ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা রিয়াল মাদ্রিদের

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ৬ ডিসেম্বর ২০১৪

সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা রিয়াল মাদ্রিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। স্প্যানিশ পরাশক্তিরা স্বর্ণযুগ ফিরে পেতে পাঁচ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে উঠতি তারকাদের দলভুক্ত করেছে গ্যালাক্টিকোরা। চলমান ২০১৪-১৫ মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় অপ্রতিরোধ্য ছন্দে আছে রিয়াল। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে আছে দুরন্ত ছন্দে। বার্সিলোনাকে হটিয়ে লা লিগায়ও শীর্ষস্থানে ফিরেছে দলটি। আজ স্প্যানিশ লা লিগায় আবারও মাঠে নামছে কার্লো আনচেলোত্তির দল। ঘরের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়ালের প্রতিপক্ষ সেল্টা ডি ভিগো। মাঠে নামছে রিয়ালের নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদও। এ্যাওয়ে ম্যাচে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক এলচে। আজকের অপর দুই ম্যাচে লড়বে এ্যাথলেটিক বিলবাও-কর্ডোবা ও ডিপোর্টিভো লা করুনা-মালগা। আজকের ম্যাচে আরও একটি রেকর্ডের হাতছানি রিয়ালের। সর্বশেষ স্প্যানিশ কোপা ডেল রে তে জয়ের ফলে টানা ১৭ ম্যাচ জিতেছে গ্যালাক্টিকোরা। এখন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনার ২০০৫-০৬ মৌসুমে টানা ১৮ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড ভাঙার অপেক্ষায় আছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। এবারের দল বদলের বাজারে রিয়াল নিজেদের তাঁবুতে ভিড়িয়েছে জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী প্লেমেকার টনি ক্রুস, ব্রাজিল বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট জয়ী জেমস রড্রিগুয়েজকে। এ দু’জনের বয়স যথাক্রমে ২৪ ও ২৩ বছর। প্রতিশ্রুতিশীল ইস্কো ও কারভাজালের বয়স ২২ বছর। এরা সবাই ইতোমধ্যে নিজেদের দক্ষতার প্রমাণ রেখেছেন। আগামী পাঁচ বছরের কথা মাথায় রেখে এসব ফুটবলারকে দলে টেনেছে রিয়াল কর্তৃপক্ষ। এসবের একটিই লক্ষ্য, আগের স্বর্ণযুগ ফিরে পাওয়া। ২০০০ সালের কথা। ইউরোপের প্রভাবশালী ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি হয়ে আসেন ফ্লোরেন্টিনো পেরেজ। এসেই এমন সব কা- শুরু করলেন যে পুরো ফুটবল বিশ্ব নিমেষেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল। দায়িত্ব গ্রহণ করেই তিনি নজর দেন বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত সেরা তারকাদের দিকে। শুধু নজর দিয়েই ক্ষান্ত হননি, টেনে-হেঁচড়ে রিয়ালের তাঁবুতে ভেড়ান। পেরেজের হাতের নিখুঁত নিশানায় সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ব্রাজিলিয়ান ফেনোমেনন রোনাল্ডো, ফরাসী জাদুকর জিনেদিন জিদান, সোনালী প্রজন্মের পর্তুগীজ প্রতিনিধি লুইস ফিগো, গ্ল্যামারাস ইংলিশ সুপারস্টার ডেভিড বেকহ্যামসহ আরও অনেক প্রতিভাবান তারকা। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে সমর্থকপুষ্ট ক্লাবকে চাঁদের হাটে পরিণত করেন। এই চাঁদের হাটের তারারা বেশ ক’বছর মুগ্ধতার পরশে আবদ্ধ রেখেছিল ফুটবলপ্রেমীদের। কিন্তু হঠাৎ করে ক্লাব থেকে পেরেজের বিদায়ে দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে স্প্যানিশ জায়ান্ট। ফলস্বরূ রিয়ালের নক্ষত্রপুঞ্জরাও ধীরে ধীরে হারিয়ে যান! এ জন্যই সেই দাপুটে রিয়ালকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রিয় ক্লাবের এমন বেহাল অবস্থা দেখে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে সমর্থকরাও। তাইত তারা রিয়ালের স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন থেকে শুরু করে অনশন পর্যন্ত করেন। টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। তারা অনেক ভেবেচিন্তে সেই চিরচেনা কা-ারিকেই বেছে নেন। অর্থাৎ দ্বিতীয়বারের মতো রিয়ালের প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসিয়ে দেয়া হয় ফ্লোরেন্টিনো পেরেজকে। কর্তৃত্ব হাতে পেয়েই আবার ‘জাদুর বাণ’ ছেড়ে দেন তিনি। এর ফলাফল কি হয়েছে তা নিশ্চয়ই অজানা নয় কারও। আবারও তিনি চাঁদের হাট বসান সে সময়ের বিশ্বের সেরা দুই ফুটবলার রিকার্ডো কাকা এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালাল্ডোকে রিয়ালে ভিড়িয়ে। এই ঘটনা ২০০৯ সালের। এরপর কয়েক বছরের সাফল্যের পর আবারও ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে পড়ে রিয়াল। বিশেষ করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনার সঙ্গে কিছুতেই পেরে উঠছিল না গ্যালাক্টিকোরা। টানা কয়েক বছর ব্যর্থতার পর গত মৌসুম (২০১৩-১৪) থেকে আবারও জেগে উঠেছে দলটি। এবারও ত্রাতা হিসেবে আছেন সেই পেরেজ। একে একে এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, জাবি এ্যালানসো, গঞ্জালো হিগুয়াইনের মতো বড় তারকা দল ছাড়লেও পেরেজ দলে ভিড়িয়েছেন ব্রাজিল বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুটজয়ী কলম্বিয়ার জেমস রড্রিগুয়েজ, বিশ্বকাপজয়ী জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুস, ওয়েলস তারকা গ্যারেথ বেলের মতো বিশ্বসেরা তারকাদের।
×