ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিখোঁজ বিমানের সন্ধান জাভা সাগরে ॥ ৪০ লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪

নিখোঁজ বিমানের সন্ধান জাভা সাগরে ॥ ৪০ লাশ উদ্ধার

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ অবশেষে নিখোঁজ এয়ার এশিয়া ফ্লাইট কিউজেড৮৫০১ বিমানের ধ্বংসাবশেষ মিলেছে। সেই সঙ্গে মিলেছে মৃতদেহ। জাভা সাগরের বোর্নিও উপকূলের অদূরে অন্তত ৪০টি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। আরও অনেক মৃতদেহ ভেসে থাকতে দেখা গেছে। সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারী দল। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো সব আরোহী এবং ক্রুর লাশ উদ্ধারের জন্য উদ্ধারকারী দলকে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে টেলিভিশনে সাগরে ভেসে থাকা একটি মৃতদেহ দেখে বিমানের আরোহীদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ সময় অনেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এর মধ্যে দু’জনকে স্ট্রেচারে করে বাইরে নিয়ে আসা হয়। খবর এএফপি, বিবিসি ও সিএনএন অনলাইনের। কর্মকর্তারা বলেছেন, বোর্নিওর কালিমানতান উপকূলের অদূরে জাভা সাগরে তারা বেশকিছু লাল ও সাদা রঙের বস্তু ভাসতে দেখেছেন। ইন্দোনেশীয় পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা জোকো মুরজাৎমোজো বলেছেন, এগুলো বিমানের মূল অংশের টুকরো বলে তাঁরা শতকরা ৯৫ ভাগ নিশ্চিত। তবে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্য সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা হবে। ওই একই এলাকায় আরও মৃতদেহও ভাসতে দেখা গেছে। বিমান নিখোঁজের তৃতীয় দিনে এসে মিলল ভগ্নাবশেষ এবং মৃতদেহ। নৌবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেন, উদ্ধারকারীরা মৃতদেহ উদ্ধারে এখন ব্যস্ত রয়েছেন। এখন পর্যন্ত ৪০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অন্য কর্মকর্তারা এ সংখ্যা আরও কম বলে উল্লেখ করেন। এয়ার এশিয়ার সিইও টনি ফার্নান্দেজ বলেন, এটা আমাদের জন্য খুবই কঠিন সময়। এ ঘটনায় আমি মর্মাহত এবং বিধ্বস্ত। আমরা বিমানের যাত্রীদের স্বজনের দিকে খেয়াল রাখছি এবং তাদের সেবাই এখন আমাদের কাছে প্রধান বিষয়। তিনি বলেন, স্বজনদের সেবা দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। এছাড়া বিমান সম্পর্কে যে কোন তথ্য জানানোর জন্য জরুরী কল সেন্টার খোলা হয়েছে। বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বিমানের আরোহীদের স্বজনদের উদ্দেশে বলেন, এই ‘কঠিন পরিস্থিতি’ মোকাবেলায় আরও শক্ত হতে হবে। তিনি উদ্ধারকারীদের সব আরোহী এবং ক্রুর মৃতদেহ উদ্ধারের ব্যাপারে জোর দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান। মঙ্গলবার সকালে নিখোঁজ বিমানের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায় বিমান থেকে। ইন্দোনেশিয়ার টেলিভিশনে এসব ধ্বংসাবশেষ দেখানো হয়। এ দৃশ্য দেখে আরোহীদের স্বজনরা টেলিভিশনে দেখে খুবই মর্মাহত হন। এ সময় অনেকে হাত দিয়ে তাঁদের মুখ ঢেকে রাখেন। দুইজন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। সুরাবায়ার মেয়র ত্রি রিশমাহারিনি শোকাহত স্বজনদের কাছে ছুটে যান এবং তাঁদের সান্ত¡না দেয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় এক শোকার্ত স্বজনের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে তিনি বলেন, আজ যা ঘটল তোমার ক্ষেত্রে, কাল এটা আমার ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে- এটা আমরা কেউ জানি না। আর তাই তোমাকে আরও শক্ত হতে হবে। আমাদের জানমালের মালিক হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা। উদ্ধার অভিযানের প্রধান বামবাং সোয়েলিসতিয়ো বলেন, পানির নিচে একটি ছায়ার মতো দেখা গেছে। এটা নিখোঁজ বিমানের মতো মনে হচ্ছে। যে এলাকায় এ আলামত দেখা গেছে সেখানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পাঠানো হচ্ছে। সাগরের তলদেশে বিমানের বড় কোন ধ্বংসাবশেষ আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ জাহাজ মোতায়েন করা হচ্ছে।
×