ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সোহরাওয়ার্দীতে সংখ্যালঘু সমাবেশ ২৩ জানুয়ারি

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ১২ ডিসেম্বর ২০১৪

সোহরাওয়ার্দীতে সংখ্যালঘু সমাবেশ ২৩ জানুয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টানসহ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব রক্ষার সঙ্কট উত্তরণের আগামী ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন ‘বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ’। ধর্মীয় ও জাতিগত-আদিবাসী সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সকল ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনসমূহকে সমন্বিত করে এই কর্মসূচীর ডাক দেয়া হয়েছে। একলাখ মানুষের উপস্থিতিতে আয়োজিত সমাবেশ থেকে সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব রক্ষায় সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিভিন্ন দাবি দাওয়া উত্থাপন করা হবে। বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের নেতৃবৃন্দ, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের অনেকে জামিনে মুক্তি পাওয়া ও বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় দায়মুক্তির সংস্কৃতি থেকে রাষ্ট্রকে বেরিয়ে আসতে হবে। অনেক মামলায় দেখা গেছে গ্রেফতার হওয়ার পর আসামিরা এক সপ্তাহের মধ্যে জামিনে বেরিয়ে গেছে। অনেক মামলা খারিজ হয়ে যায়। কিছু মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন হওয়ার পরও অগ্রগতি নেই। রামুতে বৌদ্ধ মন্দির ভাঙ্গার সঙ্গে জড়িতরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা অভিযোগ করে বলেন, ১৯৭১ সালের মতো এখনও পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘু এলাকাগুলোতে অত্যচার, নির্যাতন চলছে। নারীদের টার্গেট করে অত্যাচার, নির্যাতন, অপহরণসহ ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে। বাংলাদেশকে সংখ্যালঘুশূন্য করা ও বৈচিত্র্যের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা থেকেই নির্যাতন অব্যাহত অথচ এসব বিষয়ে নির্বিকার সরকার, প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলসমূহ। নাগরিক সমাজও সোচ্চার নয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, সরকারী পরিসংখ্যানে দেখা গেছে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর হার ১৯৪৭ সালে ছিল ২৯ দশমিক সাত ভাগ। ২০১১ সালে তা নেমে এসেছে নয় দশমিক সাত ভাগে। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর হার ৯৮ দশমিক ৬ ভাগ থেকে বর্তমানে ৪৮ ভাগে নেমে এসেছে। বিদ্যমান রাজনৈতিক-সামাজিক বাস্তবতায়, তীব্র বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায়সহ অব্যাহত সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগ আজও বন্ধ হয়নি। উপমহাদেশীয় রাজনীতিতে দেশত্যাগের বিষয়টি বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামগ্রিকভাবে শুরু বাংলাদেশ নয়, উপমহাদেশের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিসহ স্থিতিশীলতা মোটা দাগে সংখ্যালঘু অস্তিত্বের ওপর নির্ভর করছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কাজল দেবনাথ, বিপ্লব বড়ুয়া, হিরালাল বালা, অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক, সঞ্জিব দ্রং, সুকান্ত বৈদ্য, জয়ন্ত কুমার দেব, বীরেন বসু ও স্বপন রায় প্রমুখ।
×