ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

২৭ দিন পর ফের শ্যালা নদীতে নৌ চলাচল শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৮ জানুয়ারি ২০১৫

২৭ দিন পর ফের শ্যালা নদীতে নৌ চলাচল শুরু

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ সুন্দরবনের শ্যালা নদীর মৃগমারীতে সাড়ে তিন লাখ লিটারেরও বেশি ফার্নেস অয়েল ভর্তি ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনার ২৭ দিন পর বুধবার থেকে শ্যালা নদী দিয়ে পুনরায় নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে। তেল দূষণে সাময়িকভাবে এ নদী দিয়ে নৌযান চলাচল বন্ধ হওয়ায় মংলাবন্দর প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। মংলাবন্দর ও শ্যালা নদীর আশপাশে সৃষ্টি হয় নৌযানজটের। এ অবস্থায় ঘষিয়াখালী চ্যানেল চালু না হওয়া পর্যন্ত শ্যালা নদীর পথ চালু রাখার দাবিতে মংলাবন্দর ব্যবহারকারী ও শ্রমিকরা লাগাতার আন্দোলন শুরু করলে পুনরায় তা খুলে দেয়া হয়। শ্যালা নদীপথটি বুধবার সকালে চালুর পরেই মংলাবন্দর ও নদীর আশপাশে নৌযানের জট সৃষ্টি হয়। ফলে সকালে কেবল শ্যালা নদীর মুখে আটকেপড়া নৌযানই মংলাবন্দরে প্রবেশ করতে পারে। মংলাবন্দরের পশুর নদীতে থাকা পণ্যবাহী নৌযানগুলো দেশের কোথাও ছেড়ে যেতে পারেনি। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের মংলা উপজেলা শাখার সভাপতি আনোয়ার চৌধুরী বলেন, গত ২৭ দিনে মংলাবন্দরের পশুর নদীতে পাঁচ শ’রও বেশি এবং বাগেরহাটের শরণখোলার বলেশ্বর নদীতে শতাধিক নৌযান আটকা পড়ায় এই পথে তীব্র জটের সৃষ্টি হয়। ফলে নদীপথের দুই দিক থেকে একসঙ্গে নৌচলাচল কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এ কারণে সকালে শরণখোলার বলেশ্বর নদীতে অবস্থান নেয়া শতাধিক নৌযানের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি নৌযান মংলাবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মংলাবন্দরের পশুর নদীতে পণ্য নিয়ে অবস্থান করা নৌযানগুলো এখনও দেশের কোথাও ছেড়ে যেতে পারেনি। তবে দুই/এক দিনের মধ্যে নৌচলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এর আগে মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরুর হুমকির পর বিকেলে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে মংলাবন্দরের যোগাযোগ স্থাপনকারী ওই নৌপথটি পুনরায় চালুর ঘোষণা দেয় সরকার। গত ৯ ডিসেম্বর শ্যালা নদীতে একটি অয়েল ট্যাঙ্কার ডুবে সাড়ে তিন লাখ টন ফার্নেস অয়েল ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন দিয়ে নৌচলাচল সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরিবেশবাদীরাও বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে বাণিজ্যিক নৌচলাচল পুরোপুরি বন্ধের দাবি জানান। তবে মঙ্গলবারের আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে শ্যালা নদীপথে রাতেরবেলায় নৌযান চলাচল এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তেলবাহী ট্যাঙ্কার চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, নৌযানগুলোকে দিনেরবেলায় সুন্দরবন এলাকা (বিশেষত শ্যালা নদী) অতিক্রম করতে হবে। কুয়াশা ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দিনেরবেলায়ও এ নদীতে নৌযান চলাচল করতে পারবে না। মংলাবন্দরের হারবার মাস্টার মোঃ হাসান জানান, মংলাবন্দরের লাইটারেজ জাহাজগুলো যাতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন করতে না পারে এবং চলাচলকারী নৌযানের ফিটনেস আছে কিনা কোস্টগার্ড তা তদারকি করবে।
×