ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

স্পেস আর্ট গ্রুপের চিত্র প্রদর্শনী শুরু বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১২ জানুয়ারি ২০১৫

স্পেস আর্ট গ্রুপের চিত্র প্রদর্শনী শুরু বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তাঁরা সবাই দীক্ষা নিয়েছিলেন চারুশিক্ষায়। তবে জীবন-জীবিকার তাগিদে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ রাখতে পারেননি চিত্রপটের সঙ্গে। তাই বলে থেমে থাকেনি তাঁদের শিল্পচর্চা। কাজের ফাঁকেই আপন মনন ও ভাবনায় তাড়িত হয়ে রাঙিয়েছেন ক্যানভাস। নিজ নিজ শিল্প ভাবনা প্রকাশের আকাক্সক্ষায় গড়ে তুলেছেন স্পেস আর্ট গ্রুপ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষাপ্রাপ্ত শিল্পীদের এই সংগঠনটির আয়োজনে শুরু হলো যৌথ চিত্রকলা প্রদর্শনী। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের চিত্রশালায় অনুষ্ঠিত এ প্রদর্শনীতে চট্টগ্রাম চারুকলার ১৬ শিল্পীর সঙ্গে রয়েছেন খুলনা আর্ট কলেজের এক শিল্পী। রবিবার শীতের সন্ধ্যায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন স্পেস আর্ট গ্রুপের আহ্বায়ক শিল্পী মোকাররম হোসেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, দলবেঁধে একসঙ্গে ১৭ জন শিল্পীর এ চিত্রপ্রদর্শনীতে প্রকাশিত হয়েছে শিল্পের প্রতি শিল্পীর ভালবাসা। সবাই মিলে একত্রিত হয়ে শিল্পচর্চার আনন্দটা অন্যরকম। ছাত্রজীবনে আমি নিজেও শিল্পচর্চার তাগিদে করেছিলাম। তবে এই সংঘবদ্ধ শিল্পচর্চাটাকে ধরে রাখতে হবে। সাহিত্য কিংবা শিল্প সৃজনের বিষয়টি সব সময় অন্তর থেকে আসতে হয়। আর আপন আশাকে পাওয়ার জন্যই ছবি আঁকতে হবে। ভেতরের শক্তিকে জাগাতে হবে। কাজের মাঝেও সময় করে চর্চার মাধ্যমে শাণিত রাখতে শিল্পসত্তাকে। যাপিত জীবনের নানা বিষয় উঠে এসেছে শিল্পীদের চিত্রপটে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভাবনার রঙ মেলা কল্পনার বর্ণিল বিষয়। জলরং, তেলরং, এ্যাক্রেলিকসহ নানা মাধ্যমে সৃজিত মূর্ত ও বিমূর্ত ছবিগুলো প্রদর্শনীকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। রং আর রেখার খেলায় উঠে এসেছে অসহায় নারীর অনিশ্চিত জীবনের নিষ্ঠুর বাস্তবতা। কোথাও বা দৃশ্যায়িত হয়েছে বৃষ্টিভেজা দিনের কলাপাতার আড়ালে নিজেকে নিরাপদ রাখা রমণীর রূপময় দৃশ্য কিংবা ময়ূরের বর্ণিল পেখম তোলা। একাত্তরকে নিয়ে চিত্রিত হয়েছে বিমূর্ত আঙ্গিকের ছবি। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী ১৭ শিল্পী হলেনÑ রফিক সিদ্দিকী, খুরশিদা আক্তার, মোকাররম হোসেন, আফরোজা খন্দকার, ফারজানা ইয়াসমিন, শেখর ম-ল, জয় সুন্দর, মহিউদ্দীন আহ্মেদ, শিশির মল্লিক, মাইনুল ইসলাম, আবেশ কুমার, বিজন মজুমদার, উত্তম তালুকদার, মাহ্্ফুজা বিউটি, নুরুন নাহার, মুক্তারুন নাহার নাজমা ও রোমান্টিক। সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনী চলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলায় ৩টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। বিশ্বজিৎ গোস্বামীর ‘ইন মোশন’ ॥ রবিবার থেকে গুলশানের বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জে শুরু হলো শিল্পী বিশ^জিৎ গোস্বামীর ‘ইন মোশন’ শীর্ষক চিত্রকলা প্রদর্শনী। শীতের বিকেলে যৌথভাবে প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও বরেণ্য চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পী মনিরুল ইসলাম, শিল্পী বীরেন সোম, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী ও ইতালির রাষ্ট্রদূত মারিও পালমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জের পরিচালক নওশীন খায়ের। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, শিল্প ও জীবনকে আলাদা করা যাবে না। শিল্পের মধ্য দিয়ে দেশকে, মানুষকে এবং বিশ^কে আবিষ্কার করতে হবে। ছবি দেখা, গান শোনার মধ্য দিয়ে আমরা মানুষ হয়ে উঠি। আমাদের ভাবনার উত্তরণ ঘটে। রফিকুন নবী বলেন, বিশ^জিৎ খুব পরিণত শিল্পী। তার করণশৈলী খুবই আকর্ষক। যে শিল্পভাষায় সে কথা বলছে তাও নতুন। কিন্তু বিশ^জিৎ যে এই ভাষাতেই আটকে থাকবে না, সেই ইশরাও রয়েছে এই প্রদর্শনীতে। শরীরী ভঙ্গিমার খুব প্রাঞ্জল উপস্থাপনার মধ্যেই তার দ্বান্দ্বিক উপস্থাপনাও রয়েছে। যেখানে মানুষের শরীরের আকৃতি ভেঙে যাচ্ছে। তার এই শিল্পযাত্রাকে অভিনন্দন জানাই। আপন অনুভূতি প্রকাশ করে বিশ^জিৎ গোস্বামী বললেন, আমি ফিগার নিয়ে কাজ করতে চেয়েছি। যার মধ্যে গতি থাকবে এবং ছন্দ। আমি সঙ্গীত খুব ভালবাসি। সেইজন্য আমি ক্যানভাসে ছন্দবদ্ধ, গতিময়তার আমার পছন্দ। এইসব কিছুর মধ্য দিয়ে মানুষের না দেখা পথচলাকে তুলে আনতে চেয়েছি ক্যানভাসে। প্রদর্শনীতে ২৯টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে। চলবে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ‘শতবর্ষের আলোকে জয়নুল ও প্রাসঙ্গিক শিল্পভাবনা’ ॥ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী সেমিনারের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ও জাতীয় জাদুঘর। রবিবার সকালে জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় ‘শতবর্ষের আলোকে জয়নুল ও প্রাসঙ্গিক শিল্পভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক। দুপুরে ‘জয়নুলের শিল্পশিক্ষার আদর্শ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সঞ্জয় চক্রবর্তী। বিশ শতকের আধুনিক শিল্পকলায় সমাজ বাস্তবতা : জয়নুলের আধুনিকতার পুনর্মূল্যায়ন শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন সুমন ওয়াহিদ। আজ সোমবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় দিনের সেমিনার। সকালে প্রথম অধিবেশনে ‘জয়নুল আবেদিন : কেন্দ্র শক্তির বিপরীতে প্রান্তিকতার শিল্পী’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক আবুল মনসুর।
×