ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কার হাতে উঠছে ব্যালন ডি’ অর?

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১১ জানুয়ারি ২০১৫

কার হাতে উঠছে ব্যালন ডি’ অর?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আর মাত্র একদিন। এরপরই জানা যাবে এবার ফিফা বর্ষসেরা কে হচ্ছেন। কার হাতে উঠতে যাচ্ছে মর্যাদার ব্যালন ডি’অর? তিনজনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ ফরোয়ার্ড ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি এবং বেয়ার্ন মিউনিখের জার্মান তারকা ম্যানুয়েল নিউয়ের। তবে বিশ্বের ফুটবলবোদ্ধারা মনে করছেন এবারও ব্যালন ডি’অর পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্য দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন রোনাল্ডো। এ পর্তুগীজ তারকাও অপেক্ষায় আছেন টানা দ্বিতীয় এবং ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফা বর্ষসেরা ট্রফিটি তাঁর ব্যক্তিগত জাদুঘরে সাজিয়ে রাখার জন্য। পর্তুগালের ম্যাডেইরাতে অবস্থিত তাঁর জাদুঘরে এখন পর্যন্ত ১৬০টিরও বেশি পাওয়া পুরস্কার সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৮ ও ২০১৩ সালের ফিফা বর্ষসেরা ট্রফি দুটি আলাদা দ্যুতি ছড়াচ্ছে। জার্মানদের হয়ে বিশ্বকাপ জয়ী কোচ জোয়াকিম লো অবশ্য দাবি করেন নিউয়ের ব্যালন ডি’অর জয়ের সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি। তিনি জানিয়েছেন নিউয়ের বর্ষসেরা হলেই শুধু সন্তুষ্ট হবেন। অন্য কেউ হলে চরম হতাশ হবেন বলে জানান জোয়াকিম। গত বছর ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছেন গোলরক্ষক নিউয়ের। দলও ২৪ বছর পর বিশ্বকাপ জয় করেছে। তাছাড়া গত কয়েক বছর ধরে জার্মান জায়ান্ট ক্লাব বেয়ার্নের হয়ে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ কারণে নিউয়ের এবার ব্যালন ডি’অর জিতুন এমনটাই প্রত্যাশা জোয়াকিমের। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে গোলরক্ষকের দায়িত্বটা তিনি যেভাবে পালন করেছেন সেভাবে আগে কখনই কেউ পারেনি। বিশ্বকাপে পুরো বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি সত্যিই ব্যতিক্রমধর্মী গুণের অধিকারী। নিউয়ের ছাড়া অন্য কেউ যদি এটা পেয়ে যায় তবে চরমভাবে হতাশ হব আমি।’ ১৯৬৩ সালের পর আর কোন গোলরক্ষক ফিফা বর্ষসেরা হতে পারেননি। সোভিয়েত রাশিয়ার গোলরক্ষক লেভ ইয়াশিন ডায়নামো মস্কোর হয়ে সেবার জিতেছিলেন বর্ষসেরার ট্রফি। এবার নিউয়ের জিতলে জার্মানদের জন্য সাফল্যের দুটি সোপান ছোঁয়া হবে। কারণ প্রায় নিশ্চিতভাবে বর্ষসেরা কোচ হতে যাচ্ছেন জোয়াকিম। কারণ রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয় করান কার্লো আনচেলত্তি এবং এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে লা লিগা শিরোপা জয় ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনাল খেলা দিয়েগো সিমিওনের চেয়ে এগিয়েই আছেন জোয়াকিম। তবে নিউয়েরের জন্য চ্যালেঞ্জটা একটু কঠিন। কারণ তাঁর প্রতিপক্ষ রোনাল্ডো দুইবার এবং মেসি চারবার বর্ষসেরা হয়েছেন। তবু ৫৪ বছর বয়সী জোয়াকিমের প্রত্যাশা এবার ব্যালন ডি’অরটা নিউয়েরের হাতেই উঠবে। রোনাল্ডোর জন্মের শহর পোর্ট অব ফানচাল অপেক্ষা করছে উৎসবের জন্য। এখানে রোনাল্ডোর ব্যক্তিগত জাদুঘর। রাখা আছে পর্তুগীজ এ তারকার জেতা ১৬০টিরও বেশি পুরস্কার। ২৯ বছর বয়সী এ তারকার আরেকটি মর্যাদার ব্যালন ডি’অর রাখার জন্য ইতোমধ্যেই জায়গা খালি করা হয়েছে। জুরিখে তিনিই আরেকটি সাফল্যের মুকুট পরতে যাচ্ছেন এমনটাই ধারণা রোনাল্ডোর ভাই হিউগো এ্যাভেইরোর। তিনিই জাদুঘরটা পরিচালনা করছেন। রোনাল্ডোর মা ডোলেরেস এ্যাভেইরোও আছেন সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে। রোনাল্ডোর মায়ের বিশাল ভূমিকা আছে ১৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদের মালিক রোনাল্ডোর উত্থানে। এ বিষয়ে রোনাল্ডোর প্রথম জীবনের কোচ সিএফ আন্ডোরিনহার ফ্রান্সিসকো আফোনসো বলেন, ‘রোনাল্ডো যেখানে পৌঁছেছেন তাঁর মাকে ছাড়া সেখানে যাওয়া অসম্ভব ছিল। ১১ বছর বয়সে যখন রোনাল্ডোকে স্পোর্টিং লিসবন চুক্তিবদ্ধ করেছিল সে সময় সবকিছু ফেলে তাঁর মা তাঁকে নিয়ে লিসবন চলে যান।’ এখন সেই রোনাল্ডো বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় তারকা। তাঁর জাদুঘর ইতোমধ্যেই ঘুরে গেছেন ১ লাখ ভক্ত-সমর্থক। যদিও প্রবেশমূল্য ৫ ইউরো। ২০০৫ সালে রোনাল্ডোর বাবা জোসে দিনিস এ্যাভেইরো মারা যান। তিনি পেশায় পৌরসভার একজন গার্ডেনার ছিলেন। তাঁর ছোট্ট বাড়িটির সামনেই ছিল সমুদ্রসৈকত আর সেখানেই তিনি খেলতেন চাচাত-মামাত ভাইদের সঙ্গে। আজ তাঁরাও ঈর্ষা করেন রোনাল্ডোর প্রতিভা দেখে। তবে তাঁরাও অপেক্ষায় আছেন রোনাল্ডোর আরেকটি পুরস্কার হাতে পাওয়ার জন্য।
×