ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ন্যায়বিচার দাবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪

ন্যায়বিচার দাবিতে বিক্ষোভ

যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ লোকজন নিহত হওয়ার ঘটনাকে ন্যায়বিচার দাবি করে শনিবার হাজার হাজার প্রতিবাদী দেশজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এতে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনের কোন কোন অংশ অচল হয়ে পড়ে। মার্কিন রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক, বস্টন ও ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের কয়েকটি শহরে বড় ধরনের প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ১৮ বছর বয়স্ক কিশোর মাইকেল ব্রাউন এবং ছয় সন্তানের পিতা এরিক গার্নারের মৃত্যুর জন্য দায়ী শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসারদের বিচারে সোপর্দ না করতে গ্র্যান্ড জুরিদের সিদ্ধান্ত প্রতিবাদ-বিক্ষোভের সূচনা করে এবং তা কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে। শনিবার বিক্ষোভকারীরা ম্যানহাটানের কিছু কিছু অংশ এবং ওয়াশিংটনের কংগ্রেস ভবন অভিমুখী পেনসিলভানিয়া এ্যাভিনিউ অচল করে দেয়। তারা ‘ন্যায়বিচার নেই’, ‘শান্তি নেই’ এবং ‘এখনই ন্যায়বিচার চাই’ বলে সেøাগান দেন। সমাবেশে কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গ উভয় সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা যোগ দেন। তারা ‘বর্ণবাদী পুলিশকে ঠেকান’ এবং ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’ লেখা ব্যানার তুলে ধরেন। যখন নিউইয়র্কের স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে পুলিশ কর পরিশোধিত নয় এমন সিগারেট বিক্রির জন্য গার্নারকে মাটিতে চেপে ধরেছিল তখন গার্নার মৃত্যুর আগে বার বার ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’ কথাগুলো বলেছিলেন। খবর এএফপি, বিবিসি ও নিউইয়র্ক টাইমসের। যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে নিরস্ত্র শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তিরা নিহত হওয়ার সাম্প্রতিক ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার হাজার হাজার লোক রাজধানী ওয়াশিংটনে মিছিল করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের ফার্গুসন শহরে গুলিতে নিহত মাইকেল ব্রাউন এবং নিউইয়র্কে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া এরিক গার্নারের আত্মীয়স্বজনও এতে যোগ দেন। উভয়েই পুলিশের হাতে মারা যান, কিন্তু গ্র্যান্ড জুরিরা সংশ্লিষ্ট পুলিশদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে অস্বীকার করায় অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্কে প্রচ- শীত সত্ত্বেও এক প্রতিবাদ বিক্ষোভে ২৫ হাজারেরও বেশি লোক যোগ দেয়। রাজধানীতেও বিক্ষোভকালে বক্তারা মার্কিন আইন বদলানোর আহ্বান জানান। মাইকেল ব্রাউনের মা লেসলি ম্যাকস্প্যাডেন জনতার উদ্দেশে বলেন, এ এক জনসমুদ্র। যদি তারা এটা দেখতে না পায় এবং কোন পরিবর্তন না আনে, তাহলে আমাদের কি করতে হবে, তা আমি জানি না। মার্কিন রাজধানীতে জনতা শান্ত থাকলেও তাদের দাবিতে অনড় ছিল। বহুসংখ্যক পুলিশ আশপাশে অবস্থান করছিল। তীব্র শীত উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেয়। তাদের লক্ষ্য ছিল, তাদের ভাষায় পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ লোকদের বেআইনীভাবে নিহত হওয়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা। বেশিরভাগ লোক জানান, তারা এরিক গার্নারের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এ ঘটনা এবং নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ মাইকেল ব্রাউনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা আইন পরিবর্তনের আহ্বান জানাতে উৎসাহ যোগায়। লোকজন জানায়, তারা ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ জানিয়ে যাবে। তাদের মূল প্রশ্ন হলো, ন্যায়বিচার বলতে কি বুঝায়? কারও কারও মতে, এটা হলো আইন ও গ্র্যান্ড জুরি ব্যবস্থা বদলানো বা পুলিশের গায়ে ক্যামেরা লাগানো। কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তনই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। মিছিলকারীরা ফ্রিডম প্লাজা থেকে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলের দিকে হেঁটে যাওয়ার জন্য পেনসিলভানিয়া এ্যাভিনিউতে সমবেত হয়। তবে তাদের সঠিক সংখ্যা তৎক্ষণাৎ স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। ক্যাপিটলের সামনে ভাষণ দেয়ার সময় গার্নারের মা গোযেন ক্যার মিছিলটিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেন।
×