ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শাপলা চত্বরে গণহত্যায় (!) নিহত মাদ্রাসাছাত্র জীবিত উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪

শাপলা চত্বরে গণহত্যায় (!) নিহত মাদ্রাসাছাত্র জীবিত উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ঢাকার মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে কথিত গণহত্যায় নিহত এক মাদ্রাসা ছাত্রকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি মাজার থেকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ। আল ফারুক নামের এই মাদ্রাসাছাত্র কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার নবাবপুর শিংগাডা এলাকার সোলায়মান বিন মোবারকের পুত্র। সে ছিল ঢাকার বাড্ডা এলাকায় অবস্থিত একটি মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণীর ছাত্র। চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গত বুধবার বিকেলে তাকে নগরীর চকবাজার এলাকার মিসকিন শাহ মাজার থেকে উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, মাদ্রাসার ছাত্র ফারুক দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকায় নিহত হয়েছে ভেবে গায়েবি জানাজা, কুলখানিসহ সকল ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ফেলেছিল তার পরিবার। গত ৫ মে তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজনও ছিল পরিবারটির। উদ্ধারের পর ফারুককে তার মামার হেফাজতে দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। নিখোঁজ ফারুককে ফিরে পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে পরিবারটি। নগর গোয়েন্দা পুুিলশের এসআই সন্তোষ চাকমা জানান, শাপলা চত্বরের ঘটনার পর চট্টগ্রামে এসে বিভিন্ন মাজারে আত্মগোপন করে থাকছিল পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র আল ফারুক (১৫)। মাসখানেক আগে সে অজ্ঞাত এক মোবাইল ফোন থেকে তার মাকে জানায় বেঁচে থাকার কথা। এ ব্যাপারে তার মা গত ১০ ডিসেম্বর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর শুরু হয় পুলিশের অনুসন্ধান। অবশেষে বুধবার বিকেলে তাকে পাওয়া যায় মিসকিন শাহ মাজারে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার মতিঝিলে অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলামীর সমাবেশে মাদ্রাসার অন্যান্য ছাত্রের সঙ্গে যোগ দেয় আল ফারুকও। সেদিন ঢাকার বায়তুল মোকারম, পুরানা পল্টন, মতিঝিল এলাকায় দিনভর ব্যাপক সহিংসতা ও তা-ব চলে। রাতের বেলায় হেফাজত কর্মীদের সরাতে অপারেশন চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। পুলিশ, র‌্যাবসহ সমন্বিত বাহিনীর অভিযানে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় হেফাজতের সমাবেশ। এতে যে যেদিকে পারে পালিয়ে যায়। মাদ্রাসার ছাত্র ফারুক সে রাত থেকেই নিখোঁজ থাকে। বাড়ি না ফেরায় মৃত ভেবে পরিবারটি গায়েবানা জানাজা এবং কুলখানি করে ফেলে। গত ৫ মে প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিলও হয়েছে। কিন্তু প্রায় আঠারো মাস পর জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেল আল ফারুককে। প্রসঙ্গত, হেফাজতের এ মহাসমাবেশে গণহত্যা চলেছে বলে বিএনপি-জামায়াতসহ প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছে। সমাবেশে পুলিশী এ্যাকশনে অন্তত আড়াই হাজার লোক নিহত হয় বলে দাবি ঐ দলগুলোর। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোন তালিকা উপস্থাপন করতে পারেনি বিএনপি-জামায়াত এমনকি কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামীও। বরং কথিত নিহত অনেকেই ফিরে আসে জীবিত অবস্থায়।
×