ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মামলার দীর্ঘসূত্রতা নিরসনে সুপ্রীম কোর্টের আওতা বাড়াতে হবে

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪

মামলার দীর্ঘসূত্রতা নিরসনে সুপ্রীম কোর্টের আওতা বাড়াতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মামলার দীর্ঘসূত্রতা নিরসনে সুপ্রীমকোর্টের আওতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আদালতের সংখ্যা ও কর্মচারী বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করলেন প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, মামলার দীর্ঘসূত্রতা একটি বড় সমস্যা। আদালতের ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি মামলা হওয়ায় এই দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিচ্ছে। দীর্ঘসূত্রতা নিরসনে সুপ্রীমকোর্ট নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে। শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় সমন্বিত উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সপ্তদশ বর্ষপূতি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এম ওয়াজেদ মিয়া প্রতিষ্ঠিত এই সমন্বিত উন্নয়ন ফাউন্ডেশন বিজ্ঞান চর্চায় ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তিনি বলেন, মামলার দীর্ঘসূত্রতা নিরসনে সুপ্রীমকোর্টের আওতা বাড়াতে হবে। আদালতের সংখ্যা ও জনসংখ্যা (কর্মচারী) বৃদ্ধি করতে হবে। অধঃস্তন আদালতকেও আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। তিনি বলেন, বিচারপতিদের নানামুখী সমাজকর্মে অংশগ্রহণের সুযোগ কম রয়েছে। তবুও বিচারপতিরা সর্বদায় সমাজের কল্যাণে নিয়োজিত রয়েছেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. ফরাস উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সুবর্ণ রেখায় অবস্থান করছে। বিশ্বের প্রতিটি দেশই বাংলাদেশের এই অগ্রগতির কথা অকপটে স্বীকার করছে। আমাদের অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে, এখন দরকার এর সামাজিক রূপান্তর। বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক ও জঙ্গীবাদমুক্ত দেশ বলা যায়, যা একটি সুষম ব্যবস্থার রাষ্ট্র। বাংলাদেশের মানবসম্পদ একটি অসাধারণ পুঁজি উল্লেখ করে তিনি বলেন, অগ্রগতির জন্য দরকার মানবসম্পদ ও পুঁজি। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশ হতে উন্নত দেশগুলো মানব সম্পদ আমদানি করে। কিন্তু এখন তাদের আরও বেশি উন্নয়নের জন্য দক্ষ মানবসম্পদের দরকার, তাই উন্নত মানব সম্পদের ওপর তারা জোর দিচ্ছে। তাই মানব সম্পদকে আরও শিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, জ্বালানি এক কালে আমাদের বড় সমস্যা ছিল। এখন এ সমস্যার অনেক উন্নয়ন হয়েছে। উন্নত দেশগুলোও তাদের জ্বালানী শক্তি বেশি করে আহরণ করায় এই সমস্যা আর থাকবে না। বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারতের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র, দুই দেশ পাশাপাশি থাকতে গেলে কিছু সমস্যা থাকে। মনে হচ্ছে ইতোমধ্যে বরফ গলা শুরু হয়েছে। মনে করবেন আমাদের অর্থনীতিতে সুবাতাস বয়ে যাচ্ছে এখন শুধু শিল্পায়নের ওপর বেশি করে জোর দেয়া দরকার। বিশিষ্ট কলামিস্ট ও সমসাময়িক চিন্তাবিদ অজয় দাশগুপ্ত বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় বাধাটি ১৯৭১ সালে দূরীভূত হয়েছে। কয়েক দশকে যেসব সমস্যা ছিল তা আমরা দূর করতে সক্ষম হয়েছি। উন্নত ও আধুনিক সোনার বাংলা গঠনের যে প্রচেষ্টা চলছে তা নিয়ে আমরা আরও বেশি স্িক্রয় হব। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, মানবাধিকার কমিশনের কমিশনার অধ্যাপক মাহফুজা খানম, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য সচিব কবি শেখ হাফিজুর রহমানসহ সমাজের বিশিষ্ট কয়েক ব্যক্তিবর্গ। খন্দকার আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে দেশের বর্তমান অর্থনীতি ও উন্নয়নের চিত্র তোলে ধরা হয় এই অনুষ্ঠানে । ফাউন্ডেশনের ১৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে কর্মক্ষেত্র, অর্থনীতি, সাহিত্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য মোট ২০ ব্যক্তিত্বকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রে নতুন ধারার প্রবর্তক বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে কথাসাহিত্যে মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়। অন্যান্যের মধ্যে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মামুনুর রশীদ, খন্দকার আসাদুজ্জামান এমপি, অর্থনীতিবিদ ড. ফরাস উদ্দিন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক অজয় রায়, কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন, কবিতায় কবি আসাদ চৌধুরী, কবি শেখ হাফিজুর রহমান, সাংবাদিকতায় সাংবাদিক সাইফল আলম, অজয় দাশগুপ্ত, মানবাধিকার ও সমাজসেবায় অধ্যাপক মাহফুজা খানম, ভাষা আন্দোলনে ভাষাসৈনিক বেগম রওশন আরা বাচ্চু, চিকিৎসায় অধ্যাপক এম ইকবাল আর্সনাল, বিজ্ঞানে প্রফেসর ড. মেজবা উদ্দিন আহমেদ, ইউনানী চিকিৎসায় ড. হাকীম মোঃ ইউসুফ হারুন ভূইয়া, নির্মাণে প্রকৌশলী মোঃ নুরুল আমীন, পল্লী উন্নয়নে মোঃ আবদুল জলিল মিয়া, কারিগরি শিক্ষায় মোঃ শামসুর রহমান, কৃষিতে শিক্ষাবিদ মোঃ মোবারক আলী ও শিক্ষায় ফারজানা ইসলামকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
×