ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৪ জন আহত গুরুতর পাঁচ

ঢাবির জসীমউদ্্দীন ও জিয়া হলের ছাত্রদের সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১৭ জানুয়ারি ২০১৫

ঢাবির জসীমউদ্্দীন ও জিয়া হলের ছাত্রদের সংঘর্ষ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জসীমউদ্দীন হল ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল-নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিপক্ষের ছোঁড়া ইটের আঘাতে জিয়া হল ছাত্রলীগ সভাপতিসহ আহত হয়েছেন অন্তত চল্লিশ জন। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ২টা থেকে শুরু করে প্রায় সোয়া ঘণ্টা ধরে এই ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে। পরে পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টার ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে জসীমউদ্দীন হল সংলগ্ন দোকানে খেতে আসেন জিয়া হলের শিক্ষার্থী ইমরান (ইংরেজী, ৪র্থ বর্ষ)। বের হয়ে যাওয়ার পথে একটি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে জসীমউদ্দীন হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রানা হামিদের (বাংলা, মাস্টার্স) সঙ্গে ইমরানের বাগ্বিত-া হয়। এক পর্যায় জসীমদ্দীন হলের আরও কয়েকজন গিয়ে ইমরানকে মারধর করে। ইমরানের সঙ্গে থাকা তার দুই বন্ধু হলে খবর দিলে জিয়া হলের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে বের হয়ে জসীমদ্দীন হলের ওই শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। এরপর জসীমদ্দীন হলের শিক্ষার্থীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে বের হয়ে জিয়া হলের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে হলের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। এরপর দুইপক্ষ নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নিয়ে পরস্পরের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এভাবে পর্যায়ক্রমে সোয়া ঘণ্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলতে থাকে। খবর পেয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান মোল্যা ও সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ ঘটনাস্থলে আসেন। সেখানে উপস্থিত ছাত্রলীগের অন্য কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দের সহায়তা নিয়েও পরিস্থিতি শান্ত করতে ব্যর্থ হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষরা একযোগে কয়েকবার চেষ্টা করেন, কিন্তু তাঁরাও ব্যর্থ হন। এরপর শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে আসা পুলিশদের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী সংঘর্ষে আহত হয়েছে জিয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সালমান প্রধান শাওন। তার মাথায় একাধিক সেলাই লেগেছে। এছাড়া রুস্তম (দ্বিতীয় বর্ষ), অর্ণব (দ্বিতীয় বর্ষ) এবং হল শাখা ছাত্রলীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক জহির নামের তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শেষের তিনজনের অবস্থা গুরুতর। এদের মধ্যে একজনকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। জসীমউদ্দীন হলের আহতদের মধ্যে রয়েছেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জিতু (চতুর্থ বর্ষ), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক কাউসার আহমেদ (তৃতীয় বর্ষ), মাহমুদ (দ্বিতীয় বর্ষ) প্রমুখ। এর মধ্যে জিতু ও মাহমুদের আঘাত গুরুতর। ঘটনা তদন্তে হল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এম আমজাদ আলী। তিনি বলেন, এ ঘটনায় কোন মামলা হবে না। তবে হল কমিটির দেয়া তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×