ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হরতাল ফ্লপ ॥ নোয়াখালীতে পিকেটারের হামলায় স্কুল শিক্ষিকা নিহত

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪

হরতাল ফ্লপ ॥ নোয়াখালীতে পিকেটারের হামলায় স্কুল শিক্ষিকা নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অনেক দিন পর হাঁকডাক দিয়ে হরতাল ডাকলেও তা সফল করতে বিএনপি জোটের নেতাকর্মীদের মাঠে নামতে দেখা যায়নি। যে কারণে বিএনপি জোটের ডাকা গাজীপুরের হরতালের মতো সোমবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালও ফ্লপ হয়েছে। দেশের মানুষ বিএনপি জোটের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল প্রত্যাখ্যান করে ঘর থেকে বের হয়ে আসায় যানবাহন চলাচলসহ সব কিছুই ছিল স্বাভাবিক। তবে হরতালের নামে বোমাবাজি, গাড়ি ভাংচুর ও রাস্তায় পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বেলে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়েছে হরতালকারীরা। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর প্রতিরোধের মুখে তারা ব্যর্থ হয়। কোথাও কোথাও পুলিশ ও হরতালকারীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়াসহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হরতালকারীদের হামলায় নোয়াখালীতে শামসুন্নাহার ঝর্ণা (৩৭) নামে এক স্কুলশিক্ষিকা নিহত হয়েছেন। হরতাল চলাকালে পুলিশ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি জোটের দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।প্রসঙ্গত, পূর্ব ঘোষণা অনুসারে ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারী কলেজ মাঠে জনসভা করতে চেয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। কিন্তু এর আগেই লন্ডনপ্রবাসী বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজাকার’ বলে সারাদেশে নিন্দার ঝড় তোলেন। ছাত্রলীগ ঘোষণা দেয় তারেক রহমান তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা না চাইলে খালেদা জিয়াকে গাজীপুরে জনসভা করতে দেয়া হবে না। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের জিহ্বা সামলাতে বলেন। কিন্তু খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করার বিষয়ে ক্ষমা না চেয়ে যে কোন মূল্যে গাজীপুরে জনসভা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এ পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগও একই স্থানে একই দিনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিলে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ফলে সেখানে আর জনসভা করতে পারেননি খালেদা জিয়া। গাজীপুরে খালেদা জিয়াকে জনসভা করতে না দেয়ায় ২৭ ডিসেম্বর ওই জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে বিএনপি জোট। কিন্তু দলের কোন স্তরের নেতাকর্মী মাঠে না নামায় এ হরতাল ফ্লপ হয়। এতে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা নেমে আসে। সেই হতাশাকে কাটিয়ে উঠতে একই ইস্যুতে আবারও সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি জোট। কিন্তু এ হরতাল আরও বেশি ফ্লপ হওয়ায় তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশার মাত্রা বেড়ে যায়। গাজীপুরে জনসভা করতে না দেয়ার প্রতিবাদ ও কারাবন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে হরতাল পালনের কথা বলা হলেও মূলত গত বছর এ দিনে খালেদা জিয়ার মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচীর দিনকে মাথায় রেখেই বিএনপি জোট এ হরতাল পালন করেছে বলে জানা গেছে। একইভাবে যেকোন অজুহাতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনে আসছে ৫ জানুয়ারিও তারা হরতালের ডাক দিতে পারে। হরতালে রাজধানীর চিত্র ॥ হরতাল চলাকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন নেতাকর্মী নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বসে সময় কাটালেও কেউ রাস্তায় নামার সাহস দেখাননি। তবে সকালে বিএনপি কার্যালয়ের গেটে শীতে কাবু দলের যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গায়ে চাদর মুড়িয়ে জবুথবু অবস্থায় কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়। অবশ্য পরে তিনি দিনের অধিকাংশ সময় কাটান বিএনপি কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় তাঁর নিজস্ব বিছানায় শুয়ে-বসেই। হরতাল ডেকে বিএনপি জোটের নেতাকর্মীরা মাঠে না নামলেও রাজধানীর রাজপথ ছিল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দখলে। হরতালকারীদের প্রতিহত করতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউসহ রাজধানীর বিভিন্ন অলি-গলিতে অবস্থান করে তারা। সকাল ১০টায় নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মোটরসাইকেলযোগে হরতালবিরোধী সেøাগান দিয়ে শোডাউন করেন ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী। রাজধানীর অন্যান্য এলাকায়ও দিনভর তাঁদের এভাবে শোডাউন করতে দেখা যায়। হরতাল চলাকালে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকায় রাজধানীর অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজট লক্ষ্য করা গেছে। হরতাল চলাকালে রাজধানীর পল্লবীতে পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। হরতালকারীরা অন্তত ৮টি সিএনজিসহ ১০টি যানবাহন ভাংচুর করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে টিয়ারশেল ও রাবারবুলেট নিক্ষেপ করতে হয়েছে। সংঘর্ষে এক হরতাল সমর্থক ও ৩ পুলিশসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পল্লবী থানায় আহত সিএনজিচালক বাবলু বাদী হয়ে আহত অবস্থায় গ্রেফতারকৃত এক হরতাল সর্মথকসহ অজ্ঞাত ৪০-৪৫ জন এবং পুলিশের দায়ের করা মামলায় বিএনপি নেতা ও সাবেক দুই সাবেক ওয়ার্ড কমিশনারসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। সকাল আটটার দিকে পল্লবী থানাধীন মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বর পল্লবী শপিং সেন্টারের দক্ষিণ পার্শ্বে কারিতাস সিল্কের পাশে সিএনজি স্ট্যান্ডে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, ৪০ থেকে ৫০ জন হরতাল সমর্থক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে সিএনজি স্ট্যান্ডে হামলা চালায়। স্ট্যান্ডে অন্তত ২২টি সিএনজি যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিল। হামলাকারীরা একের পর এক সিএনজি ভাংচুর করতে থাকে। এ সময় সিএনজিচালক ও সেখানে দায়িত্বরত টহল পুলিশ সম্মিলিতভাবে হামলাকারীদের প্রতিরোধের চেষ্টা করে। হামলাকারীরা তাৎক্ষণিকভাবে অন্তত ৮টি সিএনজিসহ ১০টি যানবাহন ভাংচুর করে। ভাংচুর করা যানবাহনে আগুন দেয়ারও চেষ্টা চালায়। সিএনজিচালক ও পুলিশ বাধা দিলে হরতাল সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ হামলাকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে। হামলাকারীরা বিভিন্ন গলিতে ঢুকে আবারও পুলিশের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালায়। তারা পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি সামলা দিতে পুলিশ টিয়ারশেল ও শটগান থেকে অন্তত ১০ রাউন্ড রাবারবুলেট ছুড়ে। বারাববুলেট বিদ্ধ হয়ে আহত হন স্বপন (৩২) নামে এক হরতাল সমর্থক। তাঁর মাথায় ও চোখে রাবারবুলেট বিদ্ধ হয়। তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তিনি আশঙ্কামুক্ত। তাঁর পিতার নাম আব্দুল হাওলাদার। বাড়ি বরিশাল জেলার উজিরপুর থানাধীন আটিপাড়া গ্রামে। তিনি ঢাকার রূপনগর থানাধীন ১০ নম্বর সড়কের ৯ নম্বর রিপন মোল্লার বাড়ির ভাড়াটিয়া। সংঘর্ষে স্বপন ও তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৫ জন আহত হন। ইটপাটকেলের আঘাতে আহত পুলিশ সদস্যরা হচ্ছেনÑ সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল বারী, কনস্টেবল আসলাম ও আহসান। আহত তিন পুলিশ সদস্যদের রাজারাবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে তাঁদের পূর্ণ বিশ্রামের জন্য ২ দিন বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। পল্লবী থানার পরিদর্শক বিপ্লব কিশোর শীল সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করে জনকণ্ঠকে জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত সিএনজিচালক বাবলু বাদী হয়ে আহত অবস্থায় গ্রেফতারকৃত স্বপনসহ অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৪৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা আরেকটি মামলায় বিএনপি নেতা ও সাবেক দুই ওয়ার্ড কমিশনারসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলা দুটি তদন্ত করছেন পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। সকাল সাড়ে ৮টায় পান্থপথ শমরিতা হাসপাতালের সামনে থেকে ছাত্রদল ঢাকা মহানগর উত্তরের ব্যানার নিয়ে একটি মিছিল বের করে। মিছিল চলাকালে তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। এরপর রাস্তায় পেট্রোল জালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে তারা। পরে পুলিশ এসে ধাওয়া করলে দ্রুত সটকে পড়ে। হরতালে নাশকতার আশঙ্কায় সকাল ৯টায় নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ২ জনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন মোঃ রওশন ও মোঃ মহিউদ্দীন কাউছার। এছাড়া দুপুর ১টায় রাজধানীর নয়াপল্টন ভাসানী ভবনের সামনে থেকে ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলোÑ কালাম, আমিনুল ও স্বপন। সকাল পৌনে আটটার দিকে মালিবাগে মিছিল ও পিকেটিং করেছে রমনা থানা জামায়াত। মিছিলটি মালিবাগ রেলগেট থেকে শুরু হয়ে চৌধুরীপাড়া এলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা যৌথভাবে তাদের ধাওয়া করে। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে ৫ জামায়াত কর্মীসহ ১৫ পথচারী আহত হয়। পুলিশ সেখান থেকে ৪ জনকে আটক করে। সকাল নয়টায় হরতালের সমর্থনে ধোলাইখাল এলাকায় রাস্তায় আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির। সকাল সাড়ে নয়টায় কাঠেরপুল এলাকায় হরতালের সমর্থনে আরেকটি মিছিল করে ছাত্রশিবির। সকালে উত্তরা আধুনিক মেডিক্যালের সামনে জামায়াতের নেতাকর্মীরা একটি ঝটিকা মিছিল করে। সকাল আটটায় খিলগাঁও ও গোড়ান এলাকায় মিছিল করে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখা। এ সময় তারা রাস্তায় টায়ার জ্বেলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত কাফরুল, পল্লবী ও মোহাম্মদপুর এলাকায় মিছিল করে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। দুপুর একটার দিকে হরতালের সমর্থনে সুপ্রীমকোর্টে বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপি- জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা। সুপ্রীমকোর্ট বার এ্যাসোসিয়েশন ভবনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সকাল আটটায় ছাত্রদলের সহসভাপতি মনিরুজ্জামান রেজিন ও যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সোহাগের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। এখানে ৩০ থেকে ৩৫ জন ছাত্রদলকর্মী মিছিলে অংশ নেন। এ ছাড়া ছাত্রদল রাজধানীর সোনারগাঁও রোডের বাংলাভিশন টিভির সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি কারওয়ান বাজারের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। ছাত্রদলের আরেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ আরেফিনের নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল বের হয় রাজধানীর খিলগাঁওয়ে। সেখানে ৪০ থেকে ৫০ জন নেতাকর্মী মিছিলে অংশ নেন। সকাল পৌনে আটটায় বেইলি রোডে একটি ঝটিকা মিছিল বের করে ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও তাঁর অনুসারীরা। এ সময় পুলিশের ধাওয়ায় মুহূর্তের মধ্যেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় তারা। সকাল ১০টায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, হরতালে পুলিশ সরাসরি গুলি করছে। তিনি বলেন, রাজধানীর মিরপুর এলাকায় যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল যৌথভাবে মিছিল নিয়ে বের হলে পুলিশ তাদের ওপর সরাসরি গুলি চালায়। এতে স্বপন নামে একজন আহত হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি বলেন, হরতালকে কেন্দ্র করে সরকার সারাদেশে মানবতাবিরোধী পেট্রোল বোমা হামলা করেছে। তিনি হরতাল চলাকালে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন। রাজশাহীতে পুলিশের গাড়িতে বোমা হামলা, পেট্রোল বোমা উদ্ধার, আটক ৩৬ ॥ স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী থেকে জানান, রাজশাহীতে পুলিশের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে হরতাল সমর্থকরা। হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে শহরের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা চালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রশিবির কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও নগরীতে নাশকতার চেষ্টাকালে ৭টি পেট্রোল বোমাসহ দুই হরতাল সমর্থককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি ওয়ান শুটারগান ও ৯টি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে তারা। র‌্যাব ও পুলিশ এ সময় ৩৬ জনকে আটক করেছে। সকাল সাতটার দিকে হরতালের সমর্থনে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব ও মহানগরের সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুর নেতৃত্বে কাদিরগঞ্জ মোড় থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল নিয়ে তারা নগর ভবনের সামনে গিয়ে শেষ করে। মিছিলে সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এছাড়াও হরতালের সমর্থনে কোর্ট স্টেশন এলাকায় মিছিল করে জামায়াতের কর্মীরা। তবে সেখানে পুলিশ পৌঁছার আগেই তারা পালিয়ে যায়। চট্টগ্রামে নিরুত্তাপ হরতাল, ৫ বিএনপি কর্মী আটক ॥ স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, চট্টগ্রামে নিরুত্তাপ ও ঢিলেঢালাভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। হরতাল চলাকালে নগরীর মেহেদীবাগ এলাকায় একটি মিছিলের চেষ্টা ছাড়া উল্লেখ করার মতো কোন তৎপরতা দেখা যায়নি বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের। পুলিশ মিছিল থেকে ৫ কর্মীকে আটক করে। এছাড়া নাশকতার আশঙ্কায় নগরী ও জেলায় পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি ছিল সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায়। তবে বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। খুলনায় আটক ১১ ॥ স্টাফ রিপোর্টার খুলনা অফিস থেকে জানান, রাজশাহীতে ঢিলেঢালাভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। নগরীর প্রাণকেন্দ্রের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ দেখা গেলেও অন্যান্য সকল স্থানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাজার খোলা ছিল। বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী অফিস, ব্যাংক-বীমায় স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। নগরীতে রিক্সা, অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহান চলাচল করেছে। তবে হরতাল চলাকালে বাস চলাচল করেনি। খুলনা থেকে লঞ্চ ট্রেন যথারীতি চলেছে। সকালে বিএনপি হরতালের সমর্থনে মিছিল করেছে। হরতালের নামে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে এমন অভিযোগে পুলিশ রবিবার নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে।
×