ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুত বিভাগে মৌসুমের আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের বৈঠক

সব কেন্দ্রকে ব্ল্যাকস্টার্ট পদ্ধতি স্থাপনের অনুরোধ

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪

সব কেন্দ্রকে ব্ল্যাকস্টার্ট পদ্ধতি স্থাপনের অনুরোধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের সকল বিদ্যুত কেন্দ্রকে ব্লাক স্টার্ট (বন্ধের পর স্বয়ংক্রিয় পন্থায় চালু হওয়ার প্রক্রিয়া) চালু হওয়ার পদ্ধতি স্থাপনের অনুরোধ করেছে বিদ্যুত বিভাগ। সেচ মৌসুমের প্রস্তুতির জন্য সোমবার বিদ্যুত বিভাগে এক বৈঠকে এ অনুরোধ জানানো হয়। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র বলছে বিপর্যয় বা অন্য কোন কারণে বিদ্যুত কেন্দ্র বন্ধ হলে আপনাআপনি চালু হওয়ার মতো প্রযুক্তি রয়েছে। কিন্তু দেশের মাত্র চারটি বিদ্যুত কেন্দ্রে এই ব্যবস্থা রয়েছে। দেশের অন্য বিদ্যুত কেন্দ্র এই প্রযুক্তি সংযোজনের ব্যবস্থা করার জন্য বিদ্যুত সচিব মনোয়ার ইসলাম বৈঠকে বিদ্যুত কেন্দ্রের উদ্যোক্তাদের অনুরোধ করেন। সম্প্রতি দেশেজুড়ে ব্লাকআউটের ঘটনায় বিদ্যুত বিভাগ ভবিষ্যতে একই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে নানা সংস্কারমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। ব্লাকআউটের তদন্ত রিপোর্টে প্রতিটি বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য ব্লাক স্টার্টের সুপারিশ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি বলেছে একটি বিদ্যুত কেন্দ্র বন্ধ হওয়ার পরে তা চালু করতে কিছু বিদ্যুত প্রয়োজন হয় আবার এমন প্রযুক্তি রয়েছে যেখানে বিদ্যুত কেন্দ্র নিজে নিজেই চালু হতে পারে। এবার সেচের জন্য এক হাজার ৯৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য বৈঠকে বিদ্যুত উৎপাদন এবং বিতরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এবারও সেচে রাত এগারো থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ করার নির্দেশ রয়েছে সরকারের। গ্রীষ্ম এবং সেচ একই সময়ে শুরু হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এবার সেচ ও গ্রীষ্ম সামাল দিতে সর্বোচ্চ চাহিদার সময় অন্তত আট হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত প্রয়োজন, যা গত মৌসুমে ছিল সাত হাজার ৩৫৬ মেগাওয়াট। দেশে ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে মে তিন মাস সর্বোচ্চ বিদ্যুত চাহিদা থাকে। এজন্য সকল বিদ্যুত কেন্দ্রকে সর্বোচ্চ ক্ষমতায় উৎপাদন করা হয়। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় এবার তরল জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো সর্বক্ষণিক চালানো যাবে। অন্যান্য বছরে জ্বালানি তেল কম ব্যবহার করে অর্থ সাশ্রয়ের চেষ্টা করা হয়। এবার সেই প্রয়োজন হবে না। এবার সেচের আগে ২০ হাজার ৫৫৬ নতুন বিদ্যুত সংযোগ দিতে হবে। এতে নতুন করে ৮৪ দশমিক ৩৪ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। গত মৌসুমে সেচের চাহিদা ছিল এক হাজার ৭শ’ মেগাওয়াট। এবার সেখানে নতুন চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে আরও ২৪৭ মেগাওয়াট। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, সেচের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নৌপরিবহন এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চেয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। সেচের জন্য জ্বালানি সরবরাহে দুটি মন্ত্রণালয়ই যাতে নির্ধারিত সময়ে তেল পরিবহন করার ব্যবস্থা করে থাকে। তবে সেচের জন্য নতুন বিদ্যুত গ্রাহকদের সংযোগ বিলম্বিত হবে। নতুন বিদ্যুত সংযোগের জন্য প্রায় পৌনে ১১ লাখ আবেদন জমা পড়েছে। সম্প্রতি বিদ্যুত সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেছেন নতুন বিদ্যুত সংযোগের জন্য যেসব আবেদন জমা পড়েছে তা দিতে হলে যে পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন তা আমাদের এখনও নেই। তবে পর্যায়ক্রমে সরবরাহ বৃদ্ধির সঙ্গে সকলকে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হবে। প্রতি বছর নবেম্বর থেকে সেচের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে বিদ্যুত ও জ্বালানি বিভাগ। এটা সেচের দ্বিতীয় বৈঠক যেখানে উৎপাদন এবং বিরতণ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সেচে বিদ্যুত দেয়াকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেচ শুরুর আগেই সেচের জন্য পড়ে থাকা নতুন সংযোগের আবেদনগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেয়া হয়।
×