ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ প্রধানমন্ত্রী গাজীপুর যাচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪

আজ প্রধানমন্ত্রী গাজীপুর যাচ্ছেন

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাজীপুর, ২২ ডিসেম্বর ॥ তিন দিনের ব্যবধানে গাজীপুরে আসছেন দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের দুই শীর্ষ নেত্রী। দুই নেত্রীর এই আগমনকে সফল করতে এরই মধ্যে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ও গণসংযোগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তারেক জিয়ার কটূক্তির প্রতিবাদে ইতোমধ্যে গাজীপুরে খালেদা জিয়ার আগমন ও জনসভা প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে গাজীপুর জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ। অপর দিকে খালেদা জিয়ার জনসভায় বাধা দেয়া হলে ওই দিনই সরকার পতনের চূড়ান্ত কর্মসূচী ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা ২০ দলীয় জোট। ফলে এ নিয়ে দু’পক্ষে চলছে টান টান উত্তেজনা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কারা সপ্তাহ উদ্বোধন করতে মঙ্গলবার গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কারা ক্যাম্পাসে সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী কারা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন। এ উদ্বোধন অনুষ্ঠানকালে তিনি কারারক্ষীদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। এ সময় তিনি কারারক্ষীদের দরবারেও অংশ নেবেন এবং বক্তব্য রাখবেন। কারা সপ্তাহ উপলক্ষে সাতদিনব্যাপী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতারও উদ্বোধন করা হবে। এ উপলক্ষে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারকে নানা সাজসজ্জায় বর্ণিলভাবে সাজানো হয়েছে। গাজীপুরে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এ বি এম নাসির উদ্দিন নাসির জানান, কারাগার একটি সংরক্ষিত সরকারী স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরকারী কাজে আসছেন। এরপরও প্রধানমন্ত্রী যেহেতু আওয়ামী লীগেরও সভানেত্রী তাই দলীয়ভাবে প্রস্তুতি তো আছেই। নেত্রীর অনুষ্ঠান সফল করতে বাইরে থেকে যেটুকু করার দরকার দল তা করছে। অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনের তিন দিন পর আগামী ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) গাজীপুর মহানগরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারী কলেজ মাঠে ২০ দলীয় জোটের জনসভার নির্ধারিত তারিখ রয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এবং সব দলের অংশগ্রহণে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির চলমান আন্দোলনে জনসমর্থন আদায়ে দেশব্যাপী গণসংযোগের অংশ হিসেবে গাজীপুরে এ জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। এ জনসভাকে সফল করতে ইতোমধ্যে জেলার উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যায়ে ব্যাপক গণসংযোগ ও সভা সমাবেশ করছে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা। এসভাকে ঘিরে গাজীপুরের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতেও চলছে প্রস্তুতি ও গণসংযোগ। তবে ইতোমধ্যে গাজীপুর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুরে খালেদা জিয়ার আগমন ও জনসভা প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে গাজীপুর জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়া কটূক্তির জন্য ক্ষমা না চাইলে কিংবা দল থেকে তাকে বহিষ্কার না করলে গাজীপুরে খালেদা জিয়ার ওই জনসভা প্রতিহতের ঘোষণা দেয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ ওই দিন একই মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন ও আল্টিমেটাম ঘোষণা করেছে রবিবারের ওই সংবাদ সম্মেলনে। ছাত্রলীগের এ ঘোষণার পর জেলা ২০ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ জেলা বিএনপির এক নেতার বাসায় বৈঠকে বসেন। এ সময় তারা খালেদা জিয়ার জনসভায় বাধা দেয়া হলে ওই দিনই সরকার পতনের চূড়ান্ত কর্মসূচী ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেন। ফলে গাজীপুরে খালেদা জিয়ার জনসভাকে ঘিরে দু’পক্ষের কঠোর অবস্থানের কারণে জেলার সর্বত্র উভয়পক্ষে চলছে টান টান উত্তেজনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে বলে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান।
×