ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিজের বোলিং নিয়ে শতভাগ সন্তুষ্ট নন মাশরাফি!

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২৫ নভেম্বর ২০১৪

নিজের বোলিং নিয়ে শতভাগ সন্তুষ্ট নন মাশরাফি!

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বাংলাদেশের বোলিং বিভাগ ধারাবাহিকভাবে সামলে যাচ্ছেন দলের স্পিনাররা। টেস্ট সিরিজে সফরকারী জিম্বাবুইয়েকে রীতিমতো নাজেহাল করেছিলেন বাংলাদেশী স্পিনাররা। প্রথম ওয়ানডেতে বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে নিজের ভূমিকাটা দারুণভাবে পালন করে সাকিব আল হাসান তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। স্পিনাররাই আট উইকেট তুলে নিয়েছিলেন আর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আরাফাত সানি ৪ উইকেট শিকার করেছেন, সাকিব পেয়েছেন ১ উইকেট। সব ম্যাচেই অলরাউন্ডার সাকিব দলের জন্য বোলিং করে সাফল্য বয়ে আনছেন আর ক্যারিয়ারের প্রায় শুরু থেকেই পেস বিভাগের অপরিহার্য একজন হয়ে উঠেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। প্রথম ওয়ানডেতে অন্যতম পেস স্তম্ভ ও অধিনায়ক মাশরাফি দুটি এবং দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তিনটি উইকেট শিকার করেন। দলের স্পিনারদের জন্য ভাল একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে দিয়েছেন তিনি শুরুতেই দারুণ বোলিং করে। তবে নিজের বোলিং নিয়ে এখনও সন্তুষ্ট হতে পারছেন না মাশরাফি। তিনি মনে করেন নিজের সবেমাত্র ৮০ ভাগ দিতে সক্ষম হয়েছেন। অবশ্য দলের বোলিং বিভাগ নিয়ে সন্তোষ জানিয়েছেন মাশরাফি। নিজেকে নিয়ে যাই বলুন মাশরাফি, দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা দলের বোলিংয়ের সময় সাকিব এবং মাশরাফি দারুণ কিছু করবেন সে আশাতেই বুক বেঁধে থাকে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ব্যাটিং ও বোলিংয়ে সমান হারে নৈপুণ্য দেখিয়েছেন সাকিব আর পেস বিভাগকে সামাল দিয়েছেন মাশরাফি। অন্যতম আস্থার প্রতীক তিনি। তবে অব্যাহত ইনজুরি ক্যারিয়ারের অনেকটা সময়ই কেড়ে নিয়েছে তাঁর কাছ থেকে। সাকিবের ৫ বছর আগে ওয়ানডে দলে ঢুকলেও তাই দু’জনের খেলা ম্যাচের সংখ্যা সমান। ২০০১ সালের নবেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্যারিয়ার শুরুর পর গত ১৩ বছরে মাশরাফি খেলেছেন ১৪১ ওয়ানডে। ৩০.৭৪ গড়ে তিনি শিকার করেছেন ১৭৯ উইকেট। বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বাধিক উইকেট শিকারি তিনি। শীর্ষে আছেন বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। তিনি ১৫৩ ম্যাচে নিয়েছেন ২০৭ উইকেট। তবে এখন পর্যন্ত ওয়ানডের সেরা বোলিং বিশ্লেষণটা তাঁরই দখলে। কেনিয়ার বিরুদ্ধে নাইরোবিতে ২০০৬ সালে ২৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে তৎকালীন তীব্র প্রতিপক্ষকে একাই ধসিয়ে দিয়েছিলেন মাশরাফি। ঠিক পাঁচ বছর পর সাকিব আসেন বাংলাদেশ দলে। অভিষেকটাই দারুণ হয়েছিল এ অলরাউন্ডারের। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল দল। সাকিব অপরাজিত ৩০ রান করার আগে বল হাতে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। ইনজুরির কারণে দলে ছিলেন না সেবার মাশরাফি। দ্রুতই নিজেকে দলের অপরিহার্য সদস্যে পরিণত করেন তিনি। তারপর থেকে আর স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েননি তিনি। ওয়ানডে খেলার দিক থেকে ছুঁয়ে ফেলেছেন মাশরাফিকে। ১৩৮ ওয়ানডে খেলে উইকেট শিকারেও মাশরাফির ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন সাকিব। তিনি শিকার করেছেন ২৮.৪৩ গড়ে ১৭৬ উইকেট। এক অঘোষিত দ্বৈরথই যেন চলছে এ দু’জনের। দলে অভিজ্ঞ রাজ্জাক না থাকার কারণে এখন তাই অন্যতম ভরসা মাশরাফি-সাকিব। পেস আর স্পিনে উইকেট শিকারের এ মধুর লড়াইয়ে এগিয়ে থাকবেন কে? প্রথম দুটি ওয়ানডেতে জিম্বাবুইয়েকে সহজেই হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ দল আর সেজন্য মূলত সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন বোলাররা। দুই ম্যাচে অন্য পেসাররা ব্যর্থ হলেও মাশরাফি ছিলেন উজ্জ্বল। শিকার করেছেন ১৩.৪ গড়ে ৫ উইকেট। তবে নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না তিনি। বার বারই মনে হচ্ছে নিজের ওপর ঠিক নিয়ন্ত্রণ খুঁজে পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষে তিনি বলেন, ‘কিছু একটা সমস্যা হচ্ছে কোথাও। কিন্তু আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। আমার বোলিংয়ে তেমন নিয়ন্ত্রণ খুঁজে পাচ্ছি না। সমস্যাটা দ্রুতই খুঁজে বের করতে হবে। আমি হয়ত উইকেট পেয়েছি। কিন্তু যেখানে বল ফেলতে চাই সেক্ষেত্রে মাত্র ৮০ ভাগ সফল হতে পেরেছি। নিজের সর্বোচ্চ গতি দিয়ে বল করতে পারছি না এবং নিজের শতভাগ দিতে পারিনি। তবে দলের বোলারা যেভাবে বোলিং করেছেন তাতে আমি সন্তুষ্ট। হয়ত আমি পারছি না, কিন্তু আত্মবিশ্বাসটা ঠিকই আছে।’
×