ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অগ্নিকাণ্ডে চল্লিশ দোকান ছাই

প্রকাশিত: ০৩:২৬, ১ জানুয়ারি ২০১৫

অগ্নিকাণ্ডে চল্লিশ দোকান ছাই

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ জেলার চিতলমারীতে মঙ্গলবার রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪০টি দোকান ও বসতবাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে। এ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ১০ কোটি টাকা বলে প্রাথমিকভাবে দাবি করেছে ক্ষতিগ্রস্থরা। বাগেরহাট, টুঙ্গিপাড়া ও নাজিরপুরের ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারুল আলম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ৩৬ জন ব্যবসায়ীর নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। কিভাবে অগ্নিকা- ঘটেছে এবং বিস্তারিত ক্ষতির পরিমাণ জানার জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে চিতলমারী সদর বাজারের শহীদ মিনার সংলগ্ন প্রধান সড়কের পাশের একটি পেট্রোল-ডিজেলের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় আগুন দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। মুহূর্তে পেট্রোল-ডিজেলের ব্যারেল বিস্ফোরিত হয়ে আগুনের লেলিহান চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে প্রাণ ভয়ে লোকজন দিগি¦দিক ছোটাছুটি করে। বাজারের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এ সময় বন্ধ হয়ে যায়। মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নারী ও শিশুদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে ইউএনও দিদারুল আলম, ওসি দিলীপ কুমার সরকার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ রাশেদ পুকুলসহ জনপ্রতিনিধি ও আশপাশের গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসেন। এ সময় আগুন নিভাতে গিয়ে টিটু সরদার, আব্দুর রব ও সোনা মিয়া আহত হয়। এ সময় আগুনে সদর বাজারের আদি সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারী, টিপু মুন্সির মুদি দোকান, ফরহাদ হোসেনের কম্পিউটার ঘর, সাফায়েত মোলার ভ্যারাইটি স্টোর, দ্বিজেন সেলুন, গনেশ সেলুন, জুড়ান সেলুন, সুকুমার সেলুন, সুবোধ সেলুন, এরশাদুল মুন্সির চায়ের দোকান, টিপু হাওলাদারের স্টেশনারী দোকান, শেখর বৈরাগীর জুতোর দোকান, জামাল শেখের মুদি দোকান, এবাদ আলী মুন্সির সার-কীট নাশকের দোকান, জাকির হোসেনের চায়ের দোকান, মিলন কম্পিউটার, আব্বাস ফকিরের সার-কীট নাশকের দোকান, ডাঃ বাসুদেব মণ্ডলের হোমিও প্যাথিক চেম্বার, এনায়েত খানের ভ্যারাইটিস স্টোর, ফায়জুল মুন্সির আরএফএলের দোকান, কামাল কাজীর মুদি দোকান, মৃত মগবুল মুন্সির ৪টি বসতঘর, লিটন ড্রাগ হাউস, মোস্তাইন ফরাজির ফটোকপি ও স্টেশনারী, নূর ইসলাম মুন্সির মুদি দোকান ও চিতলমারী দারুল ইলুম মাদ্রাসার ৫টি ঘর ক্ষতিগ্রস্তসহ মোট প্রায় ৪০টি দোকান ও বসতবাড়ি ভস্মীভূত হয়। এতে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। খবর পেয়ে বাগেরহাট, টুঙ্গিপাড়া ও নাজিরপুরের ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ঘটনা স্থলে ছুটে এসে প্রায় দু’ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুট-পাটের ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী এবাদ আলী মুন্সি, নূর ইসলাম মুন্সি, লিটন ড্রাগ হাউসের মালিক শামীম হোসেনসহ অনেকে হতাশা ব্যক্ত করে জানান, আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় প্রাণ নিয়ে পালানোর সুযোগ ছিল না। দোকানের কোন মালপত্র সরাতে পারেননি তারা। নগত টাকাসহ সব মালামাল তাদের পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। এ ক্ষতি তাদের কোনভাবে পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয় বলে হতাশায় ভেঙে পড়েন। তাদের অনেকেই ব্যাংক-এনজিও ও ধার দেনা করে ব্যবসা করছেন বলে জানান তারা। সরকারীভাবে কোন সাহায্য-সহযোগিতা না পেলে তাদের বেঁচে থাকার কোন উপায় নেই। মাদ্রাসা গেটে ক্ষতিগ্রস্ত আরেক ব্যবসায়ী কামাল কাজী জানান, বাজারের মধ্যে যাতে আগুন ঢুকতে না পারে সে জন্য তার মুদি দোকানটি ভেঙে ফেলা হয়। এ সময় তার দোকানের কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট হয়ে যায়।
×