ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বব্যাংক, ইউনেস্কোসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা ও গবেষণা সংস্থার অভিন্ন মত

শিক্ষায় অগ্রগতিতে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪

শিক্ষায় অগ্রগতিতে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল

বিভাষ বাড়ৈ ॥ সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা আর শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা অর্জনের ক্ষেত্রে রীতিমতো ঘটে গেছে বিপ্লব যা বিশ্বের বহু দেশের কাছে অনুকরণীয়। সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, বিদ্যালয়ে ভর্তির হার শতভাগ, ছাত্রছাত্রীর সমতা, নারী শিক্ষায় অগ্রগতি, ঝরে পড়ার হার দ্রুত কমে যাওয়াসহ শিক্ষার অধিকাংশ ক্ষেত্রই রোল মডেল এখন বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে গেলেও শিক্ষার অগ্রগতিতে গত এক দশকই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। সরকারী ভাষ্য নয় বরং বিশ্বব্যাংক, ইউনেস্কো, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামসহ আন্তর্জাতিক দাতা ও গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশের শিক্ষার অগ্রগতিকে অন্যদের জন্য উদাহরণ অভিহিত করে বলছে, শিক্ষায় প্রতিটি পর্যায়ে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। একদশকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও টেকসই। শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা অর্জনে বাংলাদেশ ছুঁয়েছে নতুন মাইলফলক। বিশ্বব্যাংক তার সর্বশেষ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শিক্ষার অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে তুলে ধরেছে সরকারের উদ্যোগ ও অর্জনের নানা দিক। বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই তুমুল গতিতে দুস্তর পথ অতিক্রম করেছে এবং শিক্ষায় অভিগম্যতা ও সমতা অর্জনে অনেকদূর এগিয়েছে। মানব উন্নয়নে বিনিয়োগ হওয়ায় বাংলাদেশ টেকসই ফল বয়ে নিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে লাখ লাখ শিশুর বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা, নারী সাক্ষরতা বৃদ্ধি, মাতৃ মৃত্যুর হার কমিয়ে আনাতে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার নিশ্চিত করার সরকারী উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক বলেছে, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষায় ভাল করার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পাওয়ায় শিশুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গুণগত মান নিয়ে প্রবেশ করছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ আধুনিকীকরণ ও যথাসময়ে পাঠ্যবই বিতরণ শিক্ষার অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। দেশব্যাপী প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার ও এনজিও একত্রে কাজ করছে মন্তব্য করে বিশ্বব্যাংক বরেছে, দেশের জাতীয় শিক্ষা কর্মসূচী উন্নয়নে, গুণগত মান রক্ষায় নির্দেশিকা প্রণয়নে সরকারের কাঠামোর ভেতর থেকেই এনজিওগুলো সরকারকে সাহায্য করে যাচ্ছে। সকলের জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণের এই প্রয়াসগুলোর সস্তোষ প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ অতিরিক্ত ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। এ বিনিয়োগ তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচী (পিইডিপি-৩) বাস্তবায়নে নতুন মাত্রা যোগ করবে। যার অংশীদার হিসেবে কাজ করছে এডিবি, ডিএফআইডিসহ নয়টি প্রতিষ্ঠান। নতুন বিনিয়োগ বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সাফল্যকে আরও বেগবান করবে যা হবে একটি মাইলফলক। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রমত্ত গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র নদ বিধৌত ১৫৭ মিলিয়ন জনসংখ্যার এই দেশ ঘনত্বের দিক থেকে সবচেয়ে জনবহুল। যেখানে ৪৭ মিলিয়ন লোক চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করে এবং যারা বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার। এর পরেও দেশটি দারিদ্র্যের হার এক-তৃতীয়াংশে কমানো, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাক্ষেত্রে লৈঙ্গিক সমতা বিধান এবং মাতৃমৃত্যু ৪০ শতাংশ কমানোর মতো উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। এদিকে বিশ্বব্যাংক তার অপর এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দেশের শিক্ষার বহুমুখী অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরে বলেছে, প্রাথমিক স্কুলে মোট ভর্তির হারে শতভাগসহ অন্য শিক্ষা খাতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীতে ৬২ শতাংশ, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে ৪৪ এবং কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশে। সংস্থাটি বলেছে শিক্ষা খাতে ব্যাপক শিক্ষার প্রায় সব ক্ষেত্রেই অভিগম্যতা ও সমতা অর্জনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে উপবৃত্তি। সংস্থাটির মতে, উপবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে অধিক সংখ্যায় নিম্ন আয়ভুক্ত পরিবারের শিশু ও মেয়েদের ভর্তির ব্যবস্থা করে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষায় প্রায় সর্বজনীন অভিগম্যতা অর্জন করে ফেলেছে। সম্প্রতি রাজধানীতে তাদের এ প্রতিবেদন সম্পর্কে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইউহানেস জাট বলেছেন, শ্রমশক্তিতে তারুণ্যের প্রাধান্য বাড়ায় আগামী ১০ বছর বাড়তি সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। এ সুবিধা পেতে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে নতুন কৌশল নিতে হবে। শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে কর্মমুখী উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এ প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক আরও বলছে, আগামী ১০ বছরে কর্মক্ষম নাগরিকের সংখ্যা বাড়বে এবং অন্যের ওপর নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা কমবে। এ প্রেক্ষাপটে মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় ও দ্রুত বেড়ে ওঠা প্রবৃদ্ধিসহ সামনে এগুনোর এক দারুণ সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ অবিচলভাবে শিক্ষায় অভিগম্যতা বাড়িয়েছে, যার ফলে প্রাথমিক স্কুলে মোট ভর্তির হার ৯১ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০০ শতাংশের উন্নিত হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তির হার ৫২ থেকে ৬২ শতাংশ হয়েছে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে ভর্তির হার ৩৩ থেকে ৪৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির হার ৭ থেকে ১০ শতাংশ হয়েছে। সংস্থাটির মতে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় বাংলাদেশ নারী-পুরুষ সমতাও অর্জন করেছে। এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি মেয়ে মাধ্যমিক স্কুলে পড়াশোনা করতে পারে। মাধ্যমিক পর্যায়ে এখন ছেলের চেয়ে মেয়ের সংখ্যা বেশি। মেয়েদের ক্ষেত্রে নেট ভর্তির হার ৪৪ থেকে বেড়ে ৫৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আর ছেলেদের ক্ষেত্রে এ হার ৩২ থেকে ৪৫ শতাংশ হয়েছে। আগের চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী এখন স্কুলে টিকে থাকছে। গত ৩০ বছরে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করা মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। শিক্ষার্থীরা গড়ে যে কয়টি শ্রেণী অতিক্রম করতে পারে তার সংখ্যা বেড়েছে। এমনকি দরিদ্রদের ৫৭ শতাংশ ও সাধারণ পরিবারের শিশুদের ৮৩ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে। বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়নে দেখা যায়, প্রতি ১০ জন প্রাথমিক শিক্ষার্থীর মধ্যে মোটামুটি সাত থেকে আটজন পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত যেতে পারে। এর মধ্যে মাত্র তিন থেকে চারজন কোন শ্রেণীতে পুনরাবৃত্তি না করে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর গ-ি পেরিয়ে যেতে পারে। তবে শিক্ষায় কম বাজেট বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, জাতীয় বাজেটের ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ ধারাবাহিকভাবে শিক্ষা খাতে ব্যয় করা হয়। যা পার্শ্ববর্তী উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমপর্যায়ের দেশগুলো গড়ে জাতীয় বাজেটের ১৮ দশমিক ৭০ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ করছে। তবে বরাদ্দ দেয়া অর্থের ব্যবহারের অদক্ষতার কারণে পুনরাবৃত্তি ও ঝরে পড়ার উঁচু হার বজায় রয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিশ্বব্যাংক মনে করছে, স্কুলের বাইরে থাকা শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে বস্তিবাসী শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা। দারিদ্র্যের কারণে এখনও ৫০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে থেকে গেছে। এদের একটি বড় অংশ শহরের বস্তিতে অথবা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বাস করে। যেসব শিশুর পরিবার সদ্য বস্তিতে উঠেছে তাদের মধ্যে ঝরে পড়ার ঝুঁকি আরও বেশি। বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের আরও বেশি সময় স্কুলে ধরে রাখার ওপর জোর দিতে হবে। লাগসই প্রণোদনা সৃষ্টি করতে ও যোগাতে পারলে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপনে উদ্বুদ্ধ করবে। এদিকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা গ্রহণে বাংলাদেশের নারীরা এখন অন্যদের জন্য উদাহরণ। মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রীদের শিক্ষা গ্রহণে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন সবার ওপরে। কেবল তাই নয়, বিশ্বের মোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ যেখানে ৪৯ শতাংশ সেখানে বাংলদেশে দেশের মোট শিক্ষার্থীর ৫০ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ৫২ শতাংশই ছাত্রী। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সর্বশেষ শিক্ষা পরিসংখ্যান রিপোর্টে দেশের শিক্ষার উন্নয়নের এই চিত্র উঠে এসেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা থেকে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ক্রমেই কমছে। প্রাথমিকেও হার কমছে। ২০০৫ সালে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার যেখানে ছিল ৮০ শতাংশেরও বেশি, সেখানে এই মুহূর্তে ঝরে পড়ার হার কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩ দশমিক ২৮ শতাংশে। দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর শিক্ষা গ্রহণ এবং শিক্ষার ইতিবাচক পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরে ব্যানবেইস সাবেক পরিচালক আহসান আবদুল্লাহ বলছিলেন, দেশে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক লাখ ১৪ হাজার ১১৪টি। যদিও এ ছাড়া সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকার কিছু কওমী মাদ্রাসা দেশে প্রতিষ্ঠিত আছে। সারাদেশের এক লাখ ১৪ হাজার ১১৪ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছে তিন কোটি ছয় লাখ ৩৭ হাজার ৪৯১ শিক্ষার্থী। জানা গেছে, মাধ্যমিক স্তরে বিশ্বের মোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ যেখানে ৪৯ শতাংশ সেখানে বাংলাদেশে দেশের মোট শিক্ষার্থীর ৫০ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ৫২ শতাংশই ছাত্রী। মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রীদের অংশগ্রহণে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পর অবস্থান ভুটানের। এখানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী হচ্ছে ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া মালদ্বীপ ও ইরান ৪৭, ভারত ৪৫, নেপাল ৪৩ এবং আফগানিস্তানে ছাত্রীর অংশগ্রহণ ৩১ শতাংশ। বাংলাদেশের নারী শিক্ষাসহ সার্বিক শিক্ষার অগ্রগতির চিত্র পাওয়া যায় বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের লিঙ্গ বৈষম্য সূচকের দিকে তাকালেও। অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারীর ক্ষমতায়নÑএই মাপকাঠির বিচারে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ‘লিঙ্গ বৈষম্য সূচকে’ ধারাবাহিক অগ্রগতি ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। বিশ্বের ১৪২টি দেশে নারীর পরিস্থিতি নিয়ে করা এ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এবার ৬৮তম, যেখানে গত বছর ১৩৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ছিল ৭৫ নম্বরে। এ সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আর পাকিস্তান রয়েছে শেষের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে। জেনেভাভিত্তিক বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম ইতোধ্যেই ‘বিশ্ব লিঙ্গ বৈষম্য প্রতিবেদন ২০১৪’ প্রকাশ করেছে। সূচকে বাংলাদেশের অবস্থনের উন্নতির পাশাপাশি স্কোরেও অগ্রগতি হয়েছে। গত বছর যেখানে বাংলাদেশের স্কোর ছিল শূন্য দশমিক ৬৮৫, এবার তা বেড়ে শূন্য দশমিক ৬৯৭ হয়েছে। শিক্ষায় নারীর অংশগহণে অগ্রগতি লক্ষ্যণীয়। গত বছর ১৩৬টি দেশের মধ্যে ১১৫তম অবস্থানে থাকলেও এবার তা এগিয়ে ১১১তম অবস্থানে এসেছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রথম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি মালালা ইউসুফ জাইয়ের নোবেল শান্তি পুরস্কার সম্পর্কে রিপোর্ট করতে গিয়ে বাংলাদেশের নারী শিক্ষার অগ্রগতির কথা তুলে ধরেছে বিবিসি। বিবিসি বলছে, মালালা ইউসুফ জাই নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পর পাকিস্তানে নারী শিক্ষার পথে ধর্মীয় রক্ষণশীলতা এবং উগ্রবাদী ইসলামিক মতাদর্শের ভূমিকা আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে। কিন্তু প্রায় একই ধরনের আর্থ-সামাজিক অবস্থান থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ এক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছে। বাংলাদেশের সাফল্য আন্তর্জাতিকভাবে সবার প্রশংসাও অর্জন করেছে।
×