ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আবারও রেলে নাশকতা

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ১৩ জানুয়ারি ২০১৫

আবারও রেলে নাশকতা

২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধ কর্মসূচীতে নাশকতার আশঙ্কায় সড়কপথে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী কাভার্ড ভ্যান চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। তাই যাত্রী ও মালামালের জন্য ট্রেনে চাপ বেড়েছে। আর এই সুযোগটি অবরোধকারীরা নিচ্ছে নাশকতার জন্য । এমনিতেই গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে নাশকতায় এখনও ধুঁকছে রাষ্ট্রীয় অনেক প্রতিষ্ঠান। রেলওয়ে এর অন্যতম। এবারও তাদের নাশকতার কবলে পড়েছে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এই খাতটি। প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, বুধবার রাতে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে জয়পুরহাট ও মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় নাশকতা চালানো হয়। এতে ২৫ যাত্রী আহত হন। জয়পুরহাটে ৩৬ ফুট রেলপথ উপড়ে ফেলা হয় আর কুলাউড়ায় খুলে নেয়া হয় ফিশপ্লেট। শুক্রবার রাতেও কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে রেললাইনে নাশকতা চালানো হয়। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার রায় ঘোষণার পর থেকে এ যাবত নাশকতায় রেলের ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সে সময় নাশকতায় চারজনের প্রাণহানি ঘটে। আহত হন ৮৯ জন। শুধু রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়েছে তাই নয়, যাত্রীবাহী বগিতেও আগুন দেয়া হয়েছে। এ সময় রেল যোগাযোগ নির্বিঘœ ও নিশ্চিত করতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে হয় সরকারকে। রেলপথের নাশকতার ঘটনা মানুষকে শঙ্কিত করে গভীরভাবে। অথচ স্বল্প খরচে নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দ ভ্রমণের জন্য যাত্রীদের প্রথম পছন্দ রেল। আজ রেলে এই নাশকতা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ধ্বংসের জন্যই যে এই ঘৃণ্য, ধিক্কৃত তৎপরতা এতে সন্দেহ নেই। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে প্রথম দফায় ক্ষমতায় এসে রেলের নেটওয়ার্ককে নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নেয় বর্তমান সরকার। অতীতের অনেক অব্যবস্থা দূর করে রেলকে সুশৃঙ্খল ও যাত্রীবান্ধব করার ক্ষেত্রে বেশ সফলতাও আসে। কিন্তু সেই সাফল্য আজ ম্লান করে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের এমনিতেই অবকাঠামোগত দুর্বলতা বিস্তর। তারপর বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেটুকু যা অর্জিত হয়েছে তা যদি আন্দোলনের নামে ধ্বংসের টার্গেট হয় তাহলে অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়? রেলের এই অবস্থা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী। এই সেক্টরটিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে কিশেষ দৃষ্টি দেয়া উচিত। টানা অবরোধ, হরতাল, সংঘাত ও নাশকতা অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই সহিংসতা বন্ধ না করা হলে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখা যাবে না। এমন অবস্থা চললে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান। রাজনীতির লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশের অর্থনীতি রক্ষা করা সেই রাজনীতি যদি ধ্বংসাত্মক রূপ নেয় তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্থনীতি এ রাজনীতি কারও কাম্য হতে পারে না। মানুষ চায় সুস্থ ধারার রাজনীতি, জনকল্যাণের রাজনীতি।
×