ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন ভোটার ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ১৭৬ জন

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ৩ জানুয়ারি ২০১৫

নতুন ভোটার ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ১৭৬ জন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ কার্যক্রমে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ভোটার তালিকায় নিবন্ধিত হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, বিদ্যমান ভোটারের ৫ ভাগ হারে নতুন ভোটারের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে ইসির নতুন ভোটার বেড়েছে ৫.০৮ ভাগ হারে। গত ১৫ মে থেকে ভোটার নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করা হয়। তিন দফায় গত ১৫ নবেম্বর পর্যন্ত ৫১ লাখ ৪১ জন নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু যাচাই-বাছাই শেষে নতুন ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ১৭৬ জন। এবারের ভোটার তালিকায় মোট তিন দফায় ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের হিসেব অনুযায়ী ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে কেবল তাদেরই ভোটার হওয়ার যোগ্য হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি মৃত ভোটারের নাম কর্তন, ভোটারের ঠিকানা স্থানান্তরসহ ভোটার তালিকার ভুল ত্রুটিও সংশোধন করা হয়েছে হালনাগাদ কার্যক্রমে। এতে দেখা গেছে তিন দফায় সারা দেশে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯০১ জনকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে মৃত্যুবরণ করার কারণে। যা মোট ভোটারের ০.৪৯ ভাগ। কার্যক্রমে ভোটার স্থানান্তর করা হয়েছে ৪ লাখ ৮ হাজার ১৮৫ জনকে। যা বিদ্যমান ভোটারের ০.৪৪ ভাগ। নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী ২০১৪ সালে নতুন করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের আগে দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ১৯ লাখ ৮০ হাজার ৫৩১ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ৪ কোটি ৬১ লাখ ৩৫ হাজার ৯৬৫ জন। আর মহিলা ভোটার ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫৬৬ জন। হালনাগাদের আগে নারী পুরুষের ভোটের অনুপাত রয়েছে ৫০.১৬:৪৯.৮৪। কমিশন জানিয়েছে, বিদ্যমান এই ভোটারের ৫ ভাগ হারে ৪৬ লাখ ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করলেও হালনাগাদে ভোটার সংখ্যা বেড়েছে ৭২ হাজার ১৭৬ জন। যা ৫.০৮ ভাগ। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ২৬ লাখ ২৫ হাজার ৮৯৬ জন। আর মহিলা ভোটার সংখ্যা রয়েছে ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৩৭০ জন। হালনাগাদে পুরুষ ও নারী ভোটারের অনুপাত ৫৬.২০:৪৩.৮০। হালনাগাদ শেষে দেশে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৬২ লাখ ৩ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ৪ কোটি ৮৪ লাখ ৬২ হাজার ৭১৭ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭৭ লাখ ৪০ হাজার ৯৮৯ জন। হালনাগাদসহ দেশে মোট ভোটারের পুরুষ ও নারী ভোটারের অনুপাত ৫০.৩৮:৪৯.৬২। কমিশন জানিয়েছে দেশের নারী-পুরুষের ব্যবধান থাকলে নতুন হালনাগাদে শেষের দিকে নারী ভোটারের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে রাজধানীতে সচেতনমূলক পদক্ষেপ নেয়ায় ভোটার হওয়া যোগ্য নারীরা ভোটার হতে আগ্রহ দেখিয়েছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে তিন দফা হালনাগাদ কার্যক্রম শেষে আগামী ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এর আগে ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য শুক্রবার সারাদেশে একযোগে জেলা, উপজেলা বা থানা নির্বাচন কার্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড, সিটি করপোরেশন, পৌরসভায় হালনাগাদ ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। যারা বাদ পড়েছেন ১৭ জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করতে হবে। আগামী ২২ জানুয়ারি আবেদনের ভিত্তিতে ভুলত্রুটি নিষ্পত্তি শেষে ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২০০৮ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছরই এ ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কথা রয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত মোট তিনবার হালনাগাদ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে ২০১০ সালে প্রথমবার ভোটার তালিকা হালনাগাদে দেশে বিদ্যমান ভোটার বৃদ্ধি পায় ৪৭ লাখ। দ্বিতীয় দফায় ২০১২ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়। ওই বছরে আরও ৭০ লাখ ভোটার বৃদ্ধি পায়। তৃতীয় দফায় নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে প্রায় ৪৭ লাখের মতো। এদিকে হালনাগাদ ভোটারের খসড়া প্রকাশ করে কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সর্বসাধারণের দেখার জন্য খসড়া তালিকা জেলা, উপজেলা, থানা নির্বাচন অফিস ও সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস, ইউনিয়ন পরিষদেও রাখা আছে। কমিশনের ওয়েবসাইটে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যে কেউ ওয়েবসাইট ভিজিট করে প্রয়োজনে সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে পারবে। এছাড়া রোহিঙ্গাসহ কোন বিদেশী নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত হয়ে থাকলে তা কর্তনের জন্য সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়াও কোন রোহিঙ্গার ভোটার হওয়ার বিষয়ে কোন তথ্য থাকলেও বা সন্দেহ হলে তা সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্যও বলা হয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা ভোটার হওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। জানা গেছে, ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করতে বিশেষ কমিটিও কাজ করছে। এ কমিটি বিভিন্ন সময় রোহিঙ্গা চিহ্নিত করে তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দিয়েছে। নতুন করে কোন রোহিঙ্গা ভোটার হয়ে থাকলেও তা অনুসন্ধান করে বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
×