ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ জামালের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত ফুটবল অঙ্গন

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪

শেখ জামালের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত ফুটবল অঙ্গন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোন দলের সফলতার জন্য দরকার দক্ষ ব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় অর্থ ও কুশলী দ্রোণাচার্য্য। এর সঙ্গে যদি যোগ হয় খেলোয়াড়দের দক্ষতা ও খানিকটা ভাগ্যের পরশ, তাহলে সাফল্য ধরা দেবেই তৃষ্ণার্ত হাতের মুঠোয়। এগুলোর প্রতিটিই আছে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডের। গত মৌসুমে ফেডারেশন কাপ এবং প্রিমিয়ার লীগ এবং সম্প্রতি ভুটানে গিয়ে কিংস কাপের শিরোপা জিতেছে এই ক্লাবটি। এ উপলক্ষে শুক্রবার শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব প্রাঙ্গণে এক বিজয়-উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। রাতে আতশবাজির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের যবনিকাপাত ঘটে। এতে ক্লাবের খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তাদের থাকার পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ মন্ত্রী ও বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন। ওইদিনই অনুষ্ঠিত ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভায় মনজুর কাদের সভাপতি হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়)। শুধু বার্ষিক সাধারণ সভাই নয়, ক্লাবের স্পোর্টস কমপ্লেক্সেও উদ্বোধন করা হয়েছে। এ উৎসবের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় এমপি ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, ভুটানের রাষ্ট্রদূতসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। অনুষ্ঠানে খেলোয়াড়দেরও সংবর্ধনা দেয়া হয়। স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ২টি টেনিস কোর্ট, দুটি ব্যাডমিন্টন কোর্ট, একটি বাস্কেটবল কোর্ট এবং চারটি ক্রিকেট পিচ আছে। ক্লাব প্রাঙ্গণে কথা হয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বর্তমান সদস্য এবং সাবেক জাতীয় ফুটবলার, প্রখ্যাত ফরোয়ার্ড শেখ মোঃ আসলাম এবং এক সময়ের আরেক মাঠ কাঁপানো ফুটবলার এবং বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নুর সঙ্গে। আসলাম বলেন, ‘শেখ জামালের যে সাংগঠনিক দক্ষতা, সেটাকে আমি সাবাশী দেই। ম্যানেজমেন্টের প্রতিটি সেক্টরেই আছে দক্ষ লোক। তারা জানেন, একটা ক্লাবকে কিভাবে উন্নতির শিখরে তুলতে হয়, সফলতা আনতে। সেটারই সর্বশেষ প্রমাণ হচ্ছে শেখ জামাল ধানম-ির ভুটানে গিয়ে কিংস কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আর এর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে এ ক্লাবের সভাপতি মনজুর কাদেরের।’ জামালের কোন দিকটা নিয়ে সমালোচনা করতে চান? আসলাম বলেন, ‘ঠিক সমালোচনা নয়, চাওয়া আছে। সেটা হচ্ছে শেখ জামাল ক্লাবে বিদেশী খেলোয়াড়দের আধিক্য কমিয়ে দেশী খেলোয়াড় বৃদ্ধি করা উচিত। এতে শুধু ক্লাবের নয়, উন্নতি হবে দেশীয় ফুটবলেরই। তারাই তো একসময় জাতীয় দলে খেলবে।’ ২০১১ সালে নেপালের পোখরায় গিয়ে ‘সাফাল পোখারা গোল্ডকাপ’ জয়, ২০১৪-এর ফেব্রুয়ারিতে ভারতের কলকাতায় গিয়ে ‘আইএফএ শিল্ড’-এ রানার্সআপ হওয়া, আর এবার ভুটানে গিয়ে ‘কিংস কাপ’-এ চ্যাম্পিয়ন হওয়া ... এভাবেই কি উপমহাদেশ তথা সাফ অঞ্চলের ক্লাব ফুটবলে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব একটি প্রতিষ্ঠিত ক্লাবশক্তি হিসেবে নিজেদের নামটি সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে চুন্নু বলেন, ‘আমি শেখ জামাল ক্লাবকে ধন্যবাদ জানাতে চাই তাদের অব্যাহত সাফল্য আর জয়যাত্রার জন্য। আমরা যখন খেলতাম, তখন কিন্তু আমরা (আবাহনী-মোহামেডান) ভারতের মোহনবাগান, ইস্ট বেঙ্গল ও কলকাতা মোহামেডানের সঙ্গে সেভাবে খেলতে গিয়ে পেরে উঠতাম না। কিন্তু এখন শেখ জামাল তো এই ক্লাবগুলোকে বলে-কয়েই নিয়মিত হারাচ্ছে। এ থেকেই পরিষ্কার, সাফ অঞ্চলের ক্লাব ফুটবলে এখন কারা ছড়ি ঘোরাচ্ছে। নিঃসন্দেহে এটা একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমার জন্য অনেক গর্বের ব্যাপার। আশা করি ভবিষ্যতে শেখ জামাল তাদের জয়যাত্রা আরও অব্যাহত রাখবে এবং আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবে।’ শেখ জামালের আবির্ভাবে খর্ব হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার করা দেশের দুই ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় দল আবাহনী-মোহামেডানের। এটা দেশীয় ফুটবলের জন্য শুভ নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করে চুন্নু বলেন, ‘আবাহনী-মোহামেডানের উচিত শেখ জামালের মতো ভাল দলগঠন করে শিরোপা জিতে আবারও তাদের হারানো গৌরব ও জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে আনা। কেননা, ফুটবলে একতরফা আধিপত্য ভাল নয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতা-লড়াই না হলে জমে না। এই বিষয়টা নিয়ে ক্লাবদুটোর কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।’
×