ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্য ঢাকা এ্যাপারেল সামিটের

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৫ নভেম্বর ২০১৪

৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্য ঢাকা এ্যাপারেল সামিটের

জসিম উদ্দিন ॥ বাটেক্সপো থেকে এ্যাপারেল সামিটে যাচ্ছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফেকচার্স এ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। প্রতিবারের মতো বাংলাদেশ এ্যাপারেল এ্যান্ড টেক্সটাইল এক্সপোজিশন (বাটেক্সপো) না করে এবার এ্যাপারেল সামিট করবে বলে জানায় সংগঠন সূত্র। এর নাম হবে ‘ঢাকা এ্যাপারেল সামিট- ২০১৪’। জানা যায়, ঢাকা এ্যাপারেল সামিটের অন্যতম লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের তৈরি পোশাক সম্পর্কে আর্ন্তজাতিক অংশীদারদের ইতিবাচক ধারণা দেয়া। একইসঙ্গে অতীতে এ ব্যাপারে যে সব নেতিবাচক ধারণা ছিল তা দূর করা। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে ২০২১ সালের মধ্যেই তৈরি পোশাক শিল্পখাতের রফতানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলারে মাইলফলক স্পর্শ করার লক্ষ্য রয়েছে বলে জানায় সংগঠন সূত্র। তাই এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হলো “বাংলাদেশ পোশাকশিল্প ২০২১: ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশের ৫০ তম জন্মবার্ষিকীতে”। আগামী ডিসেম্বরের তিন দিনব্যাপী এই সামিট অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। ৭ ডিসেম্বর সামিটের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলবে ডিসেম্বরের ৯ তারিখ পর্যন্ত। এতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পর খাতের ‘পূর্ণ চিত্র’ তুলে ধরা হবে। এবারের এ্যাপারেল সামিটটি বিজিএমইএ’র বার্ষিক বাটেক্সপোর স্থলাভিষিক্ত হবে। যা প্রতিবছর মূলত বিদেশী ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে আয়োজন করা হতো। এই সামিটের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য বাংলাদেশ টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক রফতানির বাজারে পণ্য পাঠানোর বিশ্বস্ত সাপ্লাই চেনের জন্য ‘টেকসই রোড ম্যাপ’ এর ড্রাফ্ট তৈরি করতে আগ্রহী। এ্যাপারেল সামিটকে সফল করতে বিজিএমই ইত্যোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে। যারা একাধিক বৈঠক করে বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো আয়োজন করতে যাওয়া তৈরি পোশাক শিল্প খাতের এই মহাযজ্ঞকে সার্থক করতে। কাঁচামাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, আমাদানি কারক প্রতিষ্ঠান, ব্রান্ড, ফ্যাশন ডিজাইনার, যন্ত্রপাতি ও কারিগরি সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ তৈরি পোশাক শিল্প খাতের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন পর্যায়ের দেশী ও বিদেশী প্রতিনিধিগণ এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে জানান বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফেকচার্স এ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি এম শহীদুল্লাহ আজিম। তিনি বলেন, এটা হবে এক ধরনের ‘সেফটি এক্সপো’। যেখানে সব ধরনের নিরাপত্তা উপকরণ নিয়ে হাজির হবে। তারা এসব উপকরণের ব্যবহার ও মহড়ার আয়োজন করবে। যাতে করে তৈরি পোশাক শিল্প খাতের সঙ্গে জড়িতদের মাঝে নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনা আরও বাড়ে। ঢাকা এ্যাপারেল সামিটে অংশ গ্রহণকারীরা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প খাত সম্পর্কে এক ধরনের ইতিবাচক ধারণা পাবে। এছাড়া ফ্যাশনের নতুন ট্রেন্ড, সর্বশেষ প্রযুক্তি, আমাদানিকারদের চাহিদাসহ নানান বিষয়ে একাধিক সেমিনার ও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। তৈরি পোশাক আমদানি-রফতানির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন দেশের সরকারী ও বেসরকারী প্রতিনিধিগণ, আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, বেসরকারী খাত, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, সিভিল সোসাইটি, ব্রান্ডের প্রতিনিধি, বায়ার, একাডেমিশিয়ান ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ এতে অংশ নেবেন বলে জানান বিজিএমইএ‘র সহ-সভাপতি। তিনি বলেন, এ্যাপারেল ব্রান্ড এক্সপার্ট, শিল্প বিশেষজ্ঞ, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, আমদানিকারক ব্রান্ড আর খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যেও একাধিক প্যানেল আলোচনার ব্যবস্থা থাকবে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা এই সামিটে। শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা এসব সেমিনার আর কনফারেন্সে অংশ নিয়ে বিশ্ববাজারের সর্বশেষ চাহিদা, ফ্যাশন ট্রেন্ড আর প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে জেনে উপকৃত হবে, যা তৈরি পোশাক শিল্প খাতের অভ্যন্তরীন বাজারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারের একটি সেতুবন্ধন তৈরি করবে। এতে উৎপাদনকারী আর আন্তর্জাতিক ক্রেতা উভয়ে উপকৃত হবে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প খাতের নিরাপত্তা, শ্রমিক অধিকার ও কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে কাজ করা তৈরি পোশাকের আমদানিকারকদের শীর্ষ দুই জোটও এই সামিটে অংশ নেবে। তা হলো- উত্তর আমেরিকার ২৬টি এ্যাপারেল কোম্পানি, রিটেলার ও ব্রান্ডের জোট ‘এ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওর্য়াকার সেফটি’ এবং ইউরোপীয় ২০টি দেশের ১৫০ এ্যাপারেল কোম্পানি, রিটেলার ও ব্রান্ডের জোট ‘অ্যাকর্ড অন ফায়ার এন্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ’। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও), জার্মানস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন (জিআইজেড) এই সামিটে অংশ নেবে। সূত্র জানায়, এছাড়া সামিটে ভিন্নমাত্রার দুইটি ইভেন্ট হবে। একটি হলো-‘বাংলাদেশ বিল্ডিং এ্যান্ড ফায়ার সেফটি এক্সপো-২০১৪’, অন্যটি হলো- ‘বেস্ট ফ্যাক্টরি এ্যাওয়ার্ড-২০১৪’। যা দেয়া হবে সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স ও পরিবেশ বান্ধব তৈরি পোশাক শিল্প কারখানা মালিককে।
×