স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের প্রথম দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে কিউরা। যদিও ৭ উইকেটে হারিয়েছে, তবে ৮০.৩ ওভারে ৪২৯ রান করে একদিনেই সফরকারী শ্রীলঙ্কার ওপর ঠিকই চাপ সৃষ্টি করেছে নিউজিল্যান্ড। মাত্র ৮৮ রানে স্বাগতিকদের শীর্ষ ৩ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠালেও সে ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি লঙ্কানরা। বলা ভাল, অতিথি বোলারদের তুলোধুনো করে একাই গতি-প্রকৃতি বদলে দিয়েছেন স্বাগতিক অধিনায়ক। ম্যাককুলামের ১৩৪ বলে ১৯৫ রানের ম্যারাথন ইনিংস দীর্ঘ ১১ বছর পর ‘বক্সিং ডে’ খেলতে নামা কিউইদেরও এনে দিয়েছে দুর্দান্ত শুরু। ৪২৯/৭Ñ টেস্টে একদিনে তোলা কিউদের এটি দলীয় চতুর্থ সর্বোচ্চ রান।
সকালে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন সফরকারী সেনাপতি এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করতে লঙ্কান বোলারদের শুরুটা ভালই হয়েছিল। ৮৮ রানেই সাজঘরে ফেরেন তিন কিউই ব্যাটসম্যান। কিন্তু সফরকারীদের সবকিছু এলোমলো হয়ে যায় অধিনায়ক ম্যাককুলাম-ঝড়ে। এমনিতে চতুর্থ উইকেট জুটিতে কেন উইলিয়ামসনকে নিয়ে লঙ্কান বোলারদের হতাশ করেন তিনি। এ জুটিতে এলো ১৩৬ বলে আসে ১২৬ রান। ধামিক্কা প্রসাদের বলে উইলিয়াসন ৫৪ রানে ফিরলে জিমি নিশামকে নিয়ে পঞ্চম উইকেট জুটিতে আরও বেশি চড়ও হন অধিনায়ক। এ জুটিতে ১১৭ বলে ১৫৩ রান। থারিন্ডু কুশলের বলে ফেরার আগে ১৯৫ রানের ইনিংসটি ১১ ছক্কা ও ১৮ চারের মার মারেন ম্যাককুলাম। ১১ ছক্কাÑ সাবেক সতীর্থ নাথান এ্যাস্টল, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেনের সঙ্গে যৌথভাবে টেস্টে ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বাধিক ছক্কার রেকর্ড। ১২ ছক্কায় এ তালিকায় সবার ওপরে পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম। অধিনায়ককে দেখেই উৎসাহিত হয়ে নিশামও খেলেন ঝড়ো ইনিংস। ম্যাথুসের বলে ফেরার আগে ৮০ বলে করেন ৮৫ রান, ১০ চার ও ৩ ছক্কা।
শ্রীলঙ্কার হয়ে অধিনায়ক ম্যাথুস সর্বোচ্চ ২টি, সুরাঙ্গা লাকমল, সামিন্দা এরাঙ্গা, ধাম্মিকা প্রসাদ ও কুশল প্রত্যেকে নেন ১টি করে উইকেট। তবে সবকিছু ছাপিয়ে স্বভূমে বক্সিং ডের গল্পটা কেবলই ম্যাককুলামের। ব্যাটকে তলোয়ার বানিয়ে লঙ্কানদের কচুকাটা করেছেন তিনি। এক নজরে তার কালকের কীর্তি বলতে গেলেÑ ৭৪ বলে সেঞ্চুরি, নিউজিল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসের দ্রুতততম। হয়ত টেস্ট ইতিহাসেরই দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরিটি করে ফেলতেন। অনেক প্রাপ্তির দিনেও মাত্র ৫ রানের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ৩৩ বছর বয়সী ডুনেডিন হিরোকে। তবে প্রথম কিউই ব্যাটসম্যান হিসেবে চলতি ২০১৪ সালে এক ক্যালেন্ডার-ইয়ারে করেছেন এক হাজার রান (১১৬৪)। এক ওভারে সর্বোচ্চ ২৬ রান তুলে নাম লিখিয়েছেন রেকর্ডের তৃতীয় স্থানে। গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজে খেলেছিলেন ২২৪ ও ৩০২ রানের দুটি অনবদ্য ইনিংস। এক মাস আগে শারজায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০২ আর ক্রাইস্টচার্চে কাল ১৯৫!
স্কোর ॥ নিউজিল্যান্ড ৪২৯/৭ (৮০.৩ ওভার; ম্যাককুলাম ১৯৫, নিশাম ৮৫, উইলিয়ামসন ৫৪, লাথাম ২৭, ওয়াটলিং ২৬, রাদারফোর্ড ১৮; ম্যাথুস ২/৩৪, প্রসাদ ১/৬২, এরাঙ্গা ১/৮২, লাকমল ১/৮৩)
** প্রথম দিন শেষে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: