অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ধারাবাহিক তিন কার্যদিবস দর পতনের পর মঙ্গলবার দেশের উভয় পুঁজিবাজারে বেশিরভাগ কোম্পানির দর বৃদ্ধি দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ারের ক্রয়াদেশ বাড়ায় সূচকের পতন থামলেও দিনটিতে আগের চেয়ে সামান্য লেনদেন কমেছে। প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ৩৫ পয়েন্ট বৃদ্ধির দিনে সেখানে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর দর বেড়েছে। ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। ঢাকার মতো দেশের অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও সব ধরনের সূচকই বেড়েছে। বাজারে ১ কোটি টাকার ওপর মার্জিন ঋণ গ্রহীতাদের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে পাঠানো হচ্ছে না এমন আভাস বিনিয়োগকারীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার পরই বাজারে শেয়ারে ক্রয়াদেশ বাড়তে থাকে। যা দিনশেষেও অব্যাহত ছিল।
বাজার পর্যালোচনা দেখা গেছে, সকালে সূচকের বৃদ্ধি দিয়ে লেনদেন শুরুর পর দুুপুর বারোটায় সূচক প্রায় ৬৯ পয়েন্ট বেড়ে যায়। দিনভর সূচকের বৃদ্ধি শেষে ডিএসইর সার্বিক সূচকটি আগের দিনের চেয়ে ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮০৪ পয়েন্টে। দিনভর সেখানে লেনদেন হওয়া ২৯৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৮টির, কমেছে ৯৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টি কোম্পানির শেয়ার দর। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৪৭ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
চলতি বছরের শুরু থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত গড়ে ৩শ’ কোটি টাকার মতো দৈনিক লেনদেন হয়। তবে আগস্ট মাস থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। বর্তমানে লেনদেন আবারও ৩শ’ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে।
আগের দিন সোমবার ডিএসইর সার্বিক সূচকটি অবস্থান করে ৪ হাজার ৭৬৮ পয়েন্টে। ওইদিন লেনদেন হয় ৩৫৪ কোটি ৭৭ হাজার ৬৬ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সে হিসেবে মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৭ কোটি ৭৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বা ২.১৮ শতাংশ।
মঙ্গলবার ডিএসইর টপ-২০ তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলোর মোট ১৮৫ কোটি ৫৮ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৫৩.৪৭ শতাংশ। এদিন ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের। দিনভর এ কোম্পানির ৩৫ লাখ ৩ হাজার ৭০০টি শেয়ার ২২ কোটি ৬১ হাজার টাকায় লেনদেন হয়েছে। এছাড়া বেক্সিমকো ফার্মার ১৬ কোটি ৪৫ লাখ, লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের ১৩ কোটি ৫১ লাখ, যমুনা অয়েলের ১২ কোটি ২৯ লাখ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের ১১ কোটি ৪৭ লাখ, গ্রামীণফোনের ৯ কোটি ৪৬ লাখ, ইউসিবিএলের ৯ কোটি ৯ লাখ, আরএন স্পিনিংয়ের ৮ কোটি ৪৯ লাখ ও সাইফ পাওয়ারটেকের ৮ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইএতে দর বৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : জিএসইপি ফাইন্যান্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, শাহজিবাজার পাওয়ার, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন, সাইফ পাওয়ার টেক, ফাস ফাইন্যান্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, বাটা স্যু, ইউসিবিএল ও সুহৃদ ইন্ড্রাস্টিজ।
দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, সাভার রিফ্যাক্টরিজ, জেএমআই সিরিঞ্জ, হাক্কার্নী পাল্প, আরামিট, সোনালী আঁশ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, ফার্মা এইড, মুন্নু সিরামিক ও ডিবিএইচ।
দিনশেষে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৯০৩৬ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২১৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৯টির, কমেছে ৮৮টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টি কোম্পানির।
সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন, বেক্সিমকো, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, আরএন স্পিনিং, সাইফ পাওয়ার টেক, অলিম্পিক, এ্যাপোলো ইস্পাত, গ্রামীণফোন ও ইউসিবিএল।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: