ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বোমা তৈরির ফ্যাক্টরি

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২৪ জানুয়ারি ২০১৫

বোমা তৈরির ফ্যাক্টরি

খোদ রাজধানীতে এবার সন্ধান মিলল বোমা বানানোর দুটি ফ্যাক্টরির। ফ্যাক্টরিগুলো ছাত্রদল ও শিবিরের জঙ্গীরা পরিচালনা করত। অবরোধ-হরতালকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ যখন ককটেল-পেট্রোলবোমার নাশকতায় আতঙ্কিত তখন রাজধানীতে বোমা বানানোর এই ফ্যাক্টরির খবর সচেতন মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বৃহস্পতিবার জনকণ্ঠের এক প্রতিবেদনে ‘দুই বোমা ফ্যাক্টরি’ শীর্ষক অনুসন্ধানী সংবাদে এই চাঞ্চল্যকর সংবাদটি প্রকাশিত হয়। যৌথবাহিনীর চলমান অভিযানে রাজধানীর বনানী ও লালবাগ থানার দুটি বাড়িতে এই বোমা তৈরির ফ্যাক্টরির সন্ধান পাওয়া যায়। বনানীর বোমা ফ্যাক্টরি জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের জঙ্গীদের দ্বারা পরিচালিত হতোÑ অপরদিকে লালবাগের বোমা ফ্যাক্টরিটি পরিচালিত হতো ছাত্রদলের জঙ্গীদের দ্বারা। বনানীর বোমা ফ্যাক্টরিটি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৩০টি শক্তিশালী তাজা বোমা, কয়েক শ’ বোমা তৈরির বিস্ফোরক গানপাউডারসহ নানা সরঞ্জাম। এর মধ্যে রয়েছে পেট্রোলবোমা তৈরির জন্য মজুদ রাখা ২ লিটার পেট্রোল, ১০ কেজি পাথর কুচি, এক কেজি গানপাউডার, ১২টি স্কচটেপ, ৪৮টি জর্দার কৌটা, ১২টি জিহাদী ম্যাগাজিন। অন্যদিকে লালবাগের বোমা ফ্যাক্টরি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বোমাসহ বোমা তৈরির সরঞ্জাম। বনানীর বোমা ফ্যাক্টরি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বনানী থানা ছাত্রশিবিরের সভাপতিসহ ৫ নেতাকর্মীকে। গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার বোমা প্রস্তুতকারীÑ একই সঙ্গে তারা মজুদ, সরবরাহ ও বোমা হামলায় বিশেষভাবে পারদর্শী। ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের ছাড়া প্রস্তুতকৃত এসব বোমা বিএনপির ডাকা অবরোধে রাজধানীসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হতো। গ্রেফতারকৃতদের জবানবন্দী অনুযায়ী, বোমাবাজদের নিয়মিত চাঁদা প্রদানকারী জামায়াত-শিবিরের কয়েক শ’ নেতাকর্মী ও অর্থদাতা। তালিকাভুক্তরা মাসে ২ হাজার থেকে ২৫-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক হারে চাঁদা দিয়ে থাকে। একইভাবে লালবাগের বোমা ফ্যাক্টরিটি পরিচালিত হতো ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের নিউমার্কেট থানা শাখার সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে। বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরিত হলে তার হাতের কব্জি উড়ে যায়। পরে বৃহস্পতিবার সে মারা যায়। এ সময় আরও কয়েকজন মারাত্মকভাবে আহত হয়। হরতাল-অবরোধকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এসব বোমা সরবরাহ করা হতো। বিএনপি-জামায়াত পরিকল্পিতভাবে দেশকে যে অকার্যকর রাষ্ট্র বানাতে চায় এসব সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কর্মকা- তারই প্রমাণ। বিএনপি নেত্রীর অবরোধ ঘোষণায় তার দল ও জামায়াতের জঙ্গীরা দেশব্যাপী বোমা-ককটেল-পেট্রোলবোমা ছুড়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে স্থবির করার অপচেষ্টায় মাঠে নেমেছে। দেশের অগ্রগতির চাকাকে স্তব্ধ করে দিয়ে দেশকে অন্ধকারের দিকে ধাবিত করার হীন ষড়যন্ত্রে দুষ্কৃতকারীরা মাঠে নেমেছে। দেশের মানুষ এসব নাশকতা, ষড়যন্ত্রকে রুখে দেবেÑ দেশ এগিয়ে যাবে তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে এমন প্রত্যাশাই সবার।
×