ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মমতাজ লতিফ

শিশু হত্যাকারী তালেবান ও খালেদা সমাচার

প্রকাশিত: ০২:৫৫, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪

শিশু হত্যাকারী তালেবান ও খালেদা সমাচার

সাম্প্রতিককালের একটি বর্বরোচিত শিশু-গণহত্যার নিকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে থাকবে পাকিস্তানের পেশোয়ারের মাধ্যমিক স্কুলে তালেবানদের হামলাটি। মনে হয় না, এ পৈশাচিক হামলার ঘটনাটি টিভিতে দেখার সময়, সংবাদপত্রে পড়ার সময় কোন মানুষ অশ্রুসংবরণ করতে পেরেছে। এক সঙ্গে উচ্চ শিক্ষায় অগ্রসর হতে শ্রেণীকক্ষে পাঠগ্রহণরত এক শ’ত্রিশ জন শিশু-কিশোরকে যারা হত্যার পরিকল্পনা করতে পারে এবং হত্যা করতে পারে, তাদের তো এই পৃথিবীতে জীবিত থাকার কোন অধিকার নেই। স্বর্গ-নরক দূরে থাক, স্বদেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে এক মুহূর্তে যারা লাশে পরিণত করতে পারে, তাদেরকে, তাদের মতাবলম্বী, ইসলামের ধ্বংস নিশ্চিতকারী খুনীদের সম্ভব হলে এই পৃথিবী ছাড়া করা দরকার। তাদের দ্বারা কৃত মানব সভ্যতার বিরুদ্ধে একটি বিশাল পাপ সংঘটিত করে তারা তাদের উৎস দল- আলকায়েদা, তালেবান, ওহাবীবাদ এবং তাদের জঙ্গী-জিহাদী দলগুলো যেমন জামায়াতে ইসলামী, জেএমবি, হিযবুত তাহরীর, হরকাতুল জেহাদ, লস্করই তৈয়বা, সিমি, মুসলিম লীগ, আফ্রিকায় বোকো হারাম, আল শাবাব, মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমানে আইএস, আল নুসরা- এগুলোর মাধ্যমে শিক্ষিত, অশিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের ধ্বংসের লক্ষ্যে চৌদ্দ শ’ বছর পূর্বের প্রাচীন উপজাতিতে উপজাতিতে অনাবশ্যক, অযৌক্তিক, অমানবিক লড়াই, হত্যা, হানাহানির এক চরম বিশৃঙ্খল, অরাজক পরিস্থিতিতে নিপতিত করার কাজ করছে! স্মর্তব্য, এ যুগের এই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারকারী উচ্চশিক্ষিত তরুণ-তরুণী যাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম বৈষম্যহীন সমাজতান্ত্রিক সমাজ গঠনের বৈপ্লবিক আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মিছিল, সভা, সমাবেশ করার পাশাপাশি সমাজতন্ত্রের নীতি, আদর্শ বোঝার পাঠ, আলোচনা, বড়দের বিশ্লেষণ শোনা এবং বন্যা দুর্যোগে দরিদ্রদের সাহায্যে অর্থ ও অন্যান্য সেবা সংগ্রহ ও বিতরণে অংশগ্রহণ করে নিজেদের ধন্য মনে করত! আশ্চর্য এই যে, ঐ যুগের স্বাধীনতা-পূর্ব সময়ের ছাত্র রাজনীতিতে ঐ নেতা, কর্মীদের মধ্যে ছিল প্রায় সবাই বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের শিক্ষার উজ্জ্বল নক্ষত্র! নির্মমভাবে উপলব্ধি করি, স্বাধীনতার পর ’৭৫-এর নির্মম বঙ্গবন্ধু ও চার নেতা হত্যার পর যুদ্ধাপরাধী-মিত্র জিয়াউর রহমান-মোশতাক-ফারুক-রশীদ ক্ষমতা দখল করার পর এই সুস্থ ছাত্ররাজনীতিও বড় দলের রাজনীতির মতোই সুস্থ মানবিক রাজনীতির বিপরীত মুখে যাত্রা করল! জিয়া, এরশাদ, খালেদা, তারেকের দীর্ঘকালব্যাপী ওহাবী-জিহাদী উগ্রপন্থী, ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধী, বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির ও নতুন যুগের উপযোগী জনমানুষকে ক্যামোফ্লেজ করার লক্ষ্যে গঠিত দল বিএনপি একযোগে প্রথমেই যে মানবিকতাবিরোধী পদক্ষেপটা গ্রহণ করেছিল তা হচ্ছে, জনমানুষ, বিশেষ করে, তরুণদের মন থেকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, স্বজাতির গৌরবের বিষয়গুলো মুছে দেয়া! অতঃপর আদর্শহীন শূন্য মস্তিষ্কের প্রজন্মের জন্মদান! তারপর, আদর্শহীন, বিশ্বাস গৌরব বোধহীন মস্তিষ্কে মৌলবাদের জঙ্গী জিহাদী-উগ্রবাদ রোপণ! এ কারণেই ’৭৫-এর পর কমপক্ষে তিনটি দশকে এই আদর্শহীন তিন প্রজন্ম বেড়ে উঠেছে যাদেরকে শিকড়হীন, পলায়নপর, স্বার্থমুখী বলেই জনগণ দেখেছে! আজকে, উচ্চ শিক্ষিত তরুণ-তরুণী নিজেরা উক্ত সব জঙ্গী জিহাদী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে! তথ্যপ্রযুক্তিতে উচ্চ জ্ঞান নিয়ে তারা জঙ্গী মৌলবাদী রাজনীতির আসল লক্ষ্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন না করে কতগুলো মূর্খ, কুচক্রী, মানবিক রাজনীতি ধ্বংসের কার্যক্রম পরিচালনাকারী মোল্লাদের ‘দাস’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে! ঘটাচ্ছে পাশবিক, পৈশাচিক বর্বর খুন হত্যাকাণ্ড! এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে এই যে, বর্তমান যুগের একদল তরুণ-তরুণী একদিকে উচ্চ যান্ত্রিক জ্ঞান অর্জন করে মানবতাবিধ্বংসী পুরাতন অবাস্তব শরিয়া রাষ্ট্রের কিছুই না বুঝে কুচক্রী ধর্ম ব্যবসায়ী মোল্লাদের নির্বোধ ‘দাসে’ পরিণত হয়ে নতুন নতুন মারণাস্ত্র উদ্ভাবন করছে! এমনকি গণতন্ত্রের শেষ বাতিঘর শেখ হাসিনাকে হত্যা করার লক্ষ্যে ড্রোন পর্যন্ত তৈরি করছে! এর চাইতে আফসোসের আর কি থাকতে পারে আমাদের জন্য, যারা একটি মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন, একটি বিজয়ের স্বপ্ন দেখে ছাত্ররাজনীতি করেছি! এই ওহাবীবাদী উগ্র-জঙ্গীবাদী পাকিস্তানী তালেবান দল আজ মানবতার, মানবসভ্যতার শ্রেষ্ঠ মূল্যবোধ, ইসলামের পয়গম্বর মোহাম্মদের প্রিয় শিশুদের হত্যা করেছে শিক্ষারত অবস্থায়! অথচ নবীর একটি শ্রেষ্ঠ উপদেশ ছিল- ‘শিক্ষার জন্য প্রয়োজনে চীন দেশে যাও।’ শিক্ষা মানুষের জন্য কত প্রয়োজনীয়, কিন্তু সে যুগে কত দুর্লভ ছিল, তা তাঁর এ উক্তিতে প্রকাশ পেয়েছে। পাকিস্তান-আফগানিস্তানে লাদেন কর্তৃক জন্ম দেয়া ওহাবী-সুন্নিদের দ্বারা গঠিত আলকায়েদা-তালেবান দলের সদস্যরা ছিল প্রায় নিরক্ষর, অর্ধশিক্ষিত এবং কিছু মাদ্রাসা শিক্ষার শিক্ষার্থী যারা স্বাভাবিকভাবেই নিজস্ব যুক্তিবোধহীনতার কারণে নির্বোধের মতো মোল্লাদের নির্দেশকে ধর্মীয় নির্দেশ হিসেবে মান্য করছে যা দুই দশক আগেও শিক্ষিত তরুণ-তরুণীর কাছে ছিল অকল্পীয়! আজ এ মর্মান্তিক ঘটনার পর কয়েকটি দাবি খুব স্বাভাবিকভাবে উঠেছে। পাকিস্তানে এই শিশু-গণহত্যার প্রধান দায় নিতে হবে পাকিস্তানের ওহাবীবাদী সুন্নি আলকায়েদা-তালেবান নেতাদের, এ বলাবাহুল্য। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তান-আফগানিস্তান-ভারত মিলে আন্তঃত্রিদেশীয় জঙ্গী মৌলবাদী দমনে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি টাস্কফোর্স গঠন, অনেক দেরিতে হলেও একান্ত জরুরী যেটি নামসর্বস্ব না হয়ে দ্রুততার সঙ্গে জঙ্গী দমনে ও উৎপাটনে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করবে। তৃতীয়ত, ভারতকে পাকিস্তানের সহযোগিতার অপেক্ষা না করে নিজস্ব উদ্যোগে, যেমন শেখ হাসিনা স্বউদ্যোগে জঙ্গী নির্মূলে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তেমনই নিজ দেশের জঙ্গী উত্থানের একটি উৎস- কাশ্মীরের জনগণের সঙ্গে গণশুনানির মাধ্যমে সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগ বর্তমান পরিস্থিতি আরও হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই গ্রহণ করতে হবে। শেখ হাসিনা যেমন পার্বত্য চট্টগ্রামকে শান্ত করার প্রথম উদ্যোগ হিসেবে পার্বত্যনেতা সন্তু লারমার সঙ্গে একটি ঐকমত্যে পৌঁছার পর শান্তিচুক্তি করেছেন, তেমনি, ভারতের পক্ষে নিজ দেশের স্বার্থে, নিজ জাতির শান্তিপূর্ণ জীবনের স্বার্থে কাশ্মীরি নেতা, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে, এমনকি জনগণের সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে হবে যার কোন বিকল্প নেই। পাকিস্তানের নিজস্ব সমস্যা রয়েছে, রয়েছে নানা বাধা বিঘেœর উৎস, রয়েছে বিশাল ক্ষমতাধারী সেনাবাহিনী- কাশ্মীর ইস্যুকে নিয়ে খেলার রয়েছে নানা পক্ষ। সুতরাং ওদের জন্য অপেক্ষা না করে ভারতে অবস্থিত কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারত সরকার ও কাশ্মীরের জনগণই প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত- এতে সন্দেহ নেই। ভারত সরকার নিশ্চয় উপলব্ধি করে ভারতে শান্তিবিঘœকারী একটি প্রধান ইস্যু কাশ্মীর, যেটি সমাধান করবে ভারত ও কাশ্মীরবাসী। এরপর রয়েছে লস্করই তৈয়বা, সিমি, মাওবাদী ইত্যাদি জঙ্গীবাদী দল। এসব দলকে, তাদের দলীয় নেতাদের রাষ্ট্র বিরোধিতার দণ্ড নাগরিকত্ব বাতিল, পাসপোর্ট জব্দ, রাজনীতি চর্চা নিষিদ্ধকরণ, ভোটার তালিকা থেকে নাম কর্তন করে ভোটাধিকার বাতিলসহ জেল, জরিমানা, ব্যক্তির ও দলের সম্পত্তি বাজেয়াফত এবং সর্বোচ্চ ফাঁসির দ- দিয়ে নির্মূলের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াইরত দলগুলোর নেতাদের উপযুক্ত সুযোগ সুবিধা প্রদান, প্রয়োজনে ক্ষমা, প্রয়োজনে দ- প্রদান করে এদের দুর্বল করতে হবে। দোষী নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের কঠোর শাস্তি দিয়ে আক্রান্ত উপজাতিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে। যখন কঠোরতার প্রয়োজন তখন কঠোর হতে হবে। চতুর্থত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, এটি ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিকভাবেই নির্দেশিত। তাছাড়া একই ধরনের ওহাবী মৌলবাদী আলকায়েদা, তালেবানের হত্যা-গণহত্যা, বোমা বিস্ফোরণে নিরীহ মানুষ- নারী, পুরুষ, শিশু হত্যা, নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য হত্যার মাধ্যমে দুটো দেশই প্রতিদিন জনসম্পদ হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে! দুর্ভাগ্য এ দু’দেশের উভয় দেশের শান্তির শত্রু- এটা ওবামা লিখল কেন? ঐ মৌলবাদী আলকায়েদা ও তালেবান যাদেরকে সমাজতান্ত্রিক আফগান সরকার ও সোভিয়েত সৈন্য বিতাড়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বুশ সরকার ব্যবহার করা শুরু করেছিল! আজ তারা ফ্রাঙ্কেনস্টাইনে পরিণত হয়ে স্বদেশের, স্বজাতির মূল্যবান জনসম্পদকে ধ্বংসে গণহত্যার পাপ করে চলেছে! বর্তমানে তাদের রক্ত পিপাসার শিকার সোভিয়েত বাহিনী, আফগান সমাজতান্ত্রিক সরকার এবং যেসব নেতা নেই। কিন্তু দানবের রক্ত পিপাসা তো একবার শুরু হলে সহজে বন্ধ হয় না! সুতরাং তারা আজ নিজ জাতির নারী, পুরুষ, শিশুর রক্তে এ রক্ত পিপাসা মেটাচ্ছে! খুব দ্রুত এই দানবের অগ্রযাত্রার পথ বন্ধ করতে এই আক্রান্ত দুই দেশকে, এদের সেনাবাহিনী, সরকার এবং সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং দানব দমনে সম্ভব সব রকম পন্থা ও কৌশল ব্যবহার করতে হবে। একই সঙ্গে আক্রান্ত জাতিকে ইসলাম ধর্মকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ব্যবহার করে স্বজাতি হত্যার অপরাধ ও মানবতাবিরোধী এসব কাজ- এর বিরুদ্ধে মিডিয়ায়, সমাবেশে, মসজিদের খুতবায়, স্কুলের পাঠ্যবিষয়ের মাধ্যমে প্রবল প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে নারী-শিশুবিরোধী নির্যাতন, ধর্ষণ, অনার কিলিং ও অন্যান্য কুসংস্কারবিরোধী প্রচারণাও চালাতে হবে। এক কথায়, প্রধানত তরুণ-তরুণীদের আধুনিক চিন্তা-চেতনা ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। নিজের দেশের ঐতিহাসিক গৌরবের ও ভুল কর্মের বিষয়ে তাদের মনে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আশা করি, পাকিস্তানের স্কুলের ১৩২ শিশু-কিশোরের বর্বর হত্যাকা-কে পাকিস্তান সরকার ‘গণহত্যা’ হিসেবে গণ্য করে দ্রুত ঐ সব মানুষ হত্যায় যুক্ত নির্দেশদাতা নেতাদের বিচার করে সর্বোচ্চ দ- দিয়ে বিশ্বের জনমানুষকে ও পাকিস্তানের নিহত শিশুদের মা-বাবা-ভাইবোনদের একটু সন্তুষ্টি দেবে। বাংলাদেশে অনেক বিরোধীস্রোতের মধ্যেও গণজাগরণ মঞ্চের আধুনিক তরুণ-তরুণী আমাদেরকে সুরক্ষা দিয়েছে যারা দেশে দেশে আধুনিক মনস্ক অসাম্প্রদায়িক গণজাগরণের জন্ম দিয়েছে। এবার বাংলাদেশের জঙ্গী, ড্রোন তৈরিকারী ও আনসারুল্লাহ বাংলাটিম ও খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক অবস্থানের সমাচারে ফিরে আসি। খালেদা জিয়ার জনসভায় সম্প্রতি দেয়া একটি বক্তব্য শুনে বরাবরের মতো শঙ্কিত বোধ করছিলাম। খালেদার বক্তব্য, ‘শেখ হাসিনাকে আমাদের হত্যার দরকার নেই, আল্লাহর গজবেই তিনি শেষ হবেন’, বলার পর কি ঘটনা ঘটবেÑ এ ভাবনা অনেকের মনে উদিত হয়েছিল! সত্যি সত্যি, প্রত্যেকবারের মতোই শনিবার দেয়া ঐ বক্তব্যের পর পরই মঙ্গলবার রাতে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের দুই সদস্য ড্রোন বানানোর সরঞ্জামসহ গ্রেফতার হলো, যাদের লক্ষ্য ছিল বিস্ফোরকভর্তি ড্রোন দিয়ে শেখ হাসিনাকে বঙ্গবভবনে, খুব সম্ভব রাতে, হামলা চালিয়ে হত্যা করা! তাহলে, এটি সন্দেহ করা অসম্ভব নয় যে, ঐ হত্যার পরিকল্পনার কথা খালেদা জানলেও জানতে পারেন! নতুবা অন্য কোন জনসভায় তিনি কখনও হাসিনা হত্যা সম্পর্কে কিছু বলেননি! যদিও এ লক্ষ্যে ষড়যন্ত্র হয়েছে অনেক। লক্ষণীয়, তার পর পরই বুধবার, যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ড্যান মজেনা খালেদার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলে দেখা যায় এক অদৃষ্টপূর্ব বেশে খালেদা জিয়াকে! তিনি বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার অনুরোধ জানাবেন, তা ছিল সবার জানা। কিন্তু সে অনুরোধ জানালেন তিনি আকস্মিকভাবে ঘোমটার বাহুল্য ত্যাগ করে জর্জেটের বদলে জামদানি শাড়ি পরে অভাবনীয় এক ইউটার্ন গ্রহণ করে! ঘটনাটি জনমনে এক বিশাল প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে! কোন কিছু না ভেবে এ নেত্রীর পোশাকের ক্ষেত্রে হঠাৎ ইউটার্ন নেয়ার কথা নয়! সামনের দিনে সম্ভবত এর অর্থ উদ্ঘাটন হবে। সে পর্যন্ত অপেক্ষায় রইল জনগণ। লেখক : শিক্ষাবিদ
×