ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নোয়াখালীতে ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে, প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৬:১২, ১৭ জানুয়ারি ২০১৫

নোয়াখালীতে ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে, প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নোয়াখালী, ১৬ জানুয়ারি ॥ সোনাইমুড়িতে ছাত্রদলকর্মী মোর্শেদ আলম পারভেজকে (২৫) গুলি করে এবং সালেহ আহম্মেদ (৫২) নামে এক কুয়েত প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার রাতে সোনাপুর ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের তেমুহনী এবং আমিশাপাড়া ইউনিয়নের মানিক্যনগর গ্রামে এ দু’টি হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। পৃথক এ হত্যাকা-ের ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। নিহত মোর্শেদ আলম পারভেজ হাসানপুর গ্রামের কবিরাজ বাড়ির আলমগীর হোসেনের ছেলে এবং প্রবাসী সালেহ আহম্মেদ মানিক্যনগর গ্রামের আসলাম মৌলভী বাড়ির আবুল হোসেনের ছেলে। জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সোনাইমুড়ির পশ্চিমাঞ্চলের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও যুবলীগকর্মী জাকির মোটরসাইকেলে হাসানপুর গ্রামের তেমুহনী এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় যুবদল-ছাত্রদলের একটি গ্রুপ তার ওপর হামলা করে। জাকির দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ওই এলাকায় গুলির শব্দ শোনা যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সড়কের পাশে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মোর্শেদ আলম পারভেজের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। অপরদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর মানিক্যনগর দাখিল মাদ্রাসার সামনে দোকান থেকে কেনাকাটা করেন কুয়েতপ্রবাসী সালেহ আহম্মেদ। দোকানেই ব্যাগ রেখে তিনি বেরিয়ে যান। রাতে ব্যাগ নিতে না আসায় এবং বাড়িতে না ফেরায় অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়। কিন্তু তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকালে মানিক্যানগর দাখিল মহিলা মাদ্রাসার পাশের রুহুল আমিন বিলাতীর সুপারি বাগানে সালেহ্ আহম্মদের রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। ধারণা করা হচ্ছে তাকে হত্যার পর দুর্বৃত্তরা তাঁর লাশ সুপারি বাগানে ফেলে যায়। সোনাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং উপজেলা যুবদল সভাপতি এ্যাডভোকেট সেলিম নিহত পারভেজকে ছাত্রদল কর্মী বলে দাবি করেন। নোয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডাঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, পারভেজের কাঁধ, বুক ও পেটে গুলির চিহ্ন রয়েছে। অপরদিকে প্রবাসী সালেহ আহম্মেদের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে, তাঁর মগজ বেরিয়ে গেছে। সোনাইমুড়ি থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম দুটি হত্যাকা-ের বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, যুবলীগের জাকিরের ওপর হামলার বিষয়টি শুনেই পুলিশ পাঠান ঘটনাস্থলে। সেখানে গিয়ে পুলিশ রাস্তার পাশে পারভেজের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে। পারভেজের পিতা জানান, পারভেজ কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল না। এছাড়া প্রবাসী সালেহ আহম্মেদ এলাকায় ভদ্র মানুষ হিসাবে পরিচিত ছিল। কয়েক দিন পূর্বে তিনি কুয়েত থেকে আসেন। এ ঘটনায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
×