ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সুন্দরবন বিপর্যয় ॥ তেল সরানোর বিকল্প জীবিকায় নেমেছে বনজীবীরা

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪

সুন্দরবন বিপর্যয় ॥ তেল সরানোর বিকল্প জীবিকায় নেমেছে বনজীবীরা

বাবুল সরদার, বাগেরহাট থেকে ॥ “চরের খাল গ্রামের বাসিন্দা জেলে মুজিবুর রহমান (৪০) বলেন, ‘সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা এবং সাদা মাছ শিকার করে আমার সংসার চলত। গত মঙ্গলবার তেল ভাসার পর এ নদীতে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বন বাঁচাতে এবং জীবন বাঁচাতে এখন তেল তুলছি।” জয়মনি এলাকার মৎস্যজীবী আবুল সেখ, নাজমুল হোসেন জানান, ১৮/২০ বছর ধরে শ্যালা নদী আশপাশে তাঁরা মাছ ও কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ট্যাংকার দুর্ঘটনার পর তাঁরা আর নদীতে মাছ পাচ্ছেন না। তবে মাছ মরে ভেসে উঠতেও দেখেননি। তাদের ধারণা, মাছ অন্য জায়গায় সরে গেছে। এ গ্রামের কালাম সরদার (৩৮) বলেন, ‘নেটজাল পেতে আমি বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা সংগ্রহ করি। তেল জালে আটকে গেলে আমার ক্ষতি হবে। জাল কিনতে আমার প্রায় পাঁচ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তাই আমরা নদীতে মাছ ধরা বন্ধ রেখে তেলা তুলছি। প্রায় একই কথা জানান, অরবিন্দ রায়, গণেশ ম-ল, কালাম, সাহেবালীরা। এদের সকলের বাড়ি পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জসংলগ্ন চিলা ইউনিয়নের চিলা, জয়মনি, জয়মনিরঘোল, চরেরখাল, বাঁশতলা, বৈদ্ধমারী এবং কাটাখালী গ্রামে। বনসংলগ্ন এই গ্রামগুলোর অধিকাংশই বাপ-দাদার আমল থেকে বনের ওপর নির্ভরশীল। এরা বনজীবী। তারা নদী-খালে মাছ না পেয়ে এখন বিকল্প জীবিকা হিসেবে মাছের বদলে তেল (ভেসে যাওয়া ফার্নেস অয়েল) অহরণ করছেন। সোমবার থেকে তেল আহরণে আরও গতি পেয়েছে। সুন্দরবনের নদী-খাল ও বনের গাছের গোড়া থেকে ফার্নেস অয়েল দ্রুত অপসারণে স্প্রে ও শ্রমিকদের গ্লোভস ব্যবহার করা হচ্ছে। এদিন নতুন নতুন এলাকা থেকে তেল অপসারণে আরও বেশি শ্রমিক নেয়া হয়েছে বলে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ডিএফও আমির হোসাইন চৌধুরী জানান। তিনি বলেন, তেল লেগে থাকা গাছের গোড়ায় স্প্রে করে তেল অপসারণ করা হচ্ছে। আরও নতুন এলাকা ও খালে এ অপারেশন শুরু করা হয়েছে। এ সপ্তাহের মধ্যে এখানে বন ও খালে থাকা অধিকাংশ তেল সংগ্রহ করা সম্ভব হবে বলে তিনি দাবি করেন। সোমবার সন্ধ্যায় পদ্মা অয়েল কোম্পানির ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম বাবুল জানান, এদিন পর্যন্ত মোট ৪৮ হাজার ৪শ’ লিটার তেল ক্রয় করা হয়েছে। নদীতীরের উদ্ভিদ মরছে ॥ শ্যালা নদীর মৃগমারী, বাদামতলা, আন্ধারমানিক এলাকার চরের পাশে ঘাসজাতীয় উদ্ভিদগুলো তেলের প্রতিক্রিয়ায় মরতে শুরু করেছে। নদীতীরের শ্বাসমূল-ঠেসমূলে দাঁড়িয়ে থাকা সুন্দরবনের ছোট-বড় গাছগুলোর একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত তেলের আবরণে পুড়ে কালো হয়ে যাওয়ায় নির্জীব হতে শুরু করেছে, পাতাও ঝরে পড়ছে। এ বিষয়ে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘শ্যালা নদীর দক্ষিণ পাশের গাছপালার বেশির ভাগই মারা যাবে।’ এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘তেলের প্রতিক্রিয়ায় ওই ছোট গাছপালার পাতা আর সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাবার তৈরি করতে পারবে না। ফলে ধীরে ধীরে গাছগুলো মারা যাবে। আর ঘাসগুলো তো তেলের আস্তরণে একেবারে কালো হয়ে গেছে, সেগুলোর আর বাঁচার উপায় নেই।’ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার দত্ত বলেন, ‘ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। ঘাস-লতা-গুল্ম, ছোট গাছ, ছোট মাছ- এগুলো ইতোমধ্যে মারা গেছে। যেগুলোর এই বৈরী পরিবেশের সঙ্গে টিকে থাকার শক্তি আছে, কেবল তারাই টিকে থাকবে। নদীতীরের ছোট গাছপালাও মারা যাবে। ডলফিন দেখা যাচ্ছে ॥ ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডাব্লিউসিএস) আবাসিক প্রতিনিধি এবং সুন্দরবনের ডলফিন সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রধান গবেষক রুবাইয়াত মনসুর। গত মঙ্গলবার চাঁদপাই রেঞ্জের মৃগমারীতে তেলবাহী ট্যাংকার ডুবে যাওয়ার পর থেকেই সরেজমিনে সেখানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন তিনি। তিনি জানান, অভয়াশ্রমের কাছে গতকালও দুটি ইরাবতী ডলফিন দেখা গেছে। সেগুলোর গায়ে কোনো তেলের ছোপ দেখা যায়নি, আচরণও ছিল স্বাভাবিক। দুপুরে পশুর ও শ্যালা নদীতে অন্তত ছয়টি গাঙ্গেয় ডলফিনের দেখা মিলেছে। এগুলোর আচরণও স্বাভাবিক ছিল। বন সংরক্ষক (প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী) তপন কুমার দে বনকর্মীদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, চাঁদপাই রেঞ্জের অভয়াশ্রমের ডলফিনগুলো সুস্থ রয়েছে। সেখানে ডলফিনের আহার মাছেরও আনাগোনা রয়েছে।’ তিনি দাবি করেন, গত ছয় দিনে জোয়ার-ভাটায় তেলের দূষণ অনেকটাই কমতে শুরু করেছে। ভাসমান তেল সমুদ্রমুখী হতে থাকায় বনের ঝুঁকি হ্রাস পেয়েছে। এ ছাড়া নদী ও খালপাড়ের গাছগাছালিতে লেপ্টে থাকা তেলও বার বার জোয়ার-ভাটায় ধুয়ে যাচ্ছে। যদিও দুর্ঘটনার কারণে কোনমতেই বনের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব অস্বীকার করা যায় না বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে জয়মনি এলাকার হামিদুল শেখ জানান, ‘কাঁকড়া মরছে। কাঁকড়া সাধারণত নদীর চরে গর্ত করে বাসা বাঁধে। তেলের আস্তরণের কারণে অনেক কাঁকড়া গর্তে আটকা পড়েছে। আবার যে কাঁকড়া মাটিতে উঠতে পেরেছে তার গায়েও তেল লেগেছে। সেগুলো মরে যাচ্ছে। গবেষণার পরেও ঠিকমতো কাজ হলো না ॥ ২০০২ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক- এডিবির ঋণের টাকায় শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবনে তেল ছড়ানোর ঘটনায় কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে এবং এর সম্ভাব্য ক্ষতি ও করণীয় নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়। জাপানী দুটি ও বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এ গবেষণা পরিচালনা করে। ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, তেলের প্রতিক্রিয়ায় এক থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পাখি, কচ্ছপ, মাছ ও অমেরুদ-ী প্রাণী মারা যাবে। ছোট বাদাগাছ মারা যেতে পারে এবং মাঝারি ও বড় বাদাগাছের পাতা ঝরে পড়তে পারে ৩০ দিনের মধ্যে। আর ৩০ দিন থেকে এক বছরের মধ্যে বড় আকারের বাদাগাছ মারা যেতে পারে। ওই প্রতিবেদনে তেল অপসারণে করণীয় নিয়েও সুপারিশ করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, তেল যাতে ছড়াতে না পরে সে ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এ জন্য বুমিং (প্রতিবন্ধক দিয়ে আটকে ফেলা) সবচেয়ে কার্যকর। এতে বাঁশ, কাঠের গুঁড়ি, পলিব্যাগ, কাঁচা পাট, পুরনো কাপড় ও খড়কুটো ব্যবহারের কথা বরা হয়েছে। ওই সুপারিশেই তেল বিনষ্টকারী রাসায়নিক ব্যবহারের আগে বাদাবনের ওপর এর প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করে দেখার কথা বলা হয়। মৃত ডনফিন খুঁজছে বনবিভাগ ॥ গত দু’দিন ধরে সুন্দরবন বিভাগ পইপই করে মৃত ডনফিন খুঁজছে। সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলের ট্যাংকার ডোবার পর মরা যে ডলফিনের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে সেটি খুঁজতে নদীতে চেষ্টা চালাচ্ছে বন বিভাগ। বিদেশঢ পর্যটকদের একটি লঞ্চ থেকে দুর্ঘটনার তিন দিন পর গত শুক্রবার মৃত ডলফিনের ছবি তোলা হয়। লঞ্চটি যে পর্যটন সংস্থার সেই বেঙ্গল ট্যুরসের কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন বলেন, শুক্রবার বিদেশী পর্যটকদের নিয়ে যাওয়ার সময় শ্যালা নদীর তাম্বুলবুনিয়া এলাকায় তারা একটি মৃত ডলফিন ভাসতে দেখেন। পর্যটকদের দেখাতে স্পিডবোটে করে মৃত ডলফিনটিকে লঞ্চের কাছে নিয়ে আসেন তারা। ছবি তোলার পর আবার সেটিকে ভাসিয়ে দেয়া হয়। তবে মাসুদ হোসেন জানান, কেন এই ডলফিনটি মারা গেছে তা তাঁরা বুঝতে পারেননি। সেটির গায়ে তেলের কোন আস্তরণ তারা দেখতে পাননি। ডলফিনটি ছিল বিরল প্রজাতির ইরাবতী ডলফিন। সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমির হোসাইন চৌধুরী জানান, তাম্বুলবুনিয়ার কাছাকাছি দুটি বন অফিসের রক্ষীরা গত দু’দিন ধরে খুঁজেও কোন ডলফিনের মৃতদেহ পাননি। এটি পাওয়া গেলে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনের চেষ্টা করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। খুলনা বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ॥ সুন্দরবনে নদী-খালের তেল অপসারণ ভালভাবে মনিটরিং করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদকে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে তেল অপসারণের যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে তা খুবই কার্যকর পদ্ধতি।’ এটি সফল হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবন এলাকায় যে তেল ছড়িয়ে পড়েছে তা স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে সরানো হচ্ছে। মানুষ উৎসাহ নিয়ে তেল সংগ্রহ করছে।’ তেল সরানোতে কোন ক্ষতি যেন না হয় সেটিও খেয়াল রাখতে বলেছেন তিনি। ওই এলাকায় যেসব উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া হয়েছে এবং সেগুলো যথাযথভাবে কার্যকর করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। শ্যালা নদীতে নৌচলাচল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মংলা বন্দরে আসার জন্য ঘাসিয়া নামের যে খাল ছিল, সেই ঘাসিয়া খাল দিয়েই সব সময় নৌ চলাচল করত। সেটাই ছিল নৌপথ। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এ ঘাসিয়া খালটি বন্ধ হয়ে যায়। কারণ ২০০১ সালে বিএনপি আসার পর মংলা বন্দর বন্ধ করে দেয়। সে কারণে মংলা বন্দর দিয়ে কোন জাহাজ আসত না। ফলে ঘাসিয়া খালের কোন গুরুত্বও ছিল না। তাই খালটি দীর্ঘদিন ড্রেজিং হয়নি। ফলে আস্তে আস্তে এটি বন্ধ হয়ে যায়।’ তিনি বলেন, ‘যেসব ছোট-ছোট খাল দিয়ে ঘাসিয়া খালে পানি আসত, প্রায় সব জায়গায় শাখা খালগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ ওখানে চিংড়ির ঘের করা হয়েছে। একটা উদ্যোগ নিয়ে জরিপ করে দেখতে হবে, কোন কোন এলাকায় চিংড়ির ঘের করার ফলে খালে পানি আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এ ঘেরগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। এগুলো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বা খালের মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে।’ ঘাসিয়া খালের ড্রেজিং করতে নৌ-মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে খালটি ড্রেজিং করতে বলেছি। কারণ, এটি ড্রেজিং হলে প্রায় ৭/৮ মাইল পথ কমে যাবে।” উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ দল পর্যবেক্ষণে আসছেন ॥ তেলবাহী ট্যাংকার ডুবে যাওয়ার পর সুন্দরবনের পরিবেশ ঝুঁকিতে বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবাদীরা উদ্বিগ্ন। পরিবেশ নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রায় প্রতিটিই এ ঘটনায় উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। পাশাপাশি উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘের জলাভূমি বিষয়ক সংস্থা রামসা, উন্নয়ন সহযোগী ইউএনডিপিসহ বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্র। সম্ভাব্য এ ক্ষতি থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনকে রক্ষার জন্য সব ধরনের প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য সহযোগিতার আশ্বাসও তারা দিয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকটি সংস্থা ও দেশের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিরা সুন্দরবনে আসছেন। ঘটনার পরপরই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ঢাকার জাতিসংঘ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর পলিন ট্যামেসিস এক বিবৃতিতে বলেন, তেল নিঃসরণের এলাকাটি চাঁদপাই অভয়ারণ্য সংলগ্ন, যা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত সর্ববৃহৎ সংরক্ষিত জলাভূমি এবং গাঙ্গেয় ও ইরাবতী নামে দুটি বিপদাপন্ন ডলফিন প্রজাতির বিচরণ ক্ষেত্র। এ প্রসঙ্গে পলিন ট্যামেসিস শ্যালা নদীপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধের সরকারী সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সংস্থাটি সব রকমের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। সুন্দরবন রক্ষার রিট ॥ সুন্দরবন রক্ষার নির্দেশনা চেয়ে সোমবার হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। জনস্বার্থে এই রিট দায়ের করেন আইনজীবী এ্যাডভোকেট সৈয়দা শাহিন আরা লাইলী। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মোঃ আশরাফুল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রিটের প্রাথমিক শুনানি করে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিপিং করপোরেশনের চেয়ারম্যান, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে। সুন্দরবনে দ্রুত তেল অপসারণে বাগেরহাটে মানববন্ধন ॥ সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকার ডুবে নদী খালে ছড়িয়ে পড়া তেল দ্রুত অপসারণের করে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষাসহ বনের মধ্য দিয়ে সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধের দাবিতে সোমবার বাগেরহাটে মানববন্ধন পালিত হয়েছে। বাগেরহাট শহরবাসীর ব্যানারে বাগেরহাট ট্যুরিস্ট ক্লাব ও সুন্দরবন রিসোর্টের যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন পালিত হয়। এ সময় উদয়ন বাংলাদেশ ও আমরাই পারি জোট সংহতি প্রকাশ করে। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সুন্দরবন রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী ডা. মোশাররফ হোসেন, বাগেরহাট ট্যুরিস্ট ক্লাবের নির্বাহী পরিচালক আব্দুলাহ বনী, আমরাই পারি জোটের সভাপতি সেলিমা বেগম, ট্যুরিস্ট ক্লাবের মাহমুদ হাসান, আলামিন সরদার, উদয়ন বাংলাদেশের নির্বাহী চরিচালক সেখ আসাদ প্রমুখ।
×