ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রলীগকে থামাবে কে?

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪

ছাত্রলীগকে থামাবে কে?

ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ সংঘাত এখন যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে এর শেষ কোথায়? আত্মঘাতী এই ধ্বংসের কবল থেকে ছাত্রলীগকে বাঁচাবে কে? সংগঠনটির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে জরুরী হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এদের এই কার্যকলাপ অবিলম্বে ঠেকানো দরকার। তা না হলে গৌরবময় স্বাধীনতা সংগ্রামে ছাত্র সমাজকে নেতৃত্ব দানকারী সংগঠন ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুণœ হবে। এই ছাত্র সংগঠনটির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব যে এখন কোন্ পর্যায়ে পৌঁছেছে, রবিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত ঘটনাটিই তার প্রমাণ। ওইদিন সকাল দশটায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা একসঙ্গে শ্রদ্ধা জানালেন একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের। এর ঘণ্টাখানেক পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ্্ আমানত হলের গেটে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত। একপক্ষের গুলিতে নিহত হয় অন্যপক্ষের কর্মী তাপস। নিহত তাপস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। কিছুদিন ধরে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে দেশের অনেক শিক্ষাঙ্গনে লেখাপড়ার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগ নামধারী সংঘাত সৃষ্টিকারী এই তরুণদের বেশিরভাগই সংগঠনটির প্রকৃত কর্মী নয়। এরা মূলত সুবিধাবাদী অনুপ্রবেশকারী। কিছুদিন পূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুতেই যেন এদের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ছাত্রলীগ নামধারী এই বহিরাগতদের জন্য ক্ষতি হচ্ছে ছাত্রলীগের মূল কর্মীদের। অপরদিকে লাভবান হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোটের অনুসারী ছাত্র সংগঠন। বলা হচ্ছে, টেন্ডার ও নানা ধরনের বাণিজ্যের ভাগ নিয়েই ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব জোরদার হচ্ছে। তাই এসব কর্মকান্ড থেকে ছাত্রলীগকে মুক্ত রাখার উদ্যোগ এখনই নিতে হবে। তা না হলে বিপথগামী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা আরও অধিকমাত্রায় সংগঠনটিতে প্রাধান্য পাবে। ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসমুক্ত করার কাজে স্ব-স্ব এলাকার আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃত্বকে উদ্যোগী হতে হবে। ব্যবস্থা নিতে আর দেরি করা উচিত নয়। তাপসের সন্দেহভাজন হত্যাকারীদের অবিলম্বে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক।
×