ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফিফা সেরার লড়াইয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মেসিকে স্পর্শ করার প্রত্যয় রোনাল্ডোর, দুই মহাতারকা কেউ কাউকে ভোট দেননি

‘সি আর সেভেন’ হতে চান সর্বকালের সেরা

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১৪ জানুয়ারি ২০১৫

‘সি আর সেভেন’ হতে চান সর্বকালের সেরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘কখনই ভাবিনি যে, আমি তিনবার এই ট্রফি নিয়ে ঘরে ফিরতে পারব। সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হতে চাই আমি।’ কথাগুলো বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর। সোমবার রাতে জুরিখে ফিফা ব্যালন ডি’অর এ্যাওয়ার্ড জয়ের পর কথাগুলো বলেন তিনি। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আরও অনেক বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ সুপারস্টার। জুরিখের আলো ঝলমলে রাতে রোনাল্ডো বলেন, যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। এটা ছিল অসাধারণ একটা বছর। যে কাজটি এতদিন করেছি, সেটি চালিয়ে যেতে চাই। যতদিন যাবে, আরও উন্নতি করার সুযোগ থাকবে। আরও ভাল হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে চাই। গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের দশম চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপা জয়ে অনবদ্য অবদান রাখেন রোনাল্ডো। এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ১৭ গোলের রেকর্ডও গড়েন। ‘লা ডেসিমা’ জয়কে তাই সেরা মুহূর্ত জানিয়ে রোনাল্ডো বলেন, চমৎকার একটি বছর ছিল। যখন মাদ্রিদে এসেছিলাম, আমরা সবাই ডেসিমার চাপ অনুভব করেছিলাম। সম্ভবত চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতাটা ছিল গত বছরের সেরা মুহূর্ত। এটা ছিল দুর্দান্ত। অসাধারণ এই সাফল্যের কৃতিত্ব কোচ ও সতীর্থদের দিয়ে রোনাল্ডো বলেন, কার্লো আনচেলত্তির সঙ্গে কাজ করা দারুণ আনন্দের। এটা সব ভক্ত, মাদ্রিদের সব সমর্থকের জন্য। এটা পাওয়ার যোগ্য তারা। টানা দুই বার ফিফা ব্যালন ডি’অর জিতে লিওনেল মেসির সঙ্গে বর্ষসেরা পুরস্কার জয়ের ব্যবধানটা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন রোনাল্ডো। ভবিষ্যতে এই ব্যবধান ঘুচিয়ে ফেলার স্বপ্ন দেখেন রিয়াল তারকা। এ প্রসঙ্গে রোনাল্ডোর ভাষ্য, প্রত্যকটি মৌসুমই আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ। এটা (ফিফা ব্যালন ডি’অর জয়) আমাকে একই লক্ষ্য নিয়ে ২০১৫ সাল শুরু করার অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো ফিফা সেরার সংক্ষিপ্ত তিনজনের তালিকায় ঠাঁই পান রোনাল্ডো। সেবার না পারলেও ২০০৮ সালে প্রথম এই পুরস্কার জেতেন তিনি। এরপর কেবল ২০১০ সালে তিন জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন না। ২০০৯, ২০১১ ও ২০১২ সালে মেসির পেছনে থেকে দ্বিতীয় হওয়ার জ্বালায় পুড়েন। এই চার বছর টানা বর্ষসেরা হন মেসি। ২০১৩ সালে মেসিকে পেছনে ফেলে ফিফা ব্যালন ডি’অর জিতেন রোনাল্ডো। তৃতীয়বার ফিফা সেরা হওয়া রোনাল্ডো আরও কয়েকবার জুরিখের এই অনুষ্ঠানে আসার স্বপ্ন দেখেন। বলেন, আমি জানি, এই পুরস্কার জিততে কতটা কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। তাই আমি আগে যতবারই এটা নিতে আসি না কেন, এখনও আমি আবেগাল্পুত হয়ে পড়ি। আশা করি, সামনে আরও অনেক বছরই আমি এখানে আসব। বিনয়ী রোনাল্ডো ভবিষ্যতে মেসি ও নিউয়েরের সঙ্গে খেলার স্বপ্নও দেখেন। এ প্রসঙ্গে তার মতামত, ফুটবলে অতীত বলতে কিছু নেই। সবই বর্তমান। সন্দেহ নেই অতীতেও অনেক গ্রেট ফুটবলার ছিলেন। কিন্তু আমি গর্ব অনুভব করব যদি বর্তমানের দুই সেরা মেসি আর নিউয়েরের সঙ্গে একদলে খেলতে পারি। এ প্রসঙ্গে মেসি বলেন, আমি সব সময়ই বিখ্যাত ফুটবলারদের সঙ্গে খেলতে চাই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে রোনাল্ডোর সঙ্গে একসঙ্গে খেলাটা একটু কঠিনই। আমরা সম্পূর্ণ দুই মেরুর দুই দলে খেলি। তবে এটা ঠিক, যেহেতু আমি বিশ্বসেরা ফুটবলারদের সঙ্গে খেলতে ভালবাসি আর রোনাল্ডো তেমনই একজন, তাই একদলে খেলতে আমার কোন আপত্তি নেই। নিউয়ের বলেন, অতীতের অনেক গ্রেট তারকাদের আদর্শ ভেবেই আমি বেড়ে উঠেছি, ফুটবলার হয়েছি। অতীতে অবশ্যই আমার স্বপ্নের তারকা আছে, কিন্তু তাঁদের মধ্য থেকে মাত্র একজনকে বেছে নেয়াটা আমার জন্য বেশ কঠিনই। আমি চিরদিনই সফল দলে খেলতে চেয়েছি। ফুটবলার হিসেবে সাফল্য চেয়েছি। এককথায় বলা যায়, প্রশ্নটা এড়িয়ে যান বিশ্বজয়ী গোলরক্ষক। বিভিন্ন সময় দেয়া সাক্ষাতকারে মেসি ও রোনাল্ডো একে অপরের প্রশংসা করলেও অনেকেই বলে এসেছেন, তাদের সম্পর্কটা বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। ফিফা-ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে দুই তারকার ভোট দেয়ার বিষয়টিও তাই প্রমাণ করে। এবারও কেউ কাউকে ভোট দেননি সময়ের দুই সেরা ফুটবলার। সেরার প্রশ্নে বার্সিলোনা তারকা মেসির তিনজনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় নেই রোনাল্ডো। আর রিয়াল মাদ্রিদের রোনাল্ডোও তার তিনজনের তালিকায় রাখেননি মেসিকে। মেসি তার প্রথম ভোটটি দেন স্বদেশী এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াকে। দ্বিতীয় ভোট তিনি দেন বার্সিলোনা সতীর্থ আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকে। আর তৃতীয় ভোট দেন আরেক স্বদেশী জ্যাভিয়ের মাশ্চেরানোকে। রোনাল্ডো তার তিনটি ভোটই দেন রিয়াল মাদ্রিদের তিন সতীর্থ সার্জিও রামোস, গ্যারেথ বেল ও করিম বেনজেমাকে।
×