ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেসির হ্যাটট্রিকে বার্সিলোনার আয়েশি জয়

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৯ ডিসেম্বর ২০১৪

মেসির হ্যাটট্রিকে বার্সিলোনার আয়েশি জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রাণভোমরা লিওনেল মেসির দুরন্ত হ্যাটট্রিকে বিশাল জয় পেয়েছে বার্সিলোনা। রবিবার স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে কাতালানরা ৫-১ গোলে হারায় অতিথি এস্পানিওলকে। ন্যুক্যাম্পে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বার্সার হয়ে মেসির তিন গোল ছাড়া বাকি দুটি গোল করেন ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে ও বদলি হিসেবে নামা পেড্রো রড্রিগুয়েজ। পরশুর অন্য ম্যাচে ভিয়ারিয়াল ৪-০ গোলে রিয়াল সোসিয়েদাদকে ও সেভিয়া ১-০ গোলে পরাজিত করে রায়ো ভায়োকানোকে। গ্রানাডা ও ভ্যালেন্সিয়ার মধ্যকার ম্যাচটি অমীমাংসিত থাকে ১-১ গোলে। দাপুটে জয়ে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থান পুনরুদ্ধার করেছে বার্সা। ১৪ ম্যাচে তাদের ভা-ারে জমা ৩৪ পয়েন্ট। ৩২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বর্তমান শিরোপাধারী এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। আর ৩৬ পয়েন্ট নিছে সবার উপরে অবস্থান অপ্রতিরোধ্য রিয়াল মাদ্রিদের। ন্যুক্যাম্পে গোলোৎসব হলেও ম্যাচের শুরুতে কিন্তু আতঙ্কিতই হয়েছিল বার্সা! প্রথম ৪৫ মিনিট স্বাগতিকদের ভালভাবেই চেপে ধরেছিল এস্পানিওল। বার্সাকে স্তব্ধ করে ১৩ মিনিটে সার্জিও গার্সিয়ার গোলে এগিয়েও গিয়েছিল অতিথিরা। সার্জিও বসকুয়েটসের ভুলে বল পেয়ে যান সার্জিও গার্সিয়া। এরপর বল নিয়ে খানিকটা এগিয়ে জেরার্ড পিকেকে ফাঁকি দিয়ে গোলরক্ষক ক্লাওদিও ব্রাভোকেও পরাস্ত করেন তিনি। শুধু তাই নয়, ২৮ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বার্সার জালে বল জড়াতে পারেননি গার্সিয়া। তার দুর্বল শটটি যায় সোজা ব্রাভোর হাতে। এটি গোল হলে ম্যাচে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যেত এস্পানিওল। সেক্ষেত্রে ম্যাচের চেহারা হয়ত অন্যরকম হতে পারত। নবেম্বর মাসের প্রথম ম্যাচে বার্সাকে তাদেরই মাঠে হারিয়ে গিয়েছিল সেল্টা ভিগো। ডিসেম্বর মাসের প্রথম ম্যাচেও শুরুতে নিষ্প্রভ দেখানোর কারণে আরেকটি অঘটনের শঙ্কায় ছিলেন অনেকে। ২০০৯ সালের পর কাতালান ডার্বিতে ন্যুক্যাম্প থেকে প্রথম জয়ের স্বপ্নও হয়ত দেখতে শুরু করেছিল এস্পানিওল। কিন্তু না, তা হয়নি। আরেকবার লিওনেল মেসির জাদুতে শুধু রক্ষাই পায়নি বার্সা, শেষ পর্যন্ত উড়িয়ে দিয়েছে এস্পানিওলকে। ২৯ মিনিটেই সমতা ফেরাতে পারত বার্সা। পাল্টা আক্রমণে গিয়ে ডি-বক্সের কিছুটা বাইরে ফ্রিকিক পায় বার্সিলোনা। কিন্তু দুর্ভাগ্য মেসির, তার দারুণ শটটি বাধা পায় ক্রসবারে। এ পর্যন্ত লা লিগায় মেসির ৭ গোলের প্রচেষ্টা প্রতিহত হয়েছে পোস্টে। এই দিক থেকে সবচেয়ে দুর্ভাগ্য মেসিই। এর পর সবচেয়ে বেশি পোস্টে বাধা পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের করিম বেনজেমার (৪টি) গোলের প্রচেষ্টা। ৪২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে আবারও গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল অতিথিরা। এবার ফাঁকায় বল নিয়ে এগোতে থাকা ভিক্টর সানচেজকে রুখে দেন বার্সা গোলরক্ষক ব্রাভো। গোলের জন্য মরিয়া বার্সাকে অবশেষে প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে সমতায় ফেরান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ডি বক্সের অনেকটা বাইরে বল পেয়ে তড়িৎ জায়গা করে নেন মেসি। এরপর চোখের পলকে নেন বাঁকানো শট। যা গোলপোস্টে লেগে আশ্রয় নেয় প্রতিপক্ষের জালে। বিরতির পর ৫০ মিনিটে আরেকটি দর্শনীয় গোল করে দলকে এগিয়ে নেন মেসি। দুই মিনিট পর ইভান রাকিটিচের কর্নার থেকে পিকের হেডে বার্সিলোনা এগিয়ে যায় ৩-১ গোলে। মেসি জাদুতে সমতা ফেরানোর পর থেকেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে বার্সা। প্রতিপক্ষকে আর কোন সুযোগই দেয়নি লুইস এনরিকের দল। ৭৭ মিনিটে গোল পান লুইস সুয়ারেজের বদলি হিসেবে নামা পেড্রো। জর্ডি এ্যালবার পাস থেকে বল পেয়ে ঠা-া মাথায় গোল করে বার্সাকে ৪-১ ব্যবধানে এগিয়ে নেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। ৮১ মিনিটে পেড্রোর সঙ্গে বল দেয়া নেয়া করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন মেসি। ঘিরে থাকা তিন ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে ডানে পেড্রোকে বল বাড়ান মেসি। তার কাছ থেকে ফিরতি বল পেয়ে দারুণ দক্ষতায় গোল করেন বার্সা ডায়মন্ড (৫-১)। ফলে লা লিগায় ২১তম হ্যাটট্রিক করেন মেসি। আর বার্সিলোনার হয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটি মেসির ২৯তম হ্যাটট্রিক।
×