ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল

অফিসিয়াল পার্টনার ন্যাশনাল ব্যাংক

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৬ জানুয়ারি ২০১৫

অফিসিয়াল পার্টনার ন্যাশনাল ব্যাংক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একটি খেলার উন্নতির জন্য কি কি দরকার? একটা নয়, অনেক উপাদানই দরকার। সেগুলো কি কি? ভাল খেলোয়াড়, মাঠ, কোচ, সংগঠক, ক্রীড়া সরঞ্জাম এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। উহু, আরও একটা জিনিস যে বাদ পড়ে গেল। সবাই বলবেন, এই জিনিসটাই হচ্ছে সবচেয়ে আসল ও মহা গুরুত্বপূর্ণ তাই এর কথাই বলা উচিত ছিল সবার আগে। তা জিনিসটি কি? আর কিছুই নয়- অর্থ। কথায় আছে, ‘টাকা ছাড়া সবই ফাঁকা!’ এই টাকার জন্যই অনেক কিছুই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও করতে পারেনি বাফুফে। এখন যেমন বাধ্য হয়ে টাকা সংগ্রহের জন্য লটারির টিকেট পর্যন্ত বিক্রিতে নামতে বাধ্য হয়েছে তারা। একেই বলে ‘সাধ আছে তো সাধ্য নেই।’ আর ক’দিন পরেই বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ অনুষ্ঠিত হবে। টুর্নামেন্টের টাইটেল স্পন্সর আগেই নির্ধারিত হয়েছিল। বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল নাইন ৫ বছরের জন্য হয়েছিল এই টুর্নামেন্টের টাইটেল স্পন্সর। সোমবার টুর্নামেন্টের অফিসিয়াল পার্টনার হয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠান ছাড়াও এবারের আসর সফলভাবে আয়োজন করতে আরও চার বা পাঁচটি অফিসিয়াল পার্টনার নেবে বাফুফে। সোমবার বিকেলে বাফুফে ভবনে বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাত করেন ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট মীর মোশাররফ হোসেন এবং নাজমুল আহসান। চুক্তি স্বাক্ষর করে তারা সালাউদ্দিনের হাতে একটি মোটা অঙ্কের চেক তুলে দেন। টাকার পরিমাণটি তারা বলতে না চাইলেও একটি সূত্রে জানা গেছে, একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, এই টুর্নামেন্টের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) ন্যাশনাল ব্যাংক দিচ্ছে তিন কোটি টাকা। অনেক বছর আগেও দেশীয় ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল এই প্রতিষ্ঠানটি। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের ফুটবলের পাশে থাকার ইচ্ছা আছে বলে জানান এই দুজন। সালাউদ্দিন বলেন, ‘ন্যাশনাল ব্যাংককে ধন্যবাদ বাফুফের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আয়োজনে অবশ্যই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।’ এদিকে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) বার্ষিক অধিবেশনে যোগ দিতে মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন সালাউদ্দিন। ৮ অথবা ৯ তারিখ সেখানেই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে টুর্নামেন্টের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবেন তিনি। সেই ১৯৯৭ ও ১৯৯৯ সালে দু’বার অনুষ্ঠিত হয়েছিল ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট।’ তারপর সময়ের পরিক্রমায় চলে গেছে ১৫টি ফুটবল মৌসুম, কিন্তু নানা কারণে আর অনুষ্ঠিত হয়নি প্রবল জনপ্রিয় এই ফুটবল আসরটি। তবে সব বাধাবিপত্তি নিষ্পত্তি করে অবশেষে আবারও তৃতীয় বারের মতো আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে এই ফুটবল টুর্নামেন্টটি। এর আগে গত বছরের ৬ নবেম্বর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ উপলক্ষে বাফুফের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল এই টুর্নামেন্টের টাইটেল স্পন্সর ও মিডিয়া পার্টনার স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল নাইন। এই চুক্তির ফলে টুর্নামেন্টের আগামী পাঁচ বছরের সম্প্রচার ও বিজ্ঞাপন স্বত্ব পাবে চ্যানেল নাইন। তারা এই টুর্নামেন্টের খেলাগুলো বিশ্বের ৫০টি দেশে সরাসরি সম্প্রচার করার চেষ্টা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। চুক্তি অনুযায়ী বাফুফেকে প্রতি বছর ৬ কোটি টাকা করে দেবে চ্যানেল নাইন। যার মধ্যে এক কোটি টাকার চেক অগ্রিম দেয়া হয় চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে। প্রথম আসরটি বাংলাদেশে হলেও ভবিষ্যতে বিদেশের মাটিতেও এই আসর আয়োজন করার সম্ভাবনা আছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। ফেডারেশনের সঙ্গে বসে টুর্নামেন্টের প্রাইজমানি ও গ্যালারি বিনোদন নিয়ে পরবর্তী করণীয় পদক্ষেপ ঠিক করবে চ্যানেল নাইন। চুক্তি অনুযায়ী মনে হচ্ছে বাফুফের এতে লাভই হবে। টিকেটমাানি থেকে যে অর্থ আয় হবে, তা পুরোটাই পাবে বাফুফে। প্রচার-প্রচারণার যাবতীয় দায়িত্ব এবং লাভ-লোকসান চ্যানেল নাইনের। ৬ দলের সব খরচ বহন করবে বাফুফে। টুর্নামেন্ট থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে ফুটবলের দৈন্যদশা দূর করার স্বপ্ন দেখছে দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক এ প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি সিলেট, যশোর ও রাজশাহীতে বাংলাদেশ জাতীয় দল তিনটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলে। ম্যাচগুলো দেখতে প্রতিটি ভেন্যুতেই দর্শকদের অভাবনীয় ঢল নামে। সালাউদ্দিন আশা করছেন সিলেটে খেলা হলে দর্শকদের সেই বিপুল আগ্রহ এবারও পরিলক্ষিত হবে।
×