কাকে হারানো, ওয়ানডেতে এগিয়ে থাকা, সব প্রমাণ করে বিশ্বের যে কোন শক্তিকে গুড়িয়ে দিতে নিউজিল্যান্ড পুরোপুরি তৈরি। প্রথম ম্যাচ থেকেই খুনে কিউই লাইন-আপ দেখতে মুখিয়ে আমি।’ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এবার বিশ্বকাপের সহআয়োজক নিউজিলান্ড। ১৯৭৫-২০১১ গত দশ বিশ্বকাপের মধ্যে ১৯৮৩, ১৯৮৭, ১৯৯৬ ও ২০০৩ ছাড়া বাকি সব আসরের সেমিতে খেলা নিউজিল্যান্ডের স্বপ্ন পূরণ হবে? উত্তর পেতে খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। ১৪ ফেব্রুয়ারি ক্রাইস্টচার্চে উদ্বোধনী ম্যাচে কিউইদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। ‘বি’ গ্রুপে তাদের সঙ্গে আছে শক্তিধর অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ আর সহযোগী সদস্য আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ড। সব বাধা অতিক্রম করে প্রথমবারের মতো দেশকে শিরোপার আনন্দে ভাসাবেন ম্যাককুলামরা, এমন প্রত্যাশায় ফ্লেমিং, ক্রো, হ্যাডলিসহ সাবেক নিউজিল্যান্ড তারকা ক্রিকেটাররা।
×