ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

তারেককে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪

তারেককে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ লন্ডনে এক আলোচনাসভায় ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজাকার বলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে লিগ্যাল নোটিস দিয়েছেন এক আইনজীবী। বুধবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এবং আপীল বিভাগের আইনজীবী মোঃ মোমতাজ উদ্দিন আহমেত মেহেদী এই নোটিস পাঠান। তারেক রহমানের মা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং বিএনপি কার্যালয়ের ঠিকানায় নোটিসটি পাঠানো হয়েছে। নোটিসে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রত্যাহার করে সাত দিনের মধ্যে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে। তা করা না করা হলে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। নোটিসে বলা হয়Ñ বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার পরও আপনার মধ্যে রাজনৈতিক পরিপক্বতা ও ইতিহাসের জ্ঞান নেই। বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার লন্ডনে বিএনপির এক আলোচনা সভায় তারেক দাবি করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি ৭ মার্চ সেনাবাহিনীর বাঙালী অফিসারদের নিয়ে যুদ্ধ শুরু করতেন তাহলে যে ‘সামান্য সংখ্যক’ পাকিস্তানী সৈন্য তখন ছিল, তাদের সহজেই পরাজিত করা যেত, প্রাণহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি ‘অনেক কমানো’ যেত। এ সব কিছু জানার পর এ জন্য আমরা এককভাবে কাকে দায়ী করতে পারি? শেখ মুজিবকে। আমরা তাঁকে যেভাবে রাজাকার বলেছি, আমরা তথ্যপ্রমাণ সত্য দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে তাঁকে বলেছি- রাজাকার। আমরা সত্য ঘটনাবলীর ভিত্তিতে বলেছি সে ছিল পাকবন্ধু। ওই বক্তব্যের মাধ্যমে ইতিহাস বিকৃতি করে তারেক রহমান ‘গর্হিত কাজ’ করেছেন বলে নোটিসে উল্লেখ করা হয়। প্রসঙ্গত, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান গত ছয় বছরের বেশি সময় ধরে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। সম্প্রতি লন্ডনে কয়েকটি দলীয় সভায় অংশ নিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসেন তিনি। গত ২৬ মার্চ লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে তারেক দাবি করেন, জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। এর দুই সপ্তাহের মাথায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘ব্যর্থ’ রাজনীতিক হিসেবে আখ্যায়িত করে নিজের বাবা সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকে সফল বলেও দাবি করেন তিনি। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে ‘জয় বাংলার’ পর ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছিলেন বলেও দাবি করেন তারেক। তারেক রহমানের এ সব বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের পাশাপাশি নানা মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কেউ কেউ তারেকের ‘মস্তিষ্ক বিকৃতির’ শঙ্কার কথাও বলেছেন। তাঁর এ সব বক্তব্যের জন্য মানহানির অভিযোগে বাংলাদেশের আদালতে কয়েকটি মামলাও হয়েছে। এর মধ্যে একটিতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে গত ১০ ডিসেম্বর। সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমান গ্রেফতার হন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় এক ডজন দুর্নীতির মামলা হয় ওই সময়। সুপ্রীমকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে পরের বছর সেপ্টেম্বর মাসে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যান। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তখন থেকে সেখানেই রয়েছেন তিনি।
×