ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অবকাঠামোসহ অন্যান্য জটিলতা নিরসনে সময় লাগবে

ঢাকা-গুয়াহাটি বাস চালু হচ্ছে না এ বছর

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪

ঢাকা-গুয়াহাটি বাস চালু হচ্ছে না এ বছর

রাজন ভট্টাচার্য ॥ সমীক্ষার কাজ শেষ হলেও আন্তর্জাতিক মানের রাস্তা না হওয়া ও ভিসা-কাস্টমসসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে বছরের শুরুতেই চালু হচ্ছে না ঢাকা-গুয়াহাটি নতুন বাস সার্ভিস। দ্রুত সমস্যা সমাধান করলেও এই সার্ভিস চালু করতে সময় লাগবে প্রায় এক বছর। তাছাড়া দু’দেশের পক্ষ থেকে জানান এখনও ব্রিজসহ রাস্তা, বাস চলাচলের উপযোগী করতে তেমন কোন পদক্ষেপ নেই। এজন্য কি পরিমাণ আর্থিক বিনিয়োগ প্রয়োজন তাও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানান হয়নি। তবে এই রুটে বাস সার্ভিস চালু করতে উভয় দেশই একমত। যাত্রীর ওপর নির্ভর করবে সপ্তাহে কয়টি বাস চলাচল করবে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন (বিআরটিসি) কাছে আন্তর্জাতির মানের কোন বাস নেই। শ্যামলী পরিবহনের ভাড়া করা বাসে ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিস চালাচ্ছে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ। নতুন বাস সার্ভিস চালু করতে ভারতের গুয়াহাটি থেকে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রতিনিধি দলের বাস বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকায় পৌঁছে। নতুন বাসরুট চালু করতেই দু’দেশের যৌথ দল সমীক্ষা চালাচ্ছেন। ঢাকা পৌঁছার পর উভয় দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কয়েকদফা বৈঠক হয়েছে। বর্তমানে দু’দেশের মধ্যে ঢাকা-কলকাতা ও ঢাকা-আগরতলা রুটে বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। রয়েছে মৈত্রী টেনও। গুয়াহাটি থেকে ছেড়ে আসা বাসে বাংলাদেশের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ভারতের অর্থ, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং অসম ও মেঘালয় রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি রয়েছেন। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ এন সিদ্দিক জানান, যৌথ প্রতিনিধি দল এ রুটের অবস্থা ও সুযোগ-সুবিধা যাচাই করে দেখবে। প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকা বিআরটিসির পরিচালক আবদুল্লাহিল করিম জনকণ্ঠকে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে দু’দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপর নৈশভোজে অংশ নেন বাংলাদেশে কর্মরত ভারতের রাষ্ট্রদূত পঙ্কজ শরন। জানা গেছে, প্রস্তাবিত রুট অনুযায়ী, অসমের গুয়াহাটি থেকে মেঘালয়ের শিলং পেরিয়ে ডাউকি-তামাবিল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে ভারতের বাস। একইভাবে ঢাকা থেকে সিলেটের তামাবিল হয়ে মেঘালয়-শিলং পেরিয়ে গুয়াহাটিতে নিয়মিত চলাচল করবে বাস। আনুমানিক ৫শ’ কিলোমিটার হবে এ রুটের দূরত্ব। বাসের গতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার হলে ঢাকা থেকে গুয়াহাটি পৌঁছাতে সময় লাগবে ১০ ঘণ্টার বেশি। এদিকে ঢাকা থেকে সিলেটের তামাবিল সীমান্ত পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত। মহাসড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটি। কিন্তু তামাবিলের পরেই ডাউকি থেকে শিলং পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটারের প্রথম ১৫ কিলোমিটার সড়ক অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বড় বাস চলাচলের জন্য এই ১৫ কিলোমিটার এখনও সেভাবে প্রস্তুত হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে দ্রুত বাস সার্ভিস চালু নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, যেহেতু ১৫ কিলোমিটার রাস্তা বড় বাস চলাচলের উপযোগী নয় সেহেতু ২৬ সিটের কোস্টার টাইপের বাস চালানো সম্ভব। এছাড়াও গুয়াহাটি-তামাবিল সড়কটিও বড় বাস চলাচলের উপযোগী নয়। ডাউকি এলাকায় ১০০ ফিটের বেশি একটি ব্রিজ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এই ব্রিজটি এখন বড় পরিবহন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধি দল। শিলং ও ডাউকি রাস্তাও বড় বাস চলাচলের উপযোগী নয়। সড়ক-মহাসড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নতুন এই বাস রুটের মধ্যে তামাবিল-ঢাকা ৩০০ কিলোমিটা । গুয়াহাটি-ডাউকি পর্যন্ত ২০০ কিলোমিটার। এরমধ্যে ভারতীয় অংশে খারাপ রাস্তার পরিমাণ বেশি।
×