ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দাউদ মার্চেন্ট ফের গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ৩ ডিসেম্বর ২০১৪

দাউদ মার্চেন্ট ফের গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ্বখ্যাত ভারতীয় সঙ্গীত শিল্পী গুলশান কুমার হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত জেল পলাতক আসামি মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোস্ট ওয়ান্টেড আবদুর রউফ ওরফে দাউদ মার্চেন্টকে বাংলাদেশের কারাগার থেকে বের হওয়ার পর ফের আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গত সোমবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তির পর রাতেই দাউদ মার্চেন্টকে আটক করা হয়। দাউদ মার্চেন্ট দুবাইয়ে থাকা ভারতীয় ‘মাফিয়া ডন’ দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। অবৈধ অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশে আত্মগোপনে থাকার দায়ে ২০০৯ সালের ২৭ মে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের একটি বাড়ি থেকে দাউদ মার্চেন্ট ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাহিদ শেখকে গ্রেফতার করে। জাহিদ শেখ আরেক মাফিয়া ডন ছোটা শাকিলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। কারা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ বছর কারাগারে থাকার পর সোমবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পায় দাউদ মার্চেন্ট। গত ১৯ নবেম্বর দাউদ মার্চেন্ট আদালত থেকে জামিন পান। জামিনের কাগজপত্র গত ২৯ নবেম্বর কারাগারে পৌঁছে। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে দাউদ মার্চেন্টকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপরই ৪৫ বছর বয়সী দাউদ মার্চেন্টকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। প্রসঙ্গত, ভারতের মুম্বাইয়ের সঙ্গীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টি-সিরিজের মালিক গুলশান কুমারকে ১৯৯৭ সালের ১২ অগাস্ট আন্ধেরী এলাকার একটি মন্দির থেকে বেরিয়ে আসার সময় গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন ভাড়াটে খুনি হিসেবে দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেফতার করে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই মামলায় ২০০২ সালে ভারতীয় আদালত দাউদ মার্চেন্টকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন দাউদ মার্চেন্ট। কারাগারে থাকা অবস্থায়ই পারিবারিক কারণে ২০০৯ সালে ১৪ দিনের পারোলে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তি পেয়েই পালিয়ে যায় দাউদ মার্চেন্ট। ওই বছরই ব্রাক্ষণবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত দাউদ মার্চেন্ট ও জাহিদ শেখ ভারতের বহু শিবসেনা হত্যার সঙ্গে জড়িত। তারা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। গ্রেফতারের পর কয়েক দফায় রিমান্ডে নেয়া হয় তাদের। দাউদ মার্চেন্ট ও জাহিদ শেখ বাংলাদেশে উর্দুভাষী অবাঙালী হিসেবে বসবাস করতেন। তারা পাসপোর্ট দালাল চক্রের মাধ্যমে বাংলাদেশী পাসপোর্ট তৈরি করেছিলেন। জাহিদ শেখ দীর্ঘ দিন ধরেই বাংলাদেশে আত্মগোপনে ছিলেন। ২০০৪ সালে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের হাতে একবার গ্রেফতারও হয়েছিলেন জাহিদ শেখ। ওই সময় নিজেকে আটকেপড়া পাকিস্তানী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। এমন পরিচয়েই তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে আবার বাংলাদেশে বসবাস শুরু করেন। তার প্রধান কাজই ছিল ভারতীয় সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশে আত্মগোপনে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া। তিনি দালালদের মাধ্যমে ভারত থেকে আসা সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশী পাসপোর্ট তৈরি করে দিতেন। পাসপোর্ট নিয়ে ভারতীয় সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশী হিসেবে এদেশে বসবাস করত। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস সেন্টারের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে জনকণ্ঠকে জানান, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেফতার করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে সোপর্দ করার কথা রয়েছে।
×