ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কষ্টের সান্ত্বনা- নতুন প্রজন্মের উন্মেষ

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪

কষ্টের সান্ত্বনা- নতুন প্রজন্মের উন্মেষ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ‘দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন দশকের কষ্টের চেয়ে মানসিক যন্ত্রণা প্রকাশ করার মতো নয়। দীর্ঘ এই সময়টি বিশেষ করে এ দিনটি ছিল ক্ষোভ-যন্ত্রণা-কষ্ট প্রকাশের দিন। ‘৭৫ পরবর্তী দীর্ঘ সময় একাত্তরের শহীদ পরিবারগুলোকে নতুন করে কষ্ট দিতেও অপশক্তির বিবেকে বাঁধেনি, বরং তারা উল্লসিত হয়েছে। বুদ্ধিজীবী হন্তারকদের মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে, তাদের গাড়িতে লাখো শহীদের রক্তমাখা জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র আমাদের কটাক্ষ করেছে, শহীদের অপমান করে স্পর্ধার প্রকাশ ঘটিয়েছে। আমাদের কষ্টকে শতভাগ বাড়িয়ে দিয়েছিল জিয়া-খালেদা জিয়া সরকার। কি যে কষ্টের দিন গেছে একাত্তরের শহীদ পরিবারগুলোর, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমাদের মনের ভীষণ যন্ত্রণা, অভিমান আর কষ্ট বার বার চোখের পানি হয়ে ঝরেছে। আমরা শহীদ পরিবারগুলো এতদিন আশ্রয় খুঁজেছি, কষ্টের কথা বলতে চেয়েছি। এখন নির্দ্বিধায় বলতে পারি, আমাদের বড় ভরসার, পরম আশ্রয়ের স্থল আমরা পেয়ে গেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, রায়ও কার্যকর হচ্ছে। বাঁধভাঙ্গা স্রোতের মতো নতুন প্রজন্ম একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের দাবিতে মাঠে নেমেছে। স্বামী হারানোর ব্যথা কোনদিন ভুলতে পারব না, তবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও আর নতুন প্রজন্মের উন্মেষ আমাদের অনেক কষ্ট-ব্যথা-বেদনাই ভুলিয়ে দিয়েছে।’ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস সামনে রেখে এক নিশ্বাসে গত ৪৩ বছরের জমে থাকা দুঃখ-কষ্ট-বেদনার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে নিয়ে আশার কথা শোনালেন শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর সহধর্মিণী শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী। শুধু শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নেত্রী শ্যামলী নাসরিন চৌধুরীই নন, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের পুত্র সাংবাদিক জাহিদ রেজা নূর, শহীদ বুদ্ধিজীবী শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার কন্যা শিক্ষাবিদ মেঘনা গুহঠাকুরতা ও সাংবাদিক-সাহিত্যিক শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের কন্যা খ্যাতনামা নাট্যশিল্পী শমী কায়সার জনকণ্ঠের সঙ্গে আলাপচারিতায় তাঁদের স্বজন হারানোর বেদনার কথার পাশাপাশি দ্রুত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন প্রায় অভিন্ন কণ্ঠে। ১৯৭১ সালের নয় মাস রক্তগঙ্গা পেরিয়ে গোটা জাতি যখন উদয়ের পথে দাঁড়িয়ে, পূর্ব দিগন্তে টগবগিয়ে বিজয়ের লাল সূর্য উদিত হচ্ছে, দেশ যখন স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে- ঠিক তখনই বাঙালীর কৃতী সন্তানদের নৃশংসভাবে হত্যা করে পরাজয়ের গ্লানিমাখা পাক হানাদার আর তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা। বধ্যভূমিতে বড় অসহায় দশায় নিঃশেষে প্রাণ দেন আমাদের সেরা শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরা। পৃথিবীর অনেক জাতি যুদ্ধ করে, অনেক জীবন ও রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে; কিন্তু এত প্রাণক্ষয় কোন জাতির ভাগ্য ঘটেনি। শুধু তাই নয়, জাতির বিবেক বলে পরিচিত বুদ্ধিজীবীদের এমন নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনাও ইতিহাসে বিরল। বাঙালী জাতির মুক্তি সংগ্রামে এসব বুদ্ধিজীবী নিজেদের মেধা, মনন ও লেখনীর মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগঠকদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। পথ দেখিয়েছেন মুক্তির। উদ্দীপ্ত করেছেন অধিকার আদায়ে। আর সেটিই কাল হয়ে দাঁড়াল তাঁদের জন্য। এ দেশীয় নরঘাতকদের করা তালিকায় একে একে উঠে এলো অসংখ্য বুদ্ধিদীপ্ত সাহসী মানুষের নাম। অত্যন্ত নিষ্ঠুর কায়দায় জাতিকে মেধাশূন্য করতে হত্যা করা হয় এসব বুদ্ধিজীবীদের। দীর্ঘ সাড়ে তিন দশকের শহীদ পরিবারগুলোর চাপাকান্না আর কষ্টের দিনলিপিই উঠে এসেছে এই আলাপচারিতায়। শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী ॥ শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলিম চৌধুরীর সহধর্মিণী শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী তাঁর কষ্টের চেয়ে নতুন আশার কথায় শুনিয়েছেন আলাপচারিতায়। দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক আমরা বঞ্চিত ছিলাম। আমরা বিচার চেয়েও বিচার পাইনি। একাত্তরের হন্তারকদের বিচারের পরিবর্তে বরং পুরস্কৃত হতেই আমরা দেখেছি। ’৭৫ পরবর্তী দীর্ঘ সময় বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের বিচারের পরিবর্তে পুনর্বাসন করা হয়েছে। বিচারহীনতা আর ঘাতকদের পুনর্বাসনের দৃশ্য আমাদের ভীষণ কষ্ট ও যন্ত্রণার মাত্রা আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল। জিয়া ও খালেদা জিয়ার সরকার চিহ্নিত বুদ্ধিজীবীদের হন্তারক ও যুদ্ধাপরাধীদের প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে আমাদের প্রিয়জনের রক্তমাখা রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে লাখো শহীদদের অপমান করতেও দ্বিধা করেনি। তিনি বলেন, আমরা এক সময় ভেবেছিলাম হয়ত বিচার পাব না। কিন্তু দীর্ঘদিন পরে হলেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, রায়ও কার্যকর শুরু হয়েছে। এজন্য বর্তমান সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, শুধু ১৮ যুদ্ধাপরাধীই নয়, একাত্তরের সকল যুদ্ধাপরাধী ও ঘাতকদেরই বিচার করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে। আমাদের দুঃখ-কষ্ট ও বেদনা অনেকটাই ভুলিয়ে দিয়েছে এ দেশের নতুন প্রজন্মরা। তারাও এ বিচারের দাবিতে আজ রাজপথে নেমে এসেছে। গণজাগরণ মঞ্চে নতুন প্রজন্মের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ আমাদের সাহসী করে তুলেছে। এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। এই অপশক্তির একটি বীজও রাখা চলবে না, সমূলে উৎপাটন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারলেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার শান্তি হবে। সাংবাদিক জাহিদ রেজা নূর ॥ একাত্তরে ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে পাক হানাদারদের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন। হানাদারবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের রক্তচক্ষুও তাঁকে দমাতে পারেনি। যার কারণে তাঁকে প্রাণ দিতে হয় আলবদর-আলশামসের হাতে। সেই শহীদ বুদ্ধিজীবী সিরাজুদ্দীন হোসেনের পুত্র সাংবাদিক জাহিদ রেজা নূরও জানালেন তাঁর পিতা হারানোর বেদনার কথা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়ায় তাঁর স্বস্তির কথাও। জনকণ্ঠের সঙ্গে আলাপচারিতায় জাহিদ রেজা নূর বলেন, ৪৩ বছর ধরে স্বজন হারানোর বেদনা তো রয়েছেই। কিন্তু কষ্টের মধ্যেও একটি শুভ সংবাদ আমাদের আশান্বিত করে তুলেছে। দীর্ঘদিন পর হলেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, রায়ও কার্যকর হচ্ছে। স্বামী হারানোর বেদনা বুকে নিয়েই আমার মা নূর জাহান সিরাজী ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর মারা গেছেন। জীবদ্দশায় তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখে যেতে পারেননি। তবে তিনি যেখানেই থাকুন না কেন, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দড়িতে ঝোলা দেখে হয়ত তাঁর বিদেহী আত্মা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে। তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তান হিসেবে দেশ আমাদের কি দিল সেটা আমাদের কাছে বড় কথা নয়, আমরা দেশকে কি দিলাম সেটাই আমাদের কাছে বড় কথা। তিনিও আক্ষেপ করে বললেন, ‘৭৫-এর পর দীর্ঘ সময় একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের পরিবর্তে জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধী শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী, আবদুল আলিমসহ কয়েকজন ঘাতককে মন্ত্রী বানিয়ে এবং পরবর্তীতে খালেদা জিয়া ঘাতক নিজামী-মুজাহিদদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। এসব দৃশ্য দেখে আমরা ধরেই নিয়েছিলাম হয়ত আমরা আমার বাবার হত্যার বিচার পাব না। তিনি বলেন, ‘৯৬ সালে নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ছিল। নতুন প্রজন্ম আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে তারাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়। জাহিদ রেজা নূরও দ্রুত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকরের দাবি জানিয়ে বলেন, যে ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে তা পৃথিবীর যেকোন ট্রাইব্যুনালের চেয়ে মানবিক ও স্বচ্ছ। অনেকেই এই ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে, মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু নতুন প্রজন্ম যেভাবে জেগে উঠেছে তাতে কোন ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। তাই প্রতীকীভাবে হলেও শীর্ষ সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার শেষ ও রায় কার্যকরের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে এভাবে কেউ দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা ও গণহত্যা চালানোর সাহস না পায়। শিক্ষাবিদ মেঘনা গুহঠাকুরতা ॥ প্রগতিশীল বলে বরাবরই পাকবাহিনীর চক্ষুঃশূল ছিলেন শহীদ বুদ্ধিজীবী ও ঐ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা। তাই হানাদাররা নিজের গড়া প্রাণপ্রিয় বাগানে এনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যার মাধ্যমে প্রতিশোধ নেয়। সেই শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার কন্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মেঘনা গুহঠাকুরতা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে তাঁর অতীত কষ্ট ও বেদনার কথা বলতে চাননি। শুধু চেয়েছেন শহীদ বুদ্ধিজীবীরা যে আদর্শ ও নীতি নিয়ে দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করে গেছেন, সেই আদর্শ নিয়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে উঠুক। তিনি বলেন, আমরা পিতা হারানোর ব্যথা-বেদনা ভুলতে পারব না। সেই দুঃখ-দুর্দশা না ভুলে এটাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েই আমরা দেশের জন্য কাজ করে যেতে চাই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে যেভাবে দেশের নতুন প্রজন্ম জেগে উঠেছে, এটা অত্যন্ত আশার কথা। গণজাগরণ মঞ্চই প্রমাণ করেছে দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম শহীদ বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও দেশের স্বাধীনতার কথা ভুলে যায়নি। তবে সেই গণজাগরণ মঞ্চ এখন যেভাবে তিন টুকরো হয়েছে, এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। মেঘনা গুহঠাকুরতা আরও বলেন, সকলের কাছেই আমাদের চাওয়া, নতুন প্রজন্মের এই জাগরণকে ভিত্তিমূল ধরেই সবার জন্য একটি মঙ্গলজনক রাষ্ট্র উপহার দেয়া। আমার বাবাসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীরা প্রাণ দিয়ে গেছেন, তবে আমার অনুরোধ থাকবে তাঁদের চিন্তাভাবনা ও আদর্শ ধারণ করেই যেন দেশকে নতুন করে গড়ে তোলা হয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবশ্যই আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দ্রুত রায় কার্যকর দেখতে চাই। এই বিচার আদালতের মাধ্যমেই হোক, বিচার বহির্ভূতভাবে নয়। নাট্যশিল্পী শমী কায়সার ॥ সাংবাদিক-সাহিত্যিক শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সার। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর কালরাতে রাজাকার-আলবদররা তাঁকে ধরে নিয়ে গিয়ে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। তাঁর মেয়ে দেশের খ্যাতনামা নাট্যশিল্পী শমী কায়সার। যাঁর মা সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা পান্না কায়সার আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে শহীদুল্লাহ কায়সারের হত্যাকারী জামায়াত নেতা খালেক মজুমদারকে শনাক্ত করে তার মৃত্যুদ- দাবি করেছিলেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে কথা হয় শমী কায়সারের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত ৪৩ বছর ধরে আমাদের যে হতাশার জায়গা ছিল, আজ সেটা আর নেই। দীর্ঘ সময় আমরা পিতা হত্যার বিচার পাইনি, বরং স্বাধীনতাবিরোধীদের আস্ফালন দেখেছি। আমরা ভাবিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে। আজ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, রায়ও কার্যকর হচ্ছে। নতুন প্রজন্ম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে মাঠে নেমেছে। এসব দৃশ্য আমাদের আশান্বিত করে তুলেছে। সকল যুদ্ধাপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে শমী কায়সার আরও বলেন, সামনে আমাদের আরও একটি যুদ্ধ করতে হবে। জামায়াতের কিছু নেতার বিচার হলেও তারা তাদের চিন্তার বংশধর রেখে গেছে। এই স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের বংশধরদের বিরুদ্ধেও নতুন প্রজন্মকে আদর্শ, বুদ্ধি ও চিন্তা দিয়ে লড়াই করতে হবে, সমূলে এদের শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে। শুধুমাত্র গোলাম আযম, সাঈদী, মুজাহিদ বা কামারুজ্জামান নয়, সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলতেই থাকবে।
×