ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দরজাবিহীন গ্রাম!

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৮ জানুয়ারি ২০১৫

দরজাবিহীন গ্রাম!

ঘরে দরজা নেই। দামী জিনিসপত্র, টাকাকড়ি এ দিক সেদিক ছড়ানো। তবু চুরি হওয়ার ভয় নেই। এই চিত্র স্ক্যান্ডিভিনিয়ান দেশগুলোর হলে অস্বাভাবিক লাগতো না, কিন্তু তা যদি ভারতীয় উপমহাদেশে হয় তাহলে তা অস্বাভাবিকই লাগে। চুরি, ডাকাতি, দুর্নীতি উপমহাদেশজুড়ে যেখানে স্বাভাবিক ঘটনা সেখানে পশ্চিম ভারতের আহমেদনগর জেলার শনি শিগনাপুর গ্রামে কোন চুরি হয় না, শুনলে কানে খটকা লাগা স্বাভাবিক। কিন্তু এটাই সত্যি। গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করে তাদের দেবতা শনি তাদের ঘরদোর, জিনিসপত্র সবকিছুর নিরাপত্তা বিধান করবে, তাই নিজেরা চোরের ভয়ে ঘরে দরজা বানায় না। বেশ কয়েক প্রজন্ম ধরেই এই গ্রামের লোকেরা চুরি, ডাকাতির ভয় করে না। তারা শনির ওপর নিরাপত্তার বিষয়ে প্রবলভাবে ভরসা রাখে। এই গ্রামের অধিবাসী জয়শ্রী এই বিষয়ে বলেন, ‘‘দেবতা শনি গ্রামবাসীর স্বপ্নে এসে বলেছিল, তোমাদের বাড়িতে কোন দরজা রাখার দরকার নেই, আমিই তোমাদের নিরাপত্তা দিব। এরপর থেকেই আমাদের পূর্বপুরুষরা দরজাবিহীন ঘর তৈরি করছে। আমরাও সেই ধারা অনুসরণ করছি। ‘আজ থেকে তিনশ’ বছর আগে বন্যার সময় গ্রামবাসীরা শনির মূর্তি খুঁজে পেয়েছিল। তখন থেকেই তারা শনির আরাধনা করে আসছে। তারা বিশ্বাস করে শনি দেবতার ক্ষমতা বলেই চোরেরা এই গ্রামের আশপাশে আসতে পারে না। গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত এই বিশ্বাসের ভঙ্গ হয় নি। চোরেরা গ্রামবাসীর এই বিশ্বাসকে সমীহ করে কিংবা শনি দেবতার ক্রোধানলে পড়ার ভয়ে গ্রামের চৌহদ্দই মাড়ায় না। এমনকি এই গ্রামে প্রতিষ্ঠিত ইউসিও ব্যাংকটিও তালাবিহীন ব্যাংকের মর্যাদা লাভ করেছে। শুধু চুরিই নয়, এই গ্রামটিতে অপরাধমূলক কোন কর্মকাণ্ডও হয় না। উপমহাদেশে এমন একটি গ্রাম আছে ভাবতেই অবাক লাগে। তাই না? -গালফ নিউজ অবলম্বনে আরিফুর সবুজ
×